রবিবার, ১ জুলাই, ২০১২

হাদিস নং: ৫৯৫০ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭১/ মুশরিকদের উপর বদ দু‘আ করা -
৫৯৫০/৮৫: ইব্ন সালাম (রঃ) ……… ইব্ন আবূ আওফা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) (খন্দকের যুদ্ধে) শত্রু বাহিনীর উপর বদ দ’আ করেছেন : ইয়া আল্লাহ! হে কিতাব অবতীর্ণকারী! হে ত্বরি হিসাব গ্রহণকারী! আপনি শত্রু বাহিনীকে পরাজিত করূন । তাদের পরাস্ত করূন । এবং তাদের প্রকম্পিত করূন ।

হাদিস নং: ৫৯৫১ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭১/
৫৯৫১/৮৬: মুয়ায ইব্ন ফাযালা (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সাঃ) এশার সালাতের শেষ রাক’আতে যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ্’ বলতেন তখন কুনূতে (নাযিলা) পড়তেন : ইয়া আল্লাহ! আইয়্যাশ ইব্ন আবূ রাবীয়াকে নাযাত দিন । ইয়া আল্লাহ! ওয়ালীদ ইব্ন ওয়ালীদকে মুক্তি দিন । ইয়া আল্লাহ! সালামা ইব্ন হিশামকে মুক্তি দিন । ইয়া আল্লাহ! আপনি দুর্বল মু’মিনদের নাযাত দিন । ইয়া আল্লাহ! আপনি মুযার গোত্রকে কঠোর শাস্তি দিন । ইয়া আল্লাহ! আপনি তাদের উপর ইউসুফ (আঃ) এর সময়ের দূর্ভিক্ষের বছরের ন্যায় দুর্ভিক্ষ দিন ।

হাদিস নং: ৫৯৫২ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭১/
৫৯৫২/৮৭: হাসান ইব্ন রাবী (রঃ) ……… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সাঃ) একটা সারিয়্যা (ক্ষুদ্র বাহিনী) পাঠালেন । তাদের কুর্রা বলা হতো । তাদের হত্যা করা হলো । আমি নবী (সাঃ) কে এদের ব্যপারে যেরূপ রাগান্বিত দেখেছি অন্য কারনে সেরূপ রাগান্বিত দেখি নি । এজন্য তিনি ফজরের সালাতে মাসব্যাপী কুনূত পড়লেন । তিনি বলতেন : উসায়্যা গোত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করেছে ।

হাদিস নং: ৫৯৫৩ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭১/
৫৯৫৩/৮৮: আব্দুল্লাহ ইব্ন মুহাম্মদ (রঃ) ……… আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের লোকেরা নবী (সাঃ) কে সালাম করার সময় বলতো ‘আস্সামু আলাইকা’ (ধ্বংস তোমার প্রতি) । আয়েশা (রাঃ) তাদের এ বাক্যের কুমতলব বুঝতে পেরে বললেন : ‘আলাইকুমুস্সাম ওয়াল্লানত’ (ধ্বংস তোমাদের প্রতি ও লা’নত) । তখন নবী (সাঃ) বললেন : আয়েশা থামো! আল্লাহ্ তা’য়ালা সমুদয় বিষয়েই নম্রতা পছন্দ করেন । আয়েশা (রাঃ) বললেন : তারা কি বলেছে আপনি কি তা শুনেন্নি ? তিনি বললেন, আমি তাদের প্রতি উত্তরে ‘ওয়াআলাকুম’ বলেছি – তা তুমি শুননি ? আমি বলেছি, তোমাদের উপর ।

হাদিস নং: ৫৯৫৪ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭১/
৫৯৫৪/৮৯: মুহাম্মাদ ইব্ন মুসান্না (রঃ) ……… আলী ইব্ন আবূ তালিব (রাঃ) বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন আমরা নবী (সাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম । তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তাদের গৃহকে এবং কবরকে আগুনে ভর্তি করে দিন । কেননা তারা আমাদের ‘সালাতুল উস্তা’ থেকে বিরত রেখেছে । এমন কি সূর্য অস্তমিত হয়ে গেল । আর ‘সালাতুল উস্তা’ হলো আসরের সালাত ।

