মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১২

হাদিস নং: ৫৯৩০ (দু‘আ অধ্যায়)

৫৯৩০/৬৫: মুহাম্মদ ইব্ন মুসান্না (রঃ) ……… সা’দ ইব্ন আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি পাঁচটি কাজ থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়ার নির্দেশ দিতেন এবং তিনি তা নবী (সাঃ) থেকেই বর্ণনা করতেন । তিনি দু’আ করতেন : ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কৃপণতা থেকে, আমি আশ্রয় চাই কাপুরূষতা থেকে, আমি আশ্রয় চাই অবহেলিত বার্ধক্যে উপনীত হওয়া থেকে, আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই দুনিয়ার বড় ফিতনা (দাজ্জালের ফিতনা) থেকে এবং আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কবরের আযাব থেকে ।

হাদিস নং: ৫৯৩১ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৫৫/ দুঃসহ দীর্ঘায়ু থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া -
৫৯৩১/৬৬: আবূ মা’মার (রঃ) ……… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নবী (সাঃ) বলতেন : ইয়া আল্লাহ! আমি অলসতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই এবং আমি আপনার কাছে কাপুরূষতা থেকে আশ্রয় চাই । আমি আপনার কাছে আরও আশ্রয় চাই দুঃসহ দীর্ঘায়ু থেকে এবং আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই ।

হাদিস নং: ৫৯৩২ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৫৬/ মহামারী ও রোগ যন্ত্রণা দূর হওয়ার জন্য দু‘আ করা -
৫৯৩২/৬৭: মুহাম্মদ ইব্ন ইউসুফ (রঃ) ……… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নবী (সাঃ) দু’আ করতেন : ইয়া আল্লাহ! আপনি যেভাবে মক্কাকে আমাদের জন্য প্রিয় করে দিয়েছেন, মদীনাকেও সেভাবে অথবা এর চাইতে বেশী আমাদের কাছে প্রিয় করে দিন । আর মদীনার জ্বর ‘জুহফা’ নামক স্থানের দিকে সরিয়ে দিন । ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের মাপের ও ওযনের পাত্রে বরকত দিন ।

হাদিস নং: ৫৯৩৩ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৫৬/
৫৯৩৩/৬৮: মূসা ইব্ন ইসমাঈল (রঃ) ……… সা’দ ইব্ন আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, বিদায় হাজ্জের সময় আমি রোগে আক্রান্ত হয়ে মরণাপন্ন হয়ে পড়েছিলাম । নবী (সাঃ) সে সময় আমাকে দেখতে এলেন । তখন আমি বললাম : আমি যে রোগ-যন্ত্রণায় আক্রান্ত, তাতো আপনি দেখছেন । আমি একজন ধনবান লোক । আমার একটি মেয়ে ছাড়া আর কেউ ওয়ারিস নেই । তাই আমি কি আমার দু’তুতীয়াংশ মাল সাদাকা করে দিতে পারি ? তিনি বললেন: না । আমি বললাম : তবে অর্ধেক মাল ? তিনি বললেন : না । এক তৃতীয়াংশ অনেক । তোমার ওয়ারিসদের লোকের কাছে ভিক্ষার হাত প্রসারিত করার মত অভাবী রেখে যাওয়ার চাইতে তাদের ধনবান রেখে যাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম । আর তুমি একমাত্র আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের জন্য যা কিছুই ব্যয় করবে নিশ্চয়ই তার প্রতিদান দেওয়া হবে । এমন কি (সে উদ্দেশ্যে) তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে লুকমাটি তুলে দিয়ে থাকো, তোমাকে এর প্রতিদান দেওয়া হবে । আমি বললাম : তা হলে আমার সঙ্গীগণের পরেও কি আমি বেঁচে থাকবো ? তিনি বললেন : নিশ্চয়ই তুমি এঁদের পরে বেঁচে থাকলে তুমি আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের জন্য যা কিছু নেক আমল করনা কেন, এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা ও সম্মান আরও বেড়ে যাবে । আশা করা যায় যে, তুমি আরও কিছু দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবে । এমন কি তোমার দ্বারা অনেক কাওম(সম্প্রদায়) উপকৃত হবে । আর অনেক কাওম(সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্থ হবে । তার পর তিনি দু’আ করলেন : ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার (মুহাজির) সাহাবীগণের হিজরতকে বহাল রাখুন । আর তাদের পেছনে ফিরে যেতে দেবেন না । কিন্তু সা’দ ইব্ন খাওলাহ (রাঃ) এর দর্ভাগ্য (কারণ তিনি ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও বিদায় হাজ্জের সময় মক্কায় মারা যান) সা’দ (রাঃ) বলেন : তিনি মক্কাতে ওফাতের কারণে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করেছেন ।

