মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০১৪

হাদিস নং: ৬৯০১ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০১/৩৪: উমার ইব্ন হাফস (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ঘোষনা করেন, আমি সেইরুপই, যেরুপ বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে । আমি তার-সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্বরণ করে । যদি সে মনে মনে আমাকে স্বরণ করে আমিও তাকে নিজে স্বরণ করি । আর যদি সে লোক-সমাবেশে আমাকে স্বরণ করে তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্বরণ করি । যদি সে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, তবে আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু হাত অগ্রসর হই । আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে দৌড়ে অগ্রসর হই ।

হাদিস নং: ৬৯০২ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০২/৩৫: কুতায়বা ইব্ন সাঈদ (রহঃ) . . . . . হযরত জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ এই আয়াতটি যখন নাযিল হলঃ “হে নাবী (সাঃ) আপনি বলে দিন তোমাদের উর্ধ্বদেশ থেকে তোমাদের ওপর শাস্তি প্রেরন করতে তিনিই সক্ষম (৬-৬৫)।” নাবী (সাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার সত্তার সাহায্যে পানাহ চাচ্ছি । আল্লাহ তখন বললেনঃ “কিংবা তোমাদের পদতল থেক” ; তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ আমি আপনার সত্তার সাহায্যে পানাহ চাচ্ছি । আল্লাহ বললেনঃ তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে । তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ এটি তুলনামূলক সহজ ।

হাদিস নং: ৬৯০৩ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০৩/৩৬: মূসা ইব্ন ইসমাঈল (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ নাবী (সাঃ) -এর কাছে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করা হয় । তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কাছে গোপন থাকবেন না । অবশ্যই আল্লাহ অন্ধ নন । এর সাথে সাথে নাবী (সাঃ) তার হাত দিয়ে স্বীয় চোখের দিকে ইশারা করলেন । মাসীহ দাজ্জালের ডান চোখ তো কানা । তার চোখটি যেন আংগুরের ন্যায় ভাসা ভাসা ।

হাদিস নং: ৬৯০৪ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০৪/৩৭: হাফস ইব্ন উমার (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ এমন কোন নাবী প্রেরণ করেননি যিনি তার কাওম কে কানা মিথ্যুকটি সম্পর্কে সাবধান করেননি) এই মিথ্যুকটি তো কানা (দাজ্জাল) । আর তোমাদের প্রতিপালক তো অন্ধ নন । তার (দাজ্জালের) দূচোখের মাঝখানে কাফের (লেখা থাকবে ) ।

হাদিস নং: ৬৯০৫ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০৫/৩৮: ইসহাক (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্নিত । তিনি বনী মুসতালিক যুদ্ধ সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, মুসলিম মুজাহিদগণ যুদ্ধে কতিপয় বন্দিনী লাভ করেছিল । এরপর তারা এদেরকে ভোগ করতে চাইলেন । আবার তারা যেন গর্ভবতী হয়ে না পড়ে সে ইচ্ছাও পোষণ করছিলেন । তাই তারা নাবী (সাঃ) কে ‘আযল’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন । নাবী (সাঃ) বললেনঃ এতে তোমাদের কোন লাভ নেই । কারণ আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামত পর্যন্ত যত জীবন সৃষ্টি করবেন, তা সবই লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন । মুজাহিদ (রহঃ) কাযআ (রহঃ)-এর মধ্যস্থতায় আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যত জীবন সৃষ্টি করার সিদ্ধাস্ত করা হয়েছে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তা সৃষ্টি করবেন ।

