রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৪

হাদিস নং: ৬৫৩১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩১/২১: সাঈদ ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত খারিজা ইব্ন যায়িদ ইব্ন সাবিত (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, হযরত উম্মুল আলা নাম্বী জনৈকা আনসারী মহিলা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে বায়আত গ্রহণ করেন । তিনি তাঁকে জানান যে, আনসারগণ লটারির মাধ্যমে মুহাজিরগণকে ভাগ করে নিয়েছিল । আমাদের ভাগে আসলেন হযরত উসমান ইব্ন মাযউন (রাঃ) । আমরা তাকে আমাদের ঘরের মেহমান বানিয়ে নিলাম । এরপর তিনি এমন এক ব্যথায় আক্রান্ত হলেন যে, সে ব্যথায় তার মৃত্যু হল । মারা যাবার পর তাঁকে গোসল দেওয়া হল । তার কাপড় দিয়েই তাকে কাফন পরানো হল । ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এলেন । হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, তোমার ওপর আল্লাহ্ এর রহমত হোক, হে আবূ সাইব! আমার সাক্ষ্য তোমার বেলায় এটাই যে আল্লাহ্ তোমাকে সম্মানিত করেছেন । তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ তুমি কি করে জানলে যে আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনার প্রতি আমার পিতা কুরবান হোক! তাহলে কাকে আল্লাহ্ সম্মানিত করবেন? তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ আল্লহ্ এর কসম! তার ব্যাপার তো হল, তার মৃত্যু হয়ে গেছে । আল্লাহ্ এর কসম! তার জন্য আমি কল্যাণেরই আশাবাদী । আল্লাহ্ এর কসম! আমি আল্লাহ্ এর রাসূল হওয়া সত্ত্বেও জানি না, আমার সাথে কি ব্যবহার করা হবে? তখন হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ্ এর কসম! আমি আগামীতে কখনো কারো বিশুদ্ধতার প্রত্যয়ন করব না ।

হাদিস নং: ৬৫৩২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩২/২২: আবূল ইয়ামান (রহঃ) . . . . . যুহরী (রহঃ) থেকে এ হাদীসে বলা হয়েছে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ আমি জানি না, তার সাথে কি ব্যবহার করা হবে? হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বললেনঃ আমি এতে চিন্তাগ্রস্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম । তখন আমি স্বপ্নে হযরত উসমান ইব্ন মাযউন (রাঃ)-এর জন্য প্রবাহমান ঝর্নাধারা দেখতে পেলাম । আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে এ সম্পর্কে অবহিত করলাম । তিনি বললেনঃ এটা তার আমল ।

হাদিস নং: ৬৫৩৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩৩/২৩: ইয়াহইয়া ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ কাতাদা আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যিনি নাবী (সাঃ) এর সাহাবী ও অশ্বারোহী যোদ্ধা ছিলেন । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে এবং খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে । যখন তোমাদের কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে অপছন্দনীয় মনে হয়, তখন সে যেন তার বাম দিকে থু থু ফেলে এবং এ স্বপ্ন থেকে আল্লাহ্ এর আশ্রয় চায় । তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না ।

হাদিস নং: ৬৫৩৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩৪/২৪: আবদান (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । আমার কাছে একটি দুধের পেয়ালা হাযির করা হল, আমি তা থেকে তৃপ্তি সহকারে পান করলাম । তুপ্তির চিহ্ন আমার নখ দিয়ে প্রকাশ পেতে লাগল । তারপর অবশিষ্টাংশ হযরত উমর (রাঃ) কে দিলাম । সাহাবাগগ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনি এর কি ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন? তিনি বললেনঃ ইল্‌ম ।