হাদিস নং: ৫৯৩৪ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৫৭/ বার্ধক্যের অসহায়ত্ব এবং দুনিয়ার ফিতনা আর জাহান্নামের আগুন থেকে আশ্রয় চাওয়া -
৫৯৩৪/৬৯: ইসহাক ইব্ন ইব্রাহিম (রঃ) ……… সা’দ ইব্ন আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) যে সব বাক্য দিয়ে আল্লাহর আশ্রয় চাইতেন, সে সব দ্বারা তোমরাও আশ্রয় চাও । তিনি বলতেন : “ইয়া আল্লাহ! আমি কাপুরূষতা থেকে, আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই । আমি বয়সের অসহায়ত্ব থেকে আপনার আশ্রয় চাই । আর আমি দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে আপনার আশ্রয় চাই” ।

হাদিস নং: ৫৯৩৫ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৫৭/
৫৯৩৫/৭০: ইয়াহ্ইয়া ইব্ন মূসা (রঃ) ……… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নবী (সাঃ) দু’আ করতেন : হে আল্লাহ! আমি অলসতা, অতি বার্ধক্য, ঋণ আর পাপ থেকে আপনার আশ্রয় চাই । ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই জাহান্নামের আযাব, জাহান্নামের ফিতনা, কবরের আযাব, প্রাচুর্যের ফিতনার কুফল, দারিদ্রের ফিতনার কুফল এবং মাসীহ দাজ্জালেরফিতনা থেকে । ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার সমুদয় গুনাহ বর‌ফ ও শীতল পানি দিয়ে ধুয়ে দিন । আমার অন্তর যাবতীয় পাপ থেকে পরিচ্ছন্ন করূন, যেভাবে সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন করা হয় । আমার ও আমার গুনাহ্ সমূহের মধ্যে এতটা ব্যবধান করে দিন যতটা ব্যবধান আপনি পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যে করেছেন ।

হাদিস নং: ৫৯৩৬ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৫৮/ প্রাচুর্যের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাওয়া -
৫৯৩৬/৭১: মূসা ইব্ন ইসমাঈল (রঃ) ……… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নবী (সাঃ) আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে বলতেন : “ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই জাহান্নামের ফিতনা থেকে, জাহান্নামের আযাব থেকে । আমি আরও আশ্রয় চাই কবরের ফিতনা থেকে এবং আপনার আশ্রয় চাই কবরের আযাব থেকে । আমি আরও আশ্রয় চাই প্রাচুর্যের ফিতনা থেকে, আর আমি আশ্রয় চাই অভাবের ফিতনা থেকে । আমি আরও আশ্রয় চাই মাসীহ্ দাজ্জালের ফিতনা থেকে” ।

হাদিস নং: ৫৯৩৭ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৫৯/ দারিদ্রের সংকট থেকে পানাহ চাওয়া -
৫৯৩৭/৭২: মুহাম্মদ (রঃ) ……… আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নবী (সাঃ) এ দু’আ পাঠ করতেন : “ইয়া আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে দোযখের সংকট, দোযখের আযাব, কবরের সংকট, কবরের আযাব, প্রাচুর্যের ফিতনা ও অভাবের ফিতনা থেকে পানাহ চাই । ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার নিকট মাসীহ্ দাজ্জালের ফিতনার অনিষ্ট থেকে পানাহ চাই । ইয়া আল্লাহ! আমার অন্তরকে বরফ ও শীতল পানি দিয়ে ধুয়ে দিন । আর আমার অন্তর গুনাহ্ থেকে এমন ভাবে সাফ করে দিন, যেভাবে আপনি সাদা কাপড়ের ময়লা পরিস্কার করে থাকেন এবং আমাকে আমার গুনাহ্ থেকে এতটা দূরে সরিয়ে রাখুন, পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তকে পশ্চিম প্রান্ত থেকে যত দূরে রেখেছেন । ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার নিকট পানাহ চাই অলসতা, গুনাহ এবং ঋণ থেকে” ।

হাদিস নং: ৫৯৩৮ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৬০/ বরকতসহ মালের প্রাচুর্যের জন্য দু‘আ করা -
৫৯৩৮/৭৩: মুহাম্মদ ইব্ন বাশ্শার (রঃ) ……… উম্মে সুলায়ম (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বললেন : ইয়া রাসূলাল্লাহ! আনাস আপনার খাদিম, আপনি আল্লাহর নিকট তার জন্য দু’আ করূন । তিনি দু’আ করলেন : ইয়া আল্লাহ! আপনি তার মাল ও সন্তান বাড়িয়ে দিন, আর আপনি তাকে যা কিছু দিয়েছেন তাতে বরকত দান করূন । হিশাম ইব্ন যায়দ (রঃ) বলেন, আমি আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) কে অনুরূপ বর্ণনা করতে শুনেছি ।

হাদিস নং: ৫৯৩৯ (দু‘আ অধ্যায়)

পরিচ্ছেদ : ২৬৬০/
৫৯৩৯/৭৪: মুহাম্মদ আবূ যায়েদ সাঈদ ইব্ন রাবী (রঃ) ……… আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, উম্মে সুলায়ম বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আনাস আপনার খাদিম । তখন তিনি দু’আ করলেন : ইয়া আল্লাহ! আপনি তার মাল ও সন্তান বাড়িয়ে দিন এবং আপনি তাকে যা দিয়েছেন তাতে বরকত দিন ।