হাদিস নং: ৬৯০৬ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০৬/৩৯: মু’আয ইব্ন ফাদালা (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ ঈমানদারদের কে সমবেত করবেন তখন তারা উক্তি করবে আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছে কোন সুপারিশ যদি নিয়ে যেতাম; তাহলে তিনি আমাদেরকে এই স্হানটি থেকে বের করে শান্তি প্রদান করতেন । এরপর তারা আদম (আঃ) -এর কাছে গিয়ে বলবে, হে আদম (আঃ)! আপনি কি মানুষের অবস্হা দেখছেন না? অথচ আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন । আপনাকে তিনি তাঁর ফেরেশতাগণ দিয়ে সিজদা করিয়েছেন । আর আপনাকে সব জিনিসের নাম শিক্ষা দিয়েছেন সুতরাং আপনি আমাদের প্রতিপালকের কাছে সুপারিশ করুন, যেন এই স্থানটি থেকে আমাদেরকে তিনি শান্তি প্রদান করেন । আদম (আঃ) তখন বলবেন, এই কাজের জন্য আমি যোগ্য নই । এবং আদম (আঃ) তাদের কাছে স্বীয় ভুলের কথা স্বরণ করবেন এবং বলবেন, তোমরা বরং নূহ (আঃ) -এর কাছে যাও । যেহেতু তিনিই আল্লাহর প্রথম রাসুল । যাকে তিনি যযীন বাসীর কাছে প্রেরণ করেছিলেন । (এ কথা জেনে) তারা নূহ (আঃ) -এর কাছে আসবে । তিনিও বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই । তিনি তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্বরণ করে বলবেন, তোমরা বরং আল্লাহর খলীল (বর) ইবরাহীম (আঃ) -এর কাছে যাও । তখন তারা ইবরাহীম (আঃ) -এর কাছে চলে আসবে । তিনিও তাদের কাছে স্বীয় কৃত ত্রুটিসমুহর কথা উল্লেখ পূর্বক বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই । তোমরা বরং মূসা (আঃ) -এর কাছে যাও । তিনি এমন একজন বান্দা যাকে আল্লাহ তাওরাত প্রদান করেছিলেন এবং তাঁর সাথে তিনি প্রত্যক্ষ বাক্যালাপ করেছিলেন । তারা তখন মূসা (আঃ) -এর কাছে আসবে । মূসা (আঃ) -ও বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই । তাদের কাছে তিনি স্বীয় কৃত ক্রটির কথা উল্লেখ পূর্বক বলবেন, তোমরা বরং ঈসা (আঃ) -এর কাছে যাও । যিনি আল্লাহর বান্দা, তাঁর রাসুল, কালেমা ও রুহ তখন তারা ঈসা (আঃ) -এর কাছে আসবে । তখন ঈসা (আঃ) বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের যোগ্য নই । তোমরা বরং মুহাম্মাদ (সাঃ) -এর কাছে যাও । তিনি এমন একজন বান্দা, যার আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে । তাবা সবাই আমার কাছে আসবে । আমি তখন আমার প্রতিপালকের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করব আমাকে এর অনুমতি দেওয়া হবে । আমি আমার প্রতিপালককে যখন দেখতে পাব, তখনই আমি তাঁর সামনে সিজদায় পড়বো । আল্লাহ তার মরজী অনুসারে যতক্ষন আমাকে সেভাবে রাখার রেখে দেবেন । তারপর আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান । (যা বনার) বলুন । শোনা হবে । (যা চাওয়ার) চান, দেয়া হবে । (যা সুপারিশ করার) করুন, গ্রহণ করা হবে । তখন আমার প্রতিপালকের শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজির দ্বারা আমি তাঁর প্রশংসা করব । তারপর আমি শাফা আত করব । আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে । এরপর আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব । তারপর আমি ফিরে আসব । যখন আমি আমার প্রতিপালককে দেখতে পাব তখন তাঁর জন্য সিজদায় পড়বো । আল্লাহর মরজী অনুসারে যতক্ষন আমাকে এভাবে রাখতে চাইবেন রেখে দিবেন । তারপর আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান । বলুন, শোনা হবে । চান, দেওয়া হবে । সুপারিশ করুন, গ্রহণ করা হবে । তখন আমার প্রতিপালকের শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজি দিয়ে আমি তাঁর প্রশংসা করব এবং সুপারিশ কবর । তখনো আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারন করা হবে । আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব । তারপর আমি আবার ফিরে আসব । আমি এবারও আমার প্রতিপালককে দেখামাত্র সিজদায় পড়বো । আল্লাহ তায়ালা তাঁর মরজী অনুসারে যতক্ষন ইচ্ছা আমাকে সেই অবস্হায় রেখে দিবেন । তারপর বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান । বলুন, শোনা হবে । চান, দেয়া হবে । সুপারিশ করুন, কবুল করা হবে । তখন আমার রব আমাকে শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজি দ্বারা প্রশংসা করে শাফাআত করব । তখনও একটা সীমা বাতলানো থাকবে । আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব । এরপর আমি তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে বলব, হে প্রতিপালক! এখন একমাত্র তারাই জাহান্নামে অবশিষ্ট রয়েছে, যাদেরকে কুরআন আটক করে রেখে দিয়েছে এবং যাদের উপর স্থায়ীভাবে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গিয়েছে । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- পড়েছে, অথচ তার হৃদয়ে একটি যবের ওজন পরিমাণ কল্যাণ ঈমান আছে, তাকেও জাহান্নাম থেকে বের করা হবে । তারপর বের করা হবে জাহান্নাম থেকে তাদেরকেও, যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে এবং তার হৃদয়ে একটি গমের ওযন পরিমাণ কল্যান (ঈমান) আছে । (সর্বশেষে) জাহান্নাম থেকে তাকে বের করা হবে, যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে এবং তার হৃদয়ে অণূ পরিমাণ মাত্র কল্যাণ (ঈমান) আছে ।