হাদিস নং: ৬৫৩৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩৫/২৫: আলী ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম । আমার কাছে দুধের একটি পেয়ালা পেশ করা হল । আমি তৃপ্তি সহকারে তা থেকে পান করলাম । এমনকি তৃপ্তির চিহ্ন আমার চতূর্দিক দিয়ে প্রকাশ পাচ্ছিল । অতঃপর অবশিষ্টাংশ হযরত উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) কে প্রদান করলাম । তাঁর আশেপাশের লোকজন জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি এর কি ব্যাখ্যা প্রদান করছেন হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)? তিনি বললেনঃ ইল্‌ম ।

হাদিস নং: ৬৫৩৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩৬/২৬: আলী ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । একদল লোককে স্বপ্নে দেখলাম, তাদেরকে আমার কাছে আনা হচ্ছে । আর তারা ছিল জামা পরিহিত । কারো কারো জামা স্তন পর্যন্ত, আর কারো কারো তার নিচ পর্যন্ত । হযরত উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করল । তার গায়ে যে জামা ছিল তা মাটিতে হেঁচড়ে চলছিল । সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনি কি ব্যাখ্যা দিয়েছেন ? তিনি বললেনঃ দ্বীন ।

হাদিস নং: ৬৫৩৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩৭/২৭: সাঈদ ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি । তিনি বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রিত ছিলাম । আমি দেখলাম, আমার কাছে একদল লোক পেশ করা হল, আর তারা ছিল জামা পরিহিত । কারো কারো জামা স্তন পর্যন্ত । আর কারো কারো এর নিচ পর্যন্ত । আর হযরত উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) কে এমতাবস্হায় আমার কাছে পেশ করা হলো যে, সে তার গায়ের জামা হেঁচড়িয়ে চলছিলেন । সাহাবাগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আপনি এর কি ব্যাখ্যা দিলেন । তিনি বললেনঃ দ্বীন ।

হাদিস নং: ৬৫৩৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩৮/২৮: আবদুল্লাহ্ ইব্ন মুহাম্মাদ-আল জু‘ফী (রহঃ) . . . . . কায়স ইব্ন উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি এক মজলিসে ছিলাম । যেখানে হযরত সা’দ ইব্ন মালিক (রাঃ) এবং হযরত ইব্ন উমর (রাঃ)-ও ছিলেন । এ সময় হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন সালাম (রাঃ) ঐ পথ দিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন । লোকেরা বলল, ঐ লোকটি জান্নাতবাসীদের একজন । আমি তাঁকে বললাম, লোকেরা এরূপ এরূপ বলছে । তিনি বললেনঃ সূবহানাল্লাহ্! তাদের জন্য শোভা পায় না যে, তারা এমন বিষরে মতামত ব্যক্ত করবে, যে বিষয় সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই । আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম, যেন একটা স্তম্ভ একটি সবুজ বাগিচায় রাখা হয়েছে এবং সেটা যেথায় স্হাপন করা হয়েছে তার শিরো ভাগে একটি রশি ছিল । আর নিচের দিকে ছিল একজন খাদেম । ‘মিনসাফ’ অর্থ খাদেম । বলা হল এ স্তম্ভ বেয়ে উপরে আরোহণ কর । আমি উপরের দিকে আরোহণ করতে করতে রশিটি ধরে ফেললাম । এরপর এ স্বপ্ন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কাছে বর্ণনা করেছিলাম । তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছিলেনঃ আবদুল্লাহ্ মযবুত রশি ধারণকারী অবস্হায় মারা যাবে ।

হাদিস নং: ৬৫৩৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৩৯/২৯: উবায়দ ইব্ন ইসমাঈল (রহঃ) . . . . . হযরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাকে আমায় দূ‘বার স্বপ্নে দেখানো হয়েছে । আমি দেখলাম, এক ব্যাক্তি তোমাকে রেশমী এক কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে এবং বলছে ইনি আপনার স্ত্রী । আমি তার নিকাব উন্মোচন করে দেখতে পাই যে ঐ মহিলাটি তুমিই এবং আমি বলছি, যদি এটা আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তা হলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন ।