হাদিস নং: ৫৯৫৫ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭২/ মুশরিকদের জন্য দু‘আ -
৫৯৫৫/৯০: আলী ইব্ন আব্দুল্লাহ (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তূফাইল ইব্ন আমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন : দাওস গোত্র নাফরমানী করেছে ও অবাধ্য হয়েছে এবং ইসলাম গ্রহন করতে অস্বীকার করেছে । সুতরাং আপনি তাদের উপর বদ দ’আ করূন । সাহাবীগণ ধারনা করলেন যে, তিনি তাদের উপর বদ দু’আই করবেন । কিন্তু তিনি (তাদের জন্য) দু’আ করলেন : ইয়া আল্লাহ! আপনি দাওস গোত্রকে হিদায়াত করূন । আর তাদের মুসলমান বানিয়ে নিয়ে আসুন ।

হাদিস নং: ৫৯৫৬ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৩/ নবী (সাঃ) এর দু‘আ : ইয়া আল্লাহ! আমার পূর্বের ও পরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন -
৫৯৫৬/৯১: মুহাম্মাদ ইব্ন বাশ্শার (রঃ) ……… আবূ মূসা (রাঃ)তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত যে, নবী (সাঃ) এরূপ দু’আ করতেন : ইয়া আল্লাহ ! আপনি মাফ করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আমার যেসব গুনাহ আপনি আমার চাইতে বেশী জানেন । : ইয়া আল্লাহ ! আপনি মাফ করে দিন আমার ভূল-ত্রুটি, আমার ইচ্ছাকৃত গুনাহ ও আমার অজ্ঞতা এবং আমার উপহাসমূলক গুনাহ আর এরকম গুনাহ যা আমার মধ্যে আছে । ইয়া আল্লাহ ! আপনি মাফ করে দিন ; যেসব গুনাহ আমি আগে করেছি । আপনিই আগে বাড়ান আপনিই পশ্চা ফেলেন এবং আপনিই সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান ।


হাদিস নং: ৫৯৫৭ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৩/
৫৯৫৭/৯২: মুহাম্মাদ ইব্ন মুসান্না (রঃ) ……… আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সাঃ) দু’আ করতেন : ইয়া আল্লাহ ! আপনি মাফ করে দিন আমার ভূল-ত্রুটিজনিত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আর যা আপনি আমার চাইতে বেশী জানেন । ইয়া আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার হাসি-তামাশামূলক গুনাহ, আমার দৃড়তামূলক গুনাহ, আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ এবং আর এসব গুনাহ যা আমার মধ্যে রয়েছে ।


হাদিস নং: ৫৯৫৮ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৪/ জুমু‘আর দিনে কবূলিয়াতের সময় দু‘আ করা -
৫৯৫৮/৯৩: মুসাদ্দাদ (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । আবুল কাসিম (সাঃ) বলেন, জুমু’আর দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে যদি সে মুহূর্তটিতে কোন মুসলমান দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, আল্লাহর নিকট কোন কল্যানের জন্য দু’আ করে, তবে তা আল্লাহ্ তাকে দান করবেন । তিনি এ হাদীস বলার সময় আপন হাত দিয়ে ইশারা করেন, (ইশারাতে) আমরা বুঝলাম যে, তিনি সময়ের সংক্ষিপ্ততার দিকে ইংগিত করেছেন ।