হাদিস নং: ৬৯০৭ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০৭/৪০: আবূল ইয়ামান (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ, রাত দিন খরচ করলেও তাতে ঘাটতি আসে না । তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা লক্ষ্য করেছ কি? আসমান যমীন পয়দা করার পর থেকে তিনি যে কত খরচ করেছেন, এতদূসত্ত্বেও তার হাতে যা আছে, তাতে কিঞ্চিতও কমেনি । এবং নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ তখন তার আরশ পানির উপর অবস্থান করছিল । তার অপর হাতটিতে রয়েছে পেলা, যা কখনও তিনি নিচে নামান আবার কখনও উপরে উঠান ।

হাদিস নং: ৬৯০৮ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০৮/৪১: মুকাদ্দাম ইব্ন মুহাম্মদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) সূত্রে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন পৃথিবীটা তাঁর মুঠোতে নিয়ে নেবেন । আসমানকে তাঁর ডান হাতে জড়িয়ে বলবেন; বাদশাহ একমাত্র আমিই । সাঈদ (রহঃ) মালিক (রহঃ) থেকে এমনই বর্ণনা করেছেন । উমর ইব্ন হামযা (রহঃ) সালিম (রহঃ)-এর মাধ্যমে হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে এরুপ বর্ণনা করেছেন । আবূল ইয়ামান (রহঃ) হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা যমীনকে তার মুঠোয় নিয়ে নেবেন ।

হাদিস নং: ৬৯০৯ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯০৯/৪২: মূসা’দ্দাদ (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী (সাঃ) -এর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ (সাঃ)! আল্লাহ কিয়ামতের দিনে আসমান গুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, যমীন গুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, পর্বতমালাকে এক আঙ্গুলের ওপর, বৃক্ষরাজিকে এক আঙ্গুলের ওপর এবং অবশিই সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলের ওপর তুলে বলবেন, বাদশাহ একমাত্র আমিই । এতে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হেসে দিলেন । এমনকি তাঁর মাতির দাত মুবারক পর্যন্ত বের হয়ে উঠল । তারপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ তারা আল্লাহ তাআলার যথোচিত মর্যাদা উপলব্দি করেনি । ইয়াহইয়া ইব্ন সাঈদ বলেনঃ এই বর্ণনায় একটু সংযোজন করেছেন, ফুদায়ল ইব্ন আয়ায আবিদা (রহঃ) সূত্রে আবদুল্লাহ থেকে যে, এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আশ্চার্যান্বিত হয়ে তার সমর্থনে হেসে দিলেন ।

হাদিস নং: ৬৯১০ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১০/৪৩: উমর ইব্ন হাফস ইব্ন গিয়াস (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ আহলে কিতাবদের থেকে জনৈক ব্যাক্তি নাবী (সাঃ) -এর কাছে এসে বলল, হে আবূল কাসিম! (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তা‘আলা আসমান সমূহকে এক আঙ্গুলের ওপর, যমীনগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, গাছ ও কাদামাটিকে এক আঙ্গুলের ওপর এবং বাকি সৃষ্টিরাজিকে এক আঙ্গুলের ওপর তুলে বলবেন, বাদশাহ একমাত্র আমিই, বাদশাহ একমাত্র আমিই । বর্ননাকারী বলেনঃ আমি দেখতে পেলাম, নাবী (সাঃ) হেসে ফেললেন । এমনকি তার মাড়ির দাঁতগুলো প্রকাশিত হয়ে ওঠলো । এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ আর তারা আল্লাহ্ পাকের মহানতের যথোচিত মর্যাদা উপলব্ধি করেনি ।

হাদিস নং: ৬৯১১ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১১/৪৪: মূসা ইব্ন ইসমাঈল (রহঃ) . . . . . হযরত মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ হযরত সা-দ ইব্ন উবাদা (রাঃ) বললেনঃ আমি আমার স্ত্রীর সাথে অন্য কোন পুরুষকে যদি দেখি, তাকে সোজা তরবারি দ্বারা হত্যা করব। এই উক্তি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে পৌছলে তিনি বললেনঃ তোমরা কি সা’দর আত্নমর্যাদাবোধ দেখে আাশ্চার্যান্বিত হচ্ছ? আল্লাহর কসম! আমি তার চেয়েও বেশি আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন । আর আল্লাহ্ আমার চেয়েও বেশি আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন । আল্লাহ আত্নমর্যাদাবোধ সস্পন্ন হওয়ার কারণে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য (সর্বপ্রকার) অম্লীলতাকে হারাম করে দিয়েছেন । অক্ষমতা প্রকাশকে আল্লাহর চাইতে বেশি পছন্দ করেন এমন কেউই নেই । আর এই জন্য তিনি ভীতি প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদ দাতাদের কে পাঠিয়েছেন । আত্নস্তুতি আল্লাহর চেয়ে বেশি কারো কাছে প্রিয় নয় । তাই তিনি জান্নাতের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন ।

হাদিস নং: ৬৯১২ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১২/৪৫: আবদুল্লাহ ইব্ন ইউসুফ (রহঃ) . . . . . হযরত সাহাল ইব্ন সা’দ (রাঃ) থেকে বর্নিত । নাবী (সাঃ) এক ব্যাক্তিকে (সাহাবী) বললেনঃ তোমার কাছে কুরআনের কোন বস্তু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যা, অমুক সূরা অমুক সূরা । তিনি সূরাগুলোর নাম উল্লেখ করেছিলেন ।