হাদিস নং: ৬৫৪০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪০/৩০: মুহাম্মাদ (রহঃ) . . . . . হযরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাকে (আয়িশাকে) শাদী করার পুর্বেই দুবার আমাকে দেখানো হয়েছে । আমি দেখেছি, একজন ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে । আমি বললাম, আপনি নিকাব উন্মোচন করূন । যখন সে নিকাব উন্মোচন করল তখন আমি দেখতে পেলাম যে, উক্ত মহিলা তুমিই । আমি তখন বললাম, এটা যদি আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন । এরপর আবার আমাকে দেখানো হল যে, ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে । আমি বললাম- আপনি (তার নিকাব) উন্মোচন করূন । সে তা উন্মোচন করলে আমি দেখতে পাই যে, উক্ত মহিলা তুমিই । তখন আমি বললামঃ এটা যদি আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হযে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন ।

হাদিস নং: ৬৫৪১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪১/৩১: সাঈদ ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে, আমাকে সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থবহ বানী সহকারে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভীতি উদ্রেককারী প্রভাব দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে । একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম । আমার কাছে ভূ-পৃষ্ঠের ভাণ্ডার সমুহের চাবি পেশ করে আমার সামনে রাখা হল । (আবূ আবদুল্লাহ) মুহাম্মাদ বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আমার কাছে এ কথা পৌছেছে যে, ‘সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থবহ বানী’ -এর অর্থ হল, আল্লাহ্ এর অনেক বিষয় যা পূর্ববতী কিতাব সমুহে লেখা হত --- একটি অথবা দুটি বিষয়ে সন্নিবেশিত করে দেন । অথবা এর অর্থ অনুরূপ কিছু ।

হাদিস নং: ৬৫৪২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪২/৩২: আবদুল্লাহ্ ইব্ন মুহাম্মাদ ও খলীফা (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন সালাম (রাঃ)এথকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি একটি বাগিচায় আছি । বাগিচার মাঝখানে একটি স্তম্ভ । স্তম্ভের শিরোভাগে একটি হাতল । তখন আমাকে বলা হল, উপরের দিকে উঠ । আমি বললাম, পারছি না । তখন আমার কাছে একজন খাদেম আসল এবং আমার কাপড় গুটিয়ে/ভিজিয়ে দিল । আমি উপরের দিকে উঠতে উঠতে হাতলটি ধরে ফেললাম । হাতলটি ধরে থাকা অবস্থায় আমি জেগে গেলাম । অতঃপর এ স্বপ্ন নাবী (সাঃ) -এর কাছে বর্ণনা করলাম । তিনি বললেনঃ ঐ বাগিচা ইসলামের বাগিচা, ঐ স্তম্ভ ইসলামের স্তম্ভ, আর ঐ হাতল হল মযবুত হাতল । তুমি মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামকে শক্ত করে ধরে থাকবে ।

হাদিস নং: ৬৫৪৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪৩/৩৩: মুআলা ইব্ন আসাদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখতে পাই, আমার হাতে যেন রেশমী এক টুকরা কাপড় । জান্নাতের যে স্থানেই তা আমি নিক্ষেপ করি তা আমাকে সে স্থানে উড়িয়ে নিয়ে যায় । এ স্বপ্ন আমি হযরত হাফসা (রাঃ) এর নিকট বর্ণনা করলাম । আর হযরত হাফসা (রাঃ) তা নাবী (সাঃ) -এর নিকট বর্ণনা করলেন । তখন তিনি বললেনঃ তোমার ভাই একজন সকর্মপরায়ণ ব্যাক্তি । অথবা বললেনঃ আবদুল্লাহ তো একজন সকর্মপরায়ন ব্যাক্তি ।