হাদিস নং: ৫৯৫৯ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৫/ নবী (সাঃ) এর বাণী : ইয়াহুদীদের ব্যাপারে আমাদের বদ দু‘আ কবূল হবে । কিন্ত আমাদের প্রতি তাদের বদ দু‘আ কবূল হবে না -
৫৯৫৯/৯৪: কুতায়বা ইব্ন বাঈদ (রঃ) ……… আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত । একবার একদল ইয়াহুদী নবী (সাঃ) এর নিকট এসে সালাম দিতে গিয়ে বললো : ‘আস্সামু আলাইকা’ । তিনি বললেন : ‘ওয়াআলাইকুম’ । কিন্তু আয়েশা (রাঃ) বললেন : ‘আস্সামু আলাইকুম ওয়া লায়ানাকুমুল্লাহ ওয়া গাযিবা আলাইকুম’ (তোমাদের উপর ধ্বংস নাযিল হোক, আল্লাহ তোমাদের উপর লানত করূন, আর তোমাদের উপর গযব নাযিল করূন) । তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন : হে আয়েশা তুমি থামো ! তুমি নম্র ব্যবহার করো, আর তুমি কঠোরতা পরিহার করো । আয়েশা (রাঃ) বললেন : তারা কি বলেছে আপনি কি শুনেন নি ? তিনি বললেন : আমি যা বললাম, তা কি তুমি শুননি ? আমি তো তাদের কথাটা তাদের উপরই ফিরিয়ে দিলাম । সুতরাং তাদের উপর আমার বদ্ দু’আ কবূল হয়ে যাবে । কিন্তু আমার সম্বন্ধে তাদের বদ্ দ’আ কবূল হবে না ।

হাদিস নং: ৫৯৬০ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৬/ আ-মী-ন বলা -
৫৯৬০/৯৫: আলী ইব্ন আব্দুল্লাহ (রঃ)……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সাঃ) বলেছেন : যখন ক্বারী ‘আ-মী-ন’ বলবে তখন তোমরাও ‘আ-মী-ন’ বলবে । কারন এ সময় ফিরিশ্তাগন আ-মী-ন বলে থাকেন । সুতরাং যার আ-মী-ন বলা ফিরিশ্তাদের আ-মী-ন বলার সাথে মিলে যাবে, তার পূর্বের সবগুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে ।

হাদিস নং: ৫৯৬১ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৭/ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এর ফযীলত -
৫৯৬১/৯৬: আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসলামা (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি দিনের মধ্যে একশ’বার পড়বে “আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন অংশীদার নেই । রাজত্ব একমাত্র তাঁরই । হাম্দ (প্রশংসা) তাঁরই, তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান” সে একশ গোলাম আযাদ করার সাওয়াব লাভ করবে এবং তার জন্য একশ’টি নেকী লেখা হবে, আর তার একশ’টি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে । আর সে দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এটা তার জন্য রক্ষাকবচে পরিণত হবে এবং তার চাইতে বেশী ফযীলত ওয়ালা আমল আর কারো হবে না । তবে যে ব্যক্তি এ আমল তার চাইতেও বেশী করবে।

হাদিস নং: ৫৯৬২ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৭/
৫৯৬২/৯৭: আব্দুল্লাহ ইব্ন মুহাম্মদ (রঃ) ……… আমর ইব্ন মায়মূন (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি (এ কালেমাগুলো) দশবার পড়বে সে ঐ ব্যক্তির সমান হয়ে যাবে, যে ব্যক্তি ঈসমাইল (আঃ) এর বংশ থেকে একটা গোলাম আযাদ করে দিয়েছে । আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকেও বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ হাদীসটা তাঁর কাছেও বলেছেন ।

হাদিস নং: ৫৯৬৩ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৮/ সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলত
৫৯৬৩/৯৮: আব্দুল্লাহ ইব্ন মাসলামা (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন : যে ব্যক্তি প্রত্যহ একশ’বার সুবহা-নাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি বলবে তার গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে তা সমূদ্রের ফেনা পরিমাণ হলেও ।

হাদিস নং: ৫৯৬৪ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৭৮/
৫৯৬৪/৯৯: যুহায়র ইব্ন হারব্ (রঃ) ……… আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সাঃ) বলেছেন : দুইটি বাক্য এমন যে, মুখে তার উচ্চারণ অতি সহজ, পাল্লায় অনেক ভারী, আর আল্লাহর কাছে অতি প্রিয় । তা হলো : সুবহা-নাল্লাহিল আযীম, সুবহা-নাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি ।