বৃহস্পতিবার, ১২ জুলাই, ২০১২

হাদিস নং: ৫৮৩০ (অনুমতি চাওয়া অধ্যায়)

৫৮৩০/৩৭: ইয়াহ্ইয়া ইব্ন সুলায়মান (রঃ) ……… হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমরা নবী (সাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম । তখন তিনি উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) এর হাত ধরা অবস্থায় ছিলেন ।

হাদিস নং: ৫৮৩১ (অনুমতি চাওয়া অধ্যায়)

৫৮৩১/৩৮: আবূ নুয়ায়ম (রঃ) ……… হযরত ইব্ন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমার হাত তাঁর উভয় হাতের মধ্যে রেখে আমাকে এমনভাবে তাশাহ্হুদ শিখিয়েছেন,  যেভাবে তিনি আমাকে কুরআনের সূরা শিখাতেনঃ এসময় তিনি আমাদের মাঝেই বিদ্যমান ছিলেন । তারপর যখন তাঁর ওফাত হয়ে গেল, তখন থেকে আমরা “আস্সালামু আলাইকা” এর স্থলে “আস্সালামু আলান্নাবিয়িই” পড়তে লাগলাম ।

হাদিস নং: ৫৮৩২ (অনুমতি চাওয়া অধ্যায়)

৫৮৩২/৩৯: ইসহাক এবং আহমদ ইব্ন সালিহ্ (রঃ) ……… হযরত আব্দুল্লাহ ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আলী ইব্ন আবূ তালিব যখন নবী (সাঃ)- এর অন্তিম কালের সময় তাঁর কাছ থেকে বেরিয়ে এলেন, লোকেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলোঃ হে আবুল হাসান! কিভাবে নবী (সাঃ) এর ভোর হয়েছে ? তিনি বললেনঃ আলহামলিল্লাহ্ সুস্থ অবস্থায় তাঁর ভোর হয়েছে । তখন হযরত আব্বাস (রাঃ) তার হাত ধরে বললেনঃ তুমি কি তাঁর অবস্থাবঝতে পারছনা ? তুমি তিনদিন পরেই লাঠির গোলাম হয়ে যাবে । আল্লাহর কসম! আমি নিঃসন্দেহে ধারণা করছি যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর এই রোগেই সত্বর ইন্তেকাল করবেন । আমি বনূ আব্দুল মুত্তালিবের চেহারা থেকে তাঁদের ওফাতের লক্ষণ চিনতে পারি । অতএব তুমি আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট নিয়ে যাও । আমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করবো যে, তাঁর অবর্তমানে খিলাফতের দায়িত্ব কাদের হাতে থাকবে ? যদি আমাদের গোত্রেই থাকে, তবে তা আমরা জেনে রাখলাম । আর যদি অন্য কোন গোত্রের হাতে থাকবে বলে জানি, তবে আমরা তাঁর সাথে পরামর্শ করবো । এবং তিনি আমাদের জন্য অসিয়ত করে যাবেন । হযরত আলী (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! যদি আমরা এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করি আর তিনি এ সম্পর্কে আমাদের বিরত থাকার নির্দেশ দেন, তাহলে লোকজন কখনও আমাদের এর সুযোগ দেবেনা । সুতরাং রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) কে কখনো জিজ্ঞেস করবোনা ।

হাদিস নং: ৫৮৩৩ (অনুমতি চাওয়া অধ্যায়)

৫৮৩৩/৪০: মূসা ইব্ন ইসমাঈল (রঃ) ……… হযরত মু‘আয ইব্ন জাবাল (রাঃ) বলেন, আমি একবার নবী (সাঃ) এর পেছনে তাঁর সাওয়ারীর উপর বসা ছিলাম । তখন তিনি আমাকে ডাকলেনঃ ওহে মু‘আয! আমি বললাম, লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা । তারপর তিনি এরূপ তিনবার ডাকলেন । এরপর বললেনঃ তুকি কি জানো যে, বান্দাদের উপর আল্লাহর হক কি ? তিনি বললেনঃ তা‘হলো, বান্দারা তাঁর ইবাদত করবে আর এতে তাঁর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না । আবার কিছুক্ষণ চলার পর তিনি বললেনঃ ওহে মু‘আয! আমি জবাবে বললামঃ লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা । তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো যে, বান্দা যখন তাঁর ইবাদত করবে, তখন আল্লাহর উপর বান্দাদের হক কি হবে ? তিনি বললেনঃ তা হলো এই যে, তিনি তাদের আযাব দিবেন না ।

হাদিস নং: ৫৮৩৪ (অনুমতি চাওয়া অধ্যায়)

৫৮৩৪/৪১: উমর ইব্ন হাফ্স (রঃ) ……… হযরত যায়দ ইব্ন ওয়াহ্ব (রঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! হযরত আবূ যার (রাঃ) রাবাযাহ নামক স্থানে আমাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, একবার আমি নবী (সাঃ) এর সঙ্গে এশার সময় মদীনায় হার্রা নামক স্থান দিয়ে পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম । তখন আমরা ওহোদ/ওহুদ পাহাড়ের সম্মুথীন হলে তিনি আমাকে বললেনঃ হে আবূ যার! আমি এটা পছন্দ করিনা যে, আমার নিকট ওহোদ/ওহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনা আসুক । আর ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ব্যতীত এক দীনার পরিমাণ সোনাও এক রাত অথবা তিন রাত পর্যন্ত আমার হাতে তা থেকে যাক । বরং আমি পছন্দ করি যে, আমি এগুলো আল্লাহর বান্দাদের এভাবে বিলিয়ে দেই । (কিভাবে দিবেন) তা তাঁর হার দিয়ে তিনি দেখালেন । তারপর বললেনঃ হে আবূ যার! আমি বললামঃ লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ । তখন তিনি বললেনঃ দুনিয়াতে যারা অধিক সম্পদশালী, আখিরাতে তারা হবেন অনেককম সাওয়াবের অধিকারী । তবে যারা তাদের সম্পদকে এভাবে, এভাবে বিলিয়ে দিবে, তারা হবেন এর ব্যতিক্রম । তারপর তিনি আমাকে বললেনঃ আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত, হে আবূ যার! তুাম এ স্থানেই থাকো । এখান থেকে কোথাও যেয়োনা । এরপর তিনি রাওয়ানা হয়ে গেলেন, এমন কি আমার চোখের আড়ালে চলে গেলেন । এমন সময় একটা শব্দ শুনলাম । এতে আমি শংকিত হয়ে পড়লাম যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) কোন বিপদের সম্মুখীন হয়ে পড়লেন কিনা ? তাই আমি সে দিকে অগ্রসর হতে চাইলাম । কিন্তু সাথে সাথেই রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর নিষেধাজ্ঞা, যে কোথাও যেয়োনা মনে পড়লো এবং আমি থেমে গেলাম । এরপর তিনি ফিরে আসলে আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি একটা আওয়ায শুনে শংকিত হয়ে পড়লাম যে, আপনি সেখানে গিয়ে কোন বিপদে পড়লেন কিনা । কিন্তু আপনার কথা স্বরণ করে থেমে গেলাম । তখন নবী (সাঃ) বললেনঃ তিনি ছিলেন জিব্রাঈল (আঃ) । তিনি আমার নিকট এসে সংবাদ দিলেন যে, আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর সংঙ্গে কোন কিছুকে শরীক না করে মারা যাবে, সে বেহেশ্তে প্রবেশ করবে । তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যদিও সে ব্যক্তি ব্যভিচার করে ? যদিও সে ব্যক্তি চুরি করে ? তিনি বললেনঃ সে যদিও ব্যভিচার করে, যদিও চুরি করে থাকে তবুও । আমাশ (রঃ) বলেন, আমি যাব্দকে বললাম, আমার কাছে খবর পৌছেছে যে, এ হাদীসের রাবী/বর্ণনাকারী হলেন আবূদ দারদা / আবূ দারদা (রাঃ) । তিনি বললেনঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এ হাদীসটি আবূ যারই রাবাযা নামক স্থানে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন । আমাশ (রঃ) বলেন, আবূ সালিহ্ ও আবূদ দারদা / আবূ দারদা (রাঃ) সূত্রে আমার কাছে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন । আর আবূ শিহাব, আমাশ (রঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ ‘তিন দিনের অতিরিক্ত’ ।

হাদিস নং: ৫৮৩৫ (অনুমতি চাওয়া অধ্যায়)

৫৮৩৫/৪২: ইসমাঈল ইব্ন আব্দুল্লাহ্ (রঃ) ……… হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সাঃ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি অপর কাউকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সে সেখানে বসবে না ।

হাদিস নং: ৫৮৩৬ (অনুমতি চাওয়া অধ্যায়)

৫৮৩৬/৪৩: খাল্লাদ ইব্ন ইয়াহ্ইয়া (রঃ) ……… হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সাঃ) কোন ব্যক্তিকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সেখানে অপর ব্যক্তিকে বসতে নিষেধ করেছেন । তবে তোমরা বসার জায়গা প্রশস্ত করে দাও এবং ব্যবস্থা করে দাও । হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) কেউ তার জায়গা থেকে উঠে যাক এবং তার জায়গায় অন্যজন বসুক তা পছন্দ করতেন না ।