হাদিস নং: ৬৯১৩ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১৩/৪৬: আবদান (রহঃ) . . . . . হযরত ইমরান ইব্ন হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ আমি নাবী (সাঃ) -এর কাছে ছিলাম । এমন সময় তাঁর কাছে বনূ তামীম-এর কাওমটি এল । নাবী (সাঃ) তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে বনূ তামীম । তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর । প্রতি উত্তরে তারা বলল, আপনি আমাদেরকে শুভ সংবাদ যখন প্রদান করেছেন, তাহলে কিছু দান করুন । এ সময় ইয়ামানবাসী কতিপয় লোক নাবী (সাঃ) -এর সেখানে উপস্থিত হল । নাবী (সাঃ) তাদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ হে ইয়ামানবাসী! তোমাদের জন্য সুসংবাদ । বনূ তামীম তা গ্রহন করল না । তারা বলে উঠল, আমরা গ্রহণ করলাম শুভ সংবাদ । যেহেতু আমরা আপনার কাছে এসেছি দ্বীনী জ্ঞান হাসিল করার উদ্দেশ্যে এবং জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছি যে, এ দুনিয়া সৃষ্টির আগে কি ছিল? নাবী (সাঃ) বললেনঃ আল্লাহ তখন ছিলেন, তাঁর আগে আর কিছু ছিল না। তার আরশ তখন পানির ওপর ছিল । এরপর তিনি আসমান সমুহ ও যমীন সৃষ্টি করলেন । এবং লাওহে মাফফূযে সব বস্তু সম্পর্কে লিখে রাখলেন । রাবী বলেনঃ এরপর আমার কাছে এক ব্যাক্তি এসে বলল, হে ইমরান! তোমার উষ্ট্রী পালিয়ে গিয়েছে, তার খবর নাও । আমি উষ্ট্রীর সন্ধানে চললাম । দেখলাম, উষ্ট্রী মরীচিকার আড়ালে আছে । আমি আল্লাহর কসম করে বলছি! আমার মন চাচ্ছিল উষ্ট্রী চলে যায় যাক তবুও আমি মজলিস ছেড়ে যেন না উঠি ।

হাদিস নং: ৬৯১৪ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১৪/৪৭: আলী ইব্ন আবদুল্লাহ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ আল্লাহর ডান হাত পরিপূর্ন, রাত দিনের খরচেও তা কমে না । তোমরা ভেবে দেখেছ কি? আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টিলগ্ন থেকে তিনি কত খরচ করে চলেছেন । তবুও তাঁর ডান হাতের কিছুই কমেনি । তার আরশ পানির ওপর অবস্হান করছে । তাঁর অপর হাতটিতে রয়েছে দেওয়া এবং নেওয়া । তা তিনি উঠান ও নামান ।

হাদিস নং: ৬৯১৫ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১৫/৪৮: আহমদ (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত । তিনি বলেনঃ হযরত যায়িদ ইব্ন হারিসা (রাঃ) অভিযোগ নিয়ে আসলেন । তখন নাবী (সাঃ) তাকে বলতে লাগলেন, তুমি আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছে রেখে দাও । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ রাসূল (সাঃ) যদি কোন জিনিস গোপনই করতেন, তাহলে এই আয়াতটি অবশ্যই গোপন করতেন। বর্ণনাকারী বলেনঃ (যায়নাব (রাঃ) অপরাপর নাবী (সাঃ) সহধর্মিনার কাছে এই বলে গৌরব করতেন যে, তোমাদেরকে বিবাহ দিয়েছে তোমাদের পরিবার-পরিজন আর আমাকে স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা সাত আসমানের ওপরে বিয়ে দিয়েছেন । বর্ণনাকারী সাবিত (রাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহর বানীঃ “(হে নাবী (সাঃ) আপনি আপনার অন্তরে যা গোপন করতেন আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন, আপনি লোকদের ভয় করছিলেন ।” এই আয়াতটি যায়নাব (রাঃ) ও যায়িদ ইব্ন হারিসা (রাঃ) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছিল।

হাদিস নং: ৬৯১৬ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১৬/৪৯: খাল্লাদ ইব্ন ইয়াহইয়া (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ)-কে কেন্দ্র করে পর্দার আয়াত নাযিল হয় । নাবী (সাঃ) যায়নাবের সাথে তার বিবাহ উপলক্ষে ওয়ালিমা হিসাবে সেদিন রুটি ও গোশত আহার করিয়ে ছিলেন । সহধর্মিনাদের উপর যায়নাব (রাঃ) গৌরব করে বলতেন, আল্লাহ তো আসমানে আমার বিয়ের ব্যবস্হা করেছেন ।

