৫৯২০/৫৫: আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসলামা (রঃ) ……… আবূ হুমায়দা (রঃ) বর্ণনা করেন
। একবার লোকেরা বললো : ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আপনার উপর কিভাবে দরূদ পড়বো ? তিনি বললেন
: তোমরা পড়বে, ইয়া আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদের ও তাঁর সহধর্মিণীগণ এবং তাঁর সন্তান-সন্ততিগণের
উপর রহমত নাযিল করূন । যেমন করে আপনি ইব্রাহীম (আঃ) এর পরিবারবর্গের উপর রহমত নাযিল
করেছেন । আর আপনি মুহাম্মাদ, তাঁর সহধর্মিণীগণ এবং তাঁর আওলাদের উপর বরকত নাযিল করূন,
যেমনভাবে আপনি ইব্রাহীম (আঃ) এর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করেছেন । আপনি অতি প্রশংসিত
এবং উচ্চ মর্যাদাশীল ।
কুরআন শরীফ,বুখারী শরীফ,মুসলিম শরীফ,নাসায়ী শরীফ,আবু দাউদ শরীফ,তিরমিযী শরীফ,ইবনে মাজাহ শরীফ
বুধবার, ৪ জুলাই, ২০১২
হাদিস নং: ৫৯২১ (দু‘আ অধ্যায়)
৫৯২১/৫৬: আহমাদ ইব্ন সালিহ (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি
নবী (সাঃ) কে এ দু’আ করতে শুনেছেন : ইয়া আল্লাহ! যদি আমি কোন ম’মিন ব্যক্তিকে মন্দ
বলে থাকি, তবে আপনি সেটাকে কিয়ামতের দিন তার জন্য আপনার নৈকট্য লাভের উপায় বানিয়ে দিন
।
হাদিস নং: ৫৯২২ (দু‘আ অধ্যায়)
৫৯২২/৫৭: হাফস ইব্ন উমর (রঃ) ……… হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । একবার লোকজন
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে নানা প্রশ্ন করতে লাগল, এমনকি প্রশ্ন করতে করতে তাঁকে বিরক্ত
করে ফেললো । এতে তিনি রাগ করলেন এবং মিম্বরে আরোহণ করে বললেন : আজ তোমরা যত প্রশ্ন
করবে আমি তোমাদের সব প্রশ্নেরই বর্ণনা সহকারে জবাব দিব । এসময় আমি ডানে ও বামে তাকাতে
লাগলাম এবং দেখলাম যে, প্রতিটি লোকই নিজের কাপড় দিয়ে মাথা পেচিয়ে কাঁদছেন । এমন সময়
একজন লোত, যাকে লোকের সাথে বিবাদের সময় তার বাপের নাম নিয়ে ডাকা হতো না, সে প্রশ্ন
করলো : ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার পিতা কে ? তিনি বললেন : হুযায়ফা । তখন হযরত উমর (রাঃ)
বলতে লাগলেন : আমরা আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ (সাঃ)
কে রাসূল হিসেবে গ্রহণ করেই সন্তষ্ট । আমরা ফিতনা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি ।
তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন : আমি ভালো মন্দের যে দৃশ্য আজ দেখলাম, তা আর কখনও দেখিনি
। জান্নাত ও জাহান্নামের সূরত আমাকে এমন স্পষ্টভাবে দেখানো হয়েছে যে, যেন এদুটি এ দেয়ালের
পেছনেই অবস্থিত । রাবী কাতাদা (রঃ) এ হাদীস উল্লেখ করার সময় এ আয়াতটি পড়তেন । (অর্থ)
: “হে মু‘মিনগণ! তোমরা সে সব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে
।”
হাদিস নং: ৫৯২৩ (দু‘আ অধ্যায়)
৫৯২৩/৫৮: কুতায়বা ইব্ন সাঈদ (রঃ) ……… হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) বর্ণনা
করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আবূ তালহা (রাঃ) কে বললেন : তুমি তোমাদের ছেলেদের
মধ্য থেকে আমার খিদমত করার জন্য একটি ছেলে খুঁজে নিয়ে এস । আবূ তালহা (রাঃ) গিয়ে আমাকে
তাঁর সাওয়ারীর পিছনে বসিয়ে নিয়ে এলেন । তখন থেকে আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ০ এর খিদমত করে
আসছি । যখনই কোন বিপদ দেখা দিত, তখন আমি তাঁকে বেশী করে এ দু‘আ পড়তে শুনতাম : “ইয়া
আল্লাহ! আমি দুশ্চিন্তা, পেরেশানী, অপারগতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরূতা, ঋণের বোঝা এবং
মানুষের আধিপত্য থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি । আমি সর্বদা তাঁর খিদমত করে আসছি, এমন কি
যখন আমরা খায়বার অভিযান থেকে ফিরে আসছিলাম, তখন তিনি সাফিয়্যা বিনত হুয়াইকে সঙ্গে নিয়ে
আসলেন, তিনি তাঁকে গনীমতের মাল থেকে নিজের জন্য বেছে নিয়েছিলেন । তখন আমি তাঁকে দেখছিলাম
যে, তিনি তাঁকে একখানা চাঁদর অথবা একখানা কম্বল দিয়ে ঢেকে নিজের পিছনে বসিয়েছিলেন ।
যখন আমরা নবাই সাহবা নামক স্থানে পৌঁছলাম, তখন আমরা (সেখানে থেমে) ‘হাইস’ নামক খাবার
তৈরী করে এক চামড়ার দস্তরখানে রাখলাম । তিনি আমাকে পাঠালেন, আমি গিয়ে কয়েকজন লোককে
দাওয়াত করলাম । তারা এসে খেয়ে গেলেন । এটি ছিল সাফিয়্যার সঙ্গে তাঁর বাসর যাপন । তারপর
তিনি রওয়যানা হলে ওহোদ পর্বত তাঁর সামনে দেখা গেল, তখন তিনি বললেন : এ এমন একটি পাহাড়
যা আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি । তারপর যখন মদীনার কাছে পৌছলেন, তখন তিনি
বললেন : “ইয়া আল্লাহ! আমি মদীনার দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানকে হারাম (সম্মানিত)
করছি, যে রকম ইব্রাহীম (আঃ) মক্কাকে হারাম (সম্মানিত) করেছিলেন । ইয়া আল্লাহ! আপনি
তাদের মুদ্দ ও সা এর মধ্যে বরকত দিন
হাদিস নং: ৫৯২৪ (দু‘আ অধ্যায়)
৫৯২৪/৫৯: হুমায়দী (রঃ) ……… মুসা ইব্ন উকবা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন । উম্মে
খালিদ বিনত খালিদ (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাঃ) কে কবরের আযাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইতে
শনেছি । রাবী বলেন যে, এ হাদীস আমি উম্মে খালিদ ব্যতীত নবী (সাঃ) থেকে আর কাউকে বলতে
শুনি নি ।
হাদিস নং: ৫৯২৫ (দু‘আ অধ্যায়)
৫৯২৫/৬০: আদম (রঃ) ……… মুস্’আব (রাঃ) বর্ণনা করেন, সা’দ (রাঃ) পাঁচটি জিনিস
থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইতে নির্দেশ দিতেন এবং তিনি এগুলো নবী (সাঃ) থেকে উল্লেখ করতেন
। তিনি এগুলো থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইতে এ দ’আ পড়তে নির্দেশ দিতেন : ইয়া আল্লাহ! আমি
কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি । আমি কাপুরূষতা থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি, আমি অবহেলিত
বার্ধক্যে উপনীত হওয়া থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি, আর আমি দুনিয়ার ফিতনা অর্থাৎ দাজ্জালের ফিতনা থেকেও
আপনার আশ্রয় চাচ্ছি এবং আমি কবরের আযাব থেকেও আপনার আশ্রয় চাচ্ছি ।
হাদিস নং: ৫৯২৬ (দু‘আ অধ্যায়)
৫৯২৬/৬১: উসমান ইব্ন আবূ শায়বা (রঃ) ……… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি
বলেন, একবার আমার নিকট মদীনার দ’জন ইয়াহূদী বৃদ্ধা মহিলা এলেন । তারা আমাকে বললেন যে,
কবরবাসীদের তাদের কবরে আযাব দেওয়া হয়ে থাকে । তখন আমি তাদের একথা মিথ্যা বলে অভিহিত
করলাম । আমার বিবেক তাদের কথাটিকে সত্য বলে মানতে চাইল না । তাঁরা দু’জন বেরিয়ে গেলেন
। আর নবী (সাঃ) আমার নিকট এলেন । আমি তাঁকে বললাম : ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমার নিকট দু’জন
বৃদ্ধা এসেছিলেন । তারপর আমি তাঁকে তাদের কথা বর্ণনা করলাম । তখন তিনি বললেন : তারা
দু’জন সত্যইবলেছে । নিশ্চয়ই কবরবাসীদের এমন আযাব দেওয়া হয়ে থাকে, যা সকল চতুস্পদ জীবজন্তু
শুনে থাকে । এরপর থেকে আমি তাঁকে সর্বদা প্রত্যেক সালাতে কবরের আযাব থেকে আল্লাহর আশ্রয়
চাইতে দেখেছি ।
হাদিস নং: ৫৯২৮ (দু‘আ অধ্যায়)
৫৯২৮/৬৩: মু’আল্লাহ ইব্ন আসাদ (রঃ) ……… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী
(সাঃ) বলতেন : ইয়া আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় চাই অলসতা, অতিরিক্ত বার্ধক্য,
গুনাহ আর ঋণ থেকে, আর কবরের ফিতনা এবং কবরের আযাব থেকে । আর জাহান্নামের ফিতনা এবং
এর আযাব থেকে, আর ধনবান হওয়ার পরীক্ষার মন্দ পরিণাম থেকে । আমি আরও আশ্রয় চাই দারিদ্রের
অভিশাপ থেকে । আমি আরও আশ্রয় চাই মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে । ইয়া আল্লাহ! আমার গুনাহ
এর দাগগুলো থেকে আমার অন্তরকে বরফ ও শীতল পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিন এবং আমার
অন্তরকে সমস্ত গুনাহ্ এর ময়লা থেকে এমন ভাবে পরিষ্কার করে দিন, যেভাবে আপনি সাদা কাপড়কে
ময়লা থেকে সাফ করার ব্যবস্থা করে থাকেন । আর আমার ও আমার গুনাহ গুলোর মধ্যে এতটা দূরত্ব
করে দিন, যত দূরত্ব আপনি দুনিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন ।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)