হাদিস নং: ৬৫৪৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪৪/৩৪: আবদুল্লাহ্ ইব্ন সাব্বাহ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ যখন কিয়ামত নিকটবর্তী হয়ে যাবে তখন মু‘মিনের স্বপ্ন খুব কমই অবাস্তবায়িত থাকবে । আর মু‘মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ । আর নবুয়তের কোন কিছুই অবাস্তব হতে পারে না । রাবী মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, আমি এরূপ বলছি । তিনি বলেন, এ কথা বলা হয়ে থাকে যে, স্বপ্ন তিন প্রকার, মনের কল্পনা, শয়তানের পক্ষ হতে ভীতি প্রদর্শন এবং আল্লাহ্ এর তরফ হতে সুসংবাদ । তাই যদি কেউ অপছন্দনীয় কিছু দেখে তবে সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে । বরং উঠে যেন (নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেয় । রাবী বলেন, স্বপ্নে শৃংখল দেখা অপছন্দনীয় মনে করা হত এবং পায়ে বেড়ি দেখাকে তারা পছন্দ করতেন । বলা হত, পায়ে বেড়ি দেখার ব্যাখ্যা হলো দ্বীনের ওপর অবিচল থাকা । কাতাদা, ইউনূস, হিশাম ও আবূ হিলাল (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে উক্ত হাদীসকে বর্ণনা করেছেন । আর কেউ কেউ এসবকে হাদীসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন । (পক্ষান্তরে) আউদের বর্ণনাকৃত হাদীস সুষ্পষ্ট । ইউনুস (রহঃ) বলেছেনঃ আমি বন্ধনের ব্যাখ্যাকে নাবী (সাঃ) -এর পক্ষ থেকেই মনে করি । আবূ আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেনঃ শৃংখল গলদেশেই বাঁধা হয় ।

হাদিস নং: ৬৫৪৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪৫/৩৫: আবদান (রহঃ) . . . . . তাদেরই এক মহিলা হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) যিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর হাতে বায়আত করেছিলেন তার থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, যখন মুহাজিরদের বাসস্হান নিরুপণের জন্য আনসারগণ লটারী দিলেন, তখন আমাদের ঘরে বসবাসের জন্য হযরত উসমান ইব্ন মাযউন (রাঃ) আমাদের ভাগে পড়েন । তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে আমরা তাঁর সেবা-শশ্রুষা করি । অবশেযে তিনি মারা যান । এরপর আমরা তাকে তাঁর কাপড় দিয়েই কাফন পরিয়ে দেই । ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমাদের ঘরে আসলেন । তখন আমি বললাম, হে আবূ সাইব! তোমার ওপর আল্লাহ্ এর রহমত হোক । তোমার বেলায় আমার সাক্ষ্য এই যে আল্লাহ্ তোমাকে সম্মানিত করেছেন । তিনি বললেনঃ তুমি তা কি করে জানলে? আমি বললাম, আল্লাহ্ এর কসম! আমি জানি না । তিনি বললেনঃ তার তো মৃত্যু হয়ে গেছে, আমি তার জন্য আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে কল্যাণেরই আশাবাদী । আল্লাহ্ এর কসম! আমি আল্লাহ্ এর রাসূল হওয়া সত্ত্বেও জানি না যে, আমার সাথে এবং তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে? হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ্ এর  কসম! আমি আর কখনও কারো শুদ্ধচিত্ততা প্রত্যায়ন করব না । হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বলেনঃ আমি স্বপ্নে হযরত উসমান (রাঃ)-এর জন্য প্রবাহমান ঝর্ণা দেখেছি । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে এসে তা বর্ণনা করলাম । তখন তিনি বললেনঃ এটা তাঁর আমল তার জন্য জারি থাকবে ।

হাদিস নং: ৬৫৪৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪৬/৩৬: ইয়াকুব ইব্ন ইবরাহীম ইব্ন কাসীর (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ একদা (আমি স্বপ্নে দেখলাম) আমি একটি কূপের পাশে বসে কূপ থেকে পানি উত্তোলন করছি । ইত্যবসরে আমার কাছে হযরত আবূ বকর ও উমর (রাঃ) আসল । হযরত আবূ বকর (রাঃ) বালতিটি হাতে নিয়ে এক বা দু-বালতি পানি উঠাল । আর তার উত্তোলনে কিছুটা দুর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করূন । এরপর হযরত আবূ বকর (রাঃ) এর হাত থেকে হযরত উমর (রাঃ) তা গ্রহণ করল । তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল । আমি কোন শক্তিশালী ব্যাক্তিকে উমরের ন্যায় এতটা ঝানূ কর্মঠ দেখিনি । ফলে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল ।

হাদিস নং: ৬৫৪৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪৭/৩৭: আহমাদ ইব্ন ইউনূস (রহঃ) . . . . . সালিমের পিতা হযরত আবদুল্লাহ ইরন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি আবূ বকর ও উমর (রাঃ) সম্পর্কে নাবী (সাঃ) এর স্বপ্ন বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমি লোকদেরকে সমবেত হতে দেখলাম । তখন হযরত আবূ বকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে এক বা দুবালতি পানি উত্তোলন করল । আর তার উত্তোলনে কিছু দুর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করূন । এরপর হযরত ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) দাঁড়াল । আর তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল । আমি লোকদের মধ্যে হযরত উমর (রাঃ) এর ন্যায় এতটা ঝানূ কর্মঠ কাউকে দেখিনি । ফলে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলি নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল ।

হাদিস নং: ৬৫৪৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪৮/৩৮: সাঈদ ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ একদা আমি নিন্দ্রিায় ছিলাম । দেখলাম, আমি একটি কূপের পাশে রয়েছি । আর এর নিকট একটি বালতি রয়েছে । আমি কূপ থেকে পানি উত্তোলন করলাম যতখানি আল্লাহ্ এর ইচ্ছা ছিল । এরপর বালতিটি ইব্ন আবূ কুহাফা গ্রহন করেন । তিনি কুপ থেকে এক বা দু-বালতি পানি উত্তোলন করেন । তার উত্তোলনে কিছুটা দুর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করূন । তারপর বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল । তখন তা উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) গ্রহণ করল । আমি কোন শক্তিশালী ব্যাক্তিকে উমরের ন্যায় পানি উত্তোলন করতে দেখিনি । অবশেষে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল ।

হাদিস নং: ৬৫৪৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৪৯/৩৯: ইসহাক ইব্ন ইবরাহীম (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রায় ছিলাম । দেখলাম, আমি একটি হাউযের কাছ থেকে লোকদেরকে পানি পান করাচ্ছি । তখন আমার কাছে আবূ বকর (রাঃ) আসল । আমাকে বিশ্রাম দেওয়ার নিমিত্তে আমার হাত থেকে সে বালতিটি নিয়ে গেল এবং দু বালতি পানি উঠাল । আর তার উভোলনে কিছুটা দূর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করূন । এরপর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এসে তার কাছ থেকে তা নিয়ে নিল এবং পানি উত্তোলন করতে থাকল । অবশেষে লোকেরা (পরিতৃপ্ত হয়ে) ফিরে গেল, অথচ হাউযের পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ।

হাদিস নং: ৬৫৫০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫০/৪০: সাঈদ ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে বসা ছিলাম । তখন তিনি বললেনঃ আমি এক সময় ঘুমিয়ে ছিলাম । আমি আমাকে জান্নাতে দেখতে পেলাম । একজন মহিলা একটি প্রাসাদের পাশে ওযু করছে । আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এই প্রাসাদটি কার? তারা বলল উমরের । তখন তার আত্নমর্যাদাবোধের কথা স্বরণ করলাম । তাই আমি ফিরে এলাম । হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ এ কথা শুনে হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেনঃ আমার পিতা-মাতা আপনার ওপর কুরবান হোক! হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ) (আপনার উপরেও কি) আমি আত্নমর্যাদাবোধ প্রদর্শন করব ?