হাদিস নং: ৬৯১৭ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১৭/৫০: আবূল ইয়ামান (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ যখন সকল মাখলুক পয়দা করার কাজ সম্পন্ন করলেন, তখন তার আরশের উপর তারই কাছে লিপিবদ্ধ করে রাখলেন “অবশ্যই আমার রহমত আমার গযব থেকে অগ্রগামী ।”

হাদিস নং: ৬৯১৮ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১৮/৫১: ইবরাহীম ইব্ন মুনযির (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনে, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করে, রমযান মাসের রোযা পালন করে, আল্লাহ তার ব্যাপারে এ দায়িত্ব নিয়েছেন যে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন । সে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করুক কিংবা তার জন্মভূমিতে অবস্হান করুক । সাহাবীগণ বলে উঠলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ)! এই বিষয়টি আমরা লোকদের জানিয়ে দেব না? রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ অবশ্যই, জান্নাতে একশ-টি স্তর রয়েছে । এগুলো আল্লাহ তাঁর রাস্তায় জিহাদকারীদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন । প্রতি দুটি স্তরের মাঝখানে আসমান ও যমীনের দূরত্ববিদ্যমান রয়েছে । কাজেই যখন তোমরা আল্লাহর কাছে চাইবে, তখন ফিরদাওস জান্নাত চাইবে । কেননা সেটি হচ্ছে সর্বোত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত । আর দয়ালু (আল্লাহর) আরশটি এরই উপর অবস্থিত । এই ফিরদাওস থেকেই জান্নাতের ঝর্নাগুলো প্রবাহিত হয়ে থাকে ।

হাদিস নং: ৬৯১৯ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯১৯/৫২: ইয়াহইয়া ইব্ন জাফর (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ আমি মসজিদে নববীতে প্রবেশ করলাম । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তখন সেখানে বসা ছিলেন । যখন সূর্যঅস্ত গেল, তিনি বললেনঃ হে আবূ যর । তোমার কি জানা আছে, এই সূর্য কোথায় যাচ্ছে? আবূ যর (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই সর্বাপেক্ষা বেশি জানেন । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ এ সূর্য যাচ্ছে এবং অনুমতি চাচ্ছে সিজাদার জন্য । তারপর সিজদার জন্য তাকে অনুমতি দেয়া হয় । একদিন তাকে হুকুম দেয়া হবে, যেখান থেকে এসেছ সেখানে ফিরে যাও । তখন সে তার অস্তের স্থল থেকে উদিত হবে । এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তিলাওয়াত করলেন, এটিই তার-অবস্থান স্থল-- হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর কিরআত অনুযায়ী ।

হাদিস নং: ৬৯২০ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২০/৫৩: মূসা (রহঃ) . . . . . হযরত যায়িদ ইব্ন সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ হযরত আবূ বকর (রাঃ) আমার কাছে লোক প্রেরণ করলেন । তাই আমি কুরআনের বিভিন্ন অংশ অনুসন্ধানে নেমে পড়লাম । পরিশেষে সূরা তাওবার শেষাংশ একমাত্র হযরত আবূ খুযায়মা আনসারী (রাঃ) ব্যতীত আর কারো কাছে পেলাম না । (আর তা হচ্ছে) ‘লাকাদ যা আকুম রাসুলুম মিনকুম’ থেকে সুরা বারাআতের শেষ পর্যন্ত ।

হাদিস নং: ৬৯২১ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২১/৫৪: ইয়াহইয়া ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . ইউনূস (রহঃ) থেকে হাদীসটি অনুরুপ বর্ণনা করেছেন । তিনি ও আবূ খুযায়মা আনসারীর কাছে এ আয়াত পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছেন ।

হাদিস নং: ৬৯২২ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২২/৫৫: মুআলা ইব্ন আসা’দ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ দুঃখ যাতনার সময় নাবী (সাঃ) দোয়া করতেন এই বলেঃ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই । যিনি মহাজ্ঞানী ও ধৈর্যশীল । তিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই, তিনি আরশ আযীমের প্রতিপালক । তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি আসমান-যমীনের প্রতিপালক এবং সম্মানিত আরশের অধিপতি ।

হাদিস নং: ৬৯২৩ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২৩/৫৬: মুহাম্মাদ ইব্ন ইউসুফ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সব মানুষ বেহুশ হয়ে পড়বে । (যখন আমার হুশ ফিরে আসবে) তখন আমি মূসা (আঃ) -কে আরশের একটি পায়া ধরে দণ্ডায়মান দেখতে পাব । বর্ণনাকারী মাজিশুন আবদুল্লাহ ইব্ন ফাজল ও আবূ সালামার মাধ্যমে হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেছেনঃ আমি সবচাইতে আগে পূনরন্থিত হব । তখন মূসা (আঃ) -কে দেখব, তিনি আরশ ধরে আছেন ।

হাদিস নং: ৬৯২৪ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২৪/৫৭: ইসমাঈল (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসুলুল্লাহ (সাঃ)বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে রাত ও দিনে ফেরেশতাগণ পালাক্রমে আগমন করেন । আর তাঁরা একত্রিত হন আসর ও ফজরের সালাতে (নামায/নামাজ) । তারপর যাঁরা তোমাদের মাঝে রাত্রি যাপন করেছেন তাঁরা উঠে যান । তখন তাদের প্রতিপালক তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, অথচ তিনি তোমাদের ব্যাপারে সবচাইতে অধিক জ্ঞাত; কেমন অবস্হায় আমার বান্দাদেরকে তোমরা ছেড়ে এসেছ ? তারা তখন উত্তর দেবে, আমরা ওদেরকে সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্হায় রেখে এসেছি, প্রথম গিয়েও আমরা ওদেরকে সালাতে (নামায/নামাজ) পেয়েছিলাম ।
খালিদ ইব্ন মাখলাদ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণও দান করে, আল্লাহ তা‘আলা তা তাঁর ডান হাত দ্বারা কবুল করেন । আর পবিত্র ও হালাল জিনিস ছাড়া আল্লাহর দিকে কোন কিছু আগমন করতে পারে না । তারপর এটি তার মালিকের জন্য লালন-পালন ও দেখাশোনা করতে থাকে, তোমরা যেমন ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন-পালন করতে থাক । পরিশেষে তা পাহাড়ের ন্যায় বিরাট আকার ধারণ করে । ওয়ারকা (রঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলার দিকে পবিত্র জিনিস ছাড়া কোন কিছুই গমন করতে পারে না ।

হাদিস নং: ৬৯২৫ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২৫/৫৮: আবদুল আলা ইব্ন হাম্মাদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, দুঃখ-যাতনার সময় নাবী (সাঃ) এই বলে দোয়া করতেনঃ মহান ও ধৈর্যশীল আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, মহান আরশের প্রতিপালক আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আসমানসমূহের মালিক এবং মহান আরশের অধিপতি আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ নেই ।

হাদিস নং: ৬৯২৬ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২৬/৫৯: কবীসা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেন, নাবী (সাঃ) এর সমীপে সামান্য কিছু স্বর্ণ পাঠানো হলে তিনি চারজনকে বণ্টন করে দেন । ইসহাক ইব্ন নাসর (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেন, হযরত আলী (রাঃ) ইয়ামানে অবস্হানকালে নাবী (সাঃ) -এর কাছে কিছু মাটি মিশ্রিত সোনা পাঠিয়েছিলেন । নাবী (সাঃ) বনূ মুজাশি গোত্রের আকরা ইব্ন হাবিস হানযালী, উয়ায়না ইব্ন হিসন ইব্ন বদর ফাযারী, আলকামা ইব্ন উলাছা আমিরী ও বনূ কিলাবের একজন এবং বনূ নাবহান গোত্রের যায়িদ আল খায়ল তাঈর মধ্যে তা বন্টন করে দেন । এই কারণে কুরাইশ ও আনসারীগণ অন্তুষ্ট হয়ে বলল, নাবী (সাঃ) নাজদবাসী সরদারদেরকে দিচ্ছেন । আর আমাদেরকে বিমুখ করছেন । এই প্রেক্ষিতে নাবী (সাঃ) বললেনঃ আমি তাদের হৃদয় আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছি । তখন কোটরাগত চোখ, উচু কপাল, অধিক দাড়ি, উচ্চ চোয়াল ও মুণ্ডানো মাথা বিশিষ্ট এক ব্যাক্তি সামনে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ (সাঃ)! আল্লাহকে ভয় কর । নাবী (সাঃ) বললেনঃ আমিই যদি তার নাফরমানী করি, তবে তাঁর অনুগত হবে আর কে? আর এজন্যই তিনি আমাকে পৃথিবীর লোকের উপর আমানতদার নির্ধারণ করেছেন । অথচ তোমরা আমাকে আমানতদার মনে করছ না । এমন সময় দলের মধ্য থেকে এক লোক, সম্ভবত তিনি হযরত খালিদ ইব্ন ওয়ালিদ (রাঃ), সেই ব্যাক্তিটিকে হত্যা করার জন্য নাবী (সাঃ) এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন । সে লোকটি চলে যাওয়ার পর নাবী (সাঃ) বললেনঃ এ ব্যাক্তির বংশ থেকে এমন কিছু লোক আসবে, যারা কুরআন পড়বে, তবে কুরআন তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না । তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে, যেভাবে শিকারের দেহ ভেদ করে তীর বের হয়ে যায় । মূর্তীপূজারীদেরকে তারা ছেড়ে দিয়ে মুসলমানদেরকে হত্যা করবে । যদি আমি তাদেরকে পাই, তাহলে আদ জাতির হত্যার মত তাদেরকে হত্যা করব ।

হাদিস নং: ৬৯২৭ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২৭/৬০: আইয়াশ ইব্ন ওয়ালীদ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেন, আমি নাবী (সাঃ) কে নিম্নোক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, “আর সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে।” তিনি বলেছেনঃ সুর্যের নির্দিষ্ট গন্তব্য হল আরশের নিচে ।

হাদিস নং: ৬৯২৮ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২৮/৬১: আমর ইব্ন আওন (রহঃ) . . . . . জারীর ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃ) -এর কাছে বসা ছিলাম । তিনি পূর্ণিমার রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমরা অবশ্যই অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবে, যেমনি তোমরা এই চাঁদটিকে দেখতে পাচ্ছ । অথচ তোমরা এটি দেখতে কোন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছ না । অতএব, যদি তোমরা সক্ষম হও তবে সুর্য উদয়ের পূর্বের সালাত (নামায/নামাজ) এবং সূর্যাস্তের পূর্বের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে যেন পরাজিত না হও । তাহলে তাই কর ।

হাদিস নং: ৬৯২৯ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯২৯/৬২: ইউসুফ ইব্ন মূসা (রহঃ) . . . . . হযরত জারীর ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ অবশ্যই তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে প্রকাশ্য ভাবে দেখতে পাবে ।

হাদিস নং: ৬৯৩০ (জাহমিয়াদের মতের খন্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায়)

৬৯৩০/৬৩: আবদা ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . হযরত জারীর ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, একদা পূর্নিমার রাতে নাবী (সাঃ) আমাদের কাছে বের হয়ে আসলেন । অতঃপর তিনি বললেনঃ অবশ্যই তোমরা অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে কিয়ামতের দিন দেখতে পাবে, যেমন এই চাঁদটিকে তোমরা দেখছ এবং একে দেখতে তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছ না ।