৪৯৬৭/০৮ সাঈদ ইব্ন উফায়র (রঃ) ……… হযরত মালিক ইব্ন আওস ইব্ন হাদাসান (রাঃ)
থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ আমি হযরত উমর (রাঃ) এর কাছে উপস্থিত হলাম, এমন সময় তাঁর দারোয়ান
ইয়ারফা এসে বলল, উসমান আব্দুর রহমান, যুবায়র ও সা‘দ ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইছেন
। আপনার অনুমতি আছে কি ? তিনি তাঁদের অনুমতি দিলেন । মালিক (রাঃ) বলেনঃ তাঁরা প্রবেশ
করলেন এবং সালাম করে বসলেন । এর কিছুক্ষণ পর ইয়ারফা এসে বললঃ হযরত আলী ও আব্বাস (রাঃ)
অনুমতি চাইছেন, আপনার অনুমতি আছে কি ? তিনি হ্যা বলে এদের উভয়কেও অনুমতি দিলেন । তাঁরা
প্রবেশ করে সালাম দিয়ে বসলেন । তারপর হযরত আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ হে আমীরূল মু‘মিনীন!
আামর ও আলীর মধ্যে ফয়সালা করে দিন । উপস্থিত উসমান ও তাঁর সঙ্গীরাও বললেনঃ হে আমীরূল
মু‘মিনীন! এঁদের উভয়ের মধ্যে ফয়সালা করে দিন এবং একজন থেকে অপর জন কে শান্তি দিন ।
হযরত উমর (রাঃ) বললেনঃ থাম! আমি তোমাদেরকে সেই আল্লাহ্র কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা , যার আদেশে
আসমান ও জমীন ঠিক আছে । তোমরা কি জান যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমাদের কেউ ওয়ারিস
হয় না । আমরা যা রেখে যাই তা সাদাকা । এ কথা দ্বারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) নিজেকে (এবং
অন্যান্য নবীগণকে) বুঝাতে চেয়েছেন । সে দলের লোকেরা বললেনঃ নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
তা বলেছেন । তারপর হযরত উমর (রাঃ) হযরত আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহ্র
কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা দুজন কি জান যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এ কথা বলেছেন ?তাঁরা
বললেনঃ অবশ্যই তা বলেছেন । হযরত উমর (রাঃ) বললেন, এ ব্যাপারে আমার বক্তব্য হলোঃ এ মালে
আল্লাহ্ তাঁর রাসূলকে একটি বিশেষ অধিকার দিয়েছেন, যা তিনি ছাড়া আর কাউকে দেননি । আল্লাহ্
তা‘আলা বলেছেনঃ আল্লাহ্ ইয়াহূদীদের নিকট থেকে তাঁর রাসূলকে যে ফায় (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত
সম্পদ) দিয়েছেন .... সর্বশক্তিমান পর্যন্ত ।(হাশর:৬) একমাত্র রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর জন্য নির্ধারিত ছিল
। আল্লাহ্র কসম! তিনি তোমাদের বাদ দিয়ে একাকী ভোগ করেন নি এবং কাউকে তোমাদের উপর প্রাধান্য
দেননি । এ থেকে তিনি তোমাদের দিয়েছেন এবং কিছু তোমাদের মধ্যে বিতরণ করেছেন । শেষ পর্যন্ত এ মালটুকু অবশিষ্ট
থেকে যায় । এ মাল থেকেই রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর পরিবারের সারা বছরের খরচ দিতেন ।আর
যা উদ্বৃত্ত থাকত, তা আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যবহার্য মালের সাথে ব্যয় করতেন । রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) জীবনভর এরকমই করেছেন । আল্লাহ্র কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি এ
বিষয় জান ? তাঁরা বললেনঃ হ্যা জানি । এরপর তিনি হযরত আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য
করে বললেনঃ আমি আল্লাহ্র কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি এ বিষয় জান ? তাঁরা
উভয়ে বললেনঃ হ্যা জানি । এরপর আল।রাহ্ তাঁর নবীকে ওফাত দিলেন । তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ
আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর স্থলাভিষিক্ত । আবূ বকর এ মাল নিজ কবজায় রাখলেন এবং এ মাল
খরচের ব্যাপারে লাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর নীতিই অবলম্বন করলেন । হযরত আলী ও আব্বাস (রাঃ)
এর দিকে ফিরে হযরত উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা তখন মনে করতে আবূ বকর এমন, এমন । অথচ আল্লাহ্
জানেন এ ব্যাপারে তিনি সত্য কল্যাণকামী, সাঠক নীতির অনুসারী । আল্লাহ্ আবূ বকর (রাঃ)
কে ওফাত দিলেন । আমি বললামঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ও আবূ বকর (রাঃ) এর স্থলাভিষিক্ত
এরপর আমি দুবছর এ মাল নিজ কব্জায় রাখি । আমি এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ও আবূ বকর
(রাঃ) এর অনুসৃত নীতিরই অনুসরণ করতে থাকি । তারপর তোমরা দুজন আসলে, তখন তোমরা উভয়ে,
ঐক্যমত ছিলে এবং তোমাদের বিষয়ে সমন্বয় ছিল । তুমি আসলে ভ্রাতুস্পুত্রের সম্পত্তিতে
তোমার অংশ চাইতে । আর এ আসলো শ্বশুরের সম্পত্তিতে স্ত্রীর অংশ চাইতে । আমি বলেছিলামঃ
তোমরা যদি চাও, তবে আমি এ শর্তে তোমাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি, তোমরা আল্লাহ্র সহিত
ওয়াদা ও অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকবে যে, এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ), আবূ বকর (রাঃ) এবং
এর কর্তৃত্ব হাতে পাওয়ার পর আমিও যে নীতির অনুসরন করে এসেছি, তোমরাও সে নীতিরই অনুসরণ
করবে । অন্যথায় এ ব্যাপারে আমার সাথে কোন কথা বলবে না । তখন তোমরা বলেছিলেঃ এ শর্ত
সাপেক্ষেই আমাদের কাছে দিয়ে দিন । তাই অমি এ শর্তেই তোমাদের তা দিয়েছিলাম । তিনি বললেনঃ
আমি তোমাদের সকলকে আল্লাহ্র কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তে এটি তাদের কাছে দেইনি ? তাঁরা বললেনঃ
হ্যা । তারপর তিনি হযরত আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহ্র কসম দিয়ে
তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তেই এটি তোমাদের কাছে দেইনি ? তাঁরা বললেনঃ হ্যা । তিনি বললেনঃ তবে এখন কি তোমরা
আমর কাছে এ ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা চাইছ ? সেই সত্তার কসম! যাঁর আদেশে আসমান-যমীন টিকে
আছে, আমি কিয়ামত পর্যন্ত এ ছাড়া অন্য কোন ফায়সালা দিতে প্রস্তুত নই । তোমরা যদি উল্লেখিত
শর্ত পালন করতে অক্ষম হও, তাহলে তা আমার জিম্মায় ফিরিয়ে দাও তোমাদের পক্ষ থেকে আমই
এর পরিচালনা করব ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন