বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৪

হাদিস নং: ৬৫৫১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫১/৪১: আমর ইব্ন আলী (রহঃ) . . . . . হযরত জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম । আমি আমাকে একটা স্বর্ণের প্রাসাদের নিকট দেখতে পেলাম । তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কার? তারা বলল, কুরাইশের জনৈক ব্যাক্তির । হে ইবনুল খাত্তাব! এ প্রাসাদে ঢুকতে আমাকে কিছুই বাধা দিচ্ছিল না । কেবল তোমার আত্মমর্যাদাবোধ, যা আমার জানা ছিল । হযরত উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনার উপরেও কি আমি আত্নমর্যাদাবোধ প্রদর্শন করব ?

হাদিস নং: ৬৫৫২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫২/৪২: ইয়াহইয়া ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, এক সময় আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর নিকট বসা ছিলাম । তখন তিনি বললেনঃ আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । আমি আমাকে জান্নাতে দেখতে পেলাম এবং (দেখতে পেলাম) যে একজন মহিলা একটি প্রাসাদের পাশে ওযু করছে । আমি বললামঃ এ প্রাসাদটি কার? তারা বলল উমর (রাঃ) এর । তখন তার আত্মমর্যাদাবোধের কথা স্বরণ করে আমি ফিরে এলাম । তা শুনে হযরত উমর (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেনঃ আমার পিতা-মাতা আপনার ওপর কুরবান হোক । হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনার উপরেও কি আমি আত্মমর্যাদাবোধ দেখাব ?

হাদিস নং: ৬৫৫৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫৩/৪৩: আবূল ইয়ামান (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রায় ছিলাম । তখন আমি আমাকে কা‘বা গৃহ তাওয়াফ রত অবস্হায় দেখতে পেলাম । এমন সময় সোজা চুল বিশিষ্ট একজন পুরুষকে দু-জন পুরুষের মাঝখানে দেখলাম, যার মাথা থেকে পানি ঝরে পড়ছিল । আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইনি কে? তারা বলল, ইব্ন মারিয়াম । এরপর আমি ফিরে আসতে লাগলাম । এ সময় একজন লাল বর্ণের মোটাসোটা, কৌকড়ান চুল বিশিষ্ট, ডান চোখ কানা ব্যাক্তিকে দেখলাম । তার চোখটি যেন ভাসমান আঙ্গুর । আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যাক্তি কে? তারা বলল, এ হচ্ছে দাজ্জাল । তার সাথে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ ব্যাক্তি হল ইব্ন কাতান । আর ইব্ন কাতান হল বনূ মুসতালিক গোত্রের থুযাআ বংশের একজন লোক ।

হাদিস নং: ৬৫৫৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫৪/৪৪: ইয়াহইয়া ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে, আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । আমি দেখলাম, দুধের একটা পেয়ালা আমাকে দেওয়া হল । তা থেকে আমি (এত বেশি) পান করলাম যে, আমাতে তৃপ্তির চিহ্ন প্রবাহিত হচ্ছিল । অতঃপর (অবশিষ্টাংশ)উমর কে দিলাম । সাহাবাগণ বললেনঃ এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি প্রদান করলেন হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)? তিনি বললেনঃ ইল্‌ম ।

হাদিস নং: ৬৫৫৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫৫/৪৫: উবায়দুল্লাহ্ ইব্ন সাঈদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর বেশ কজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর যুগে স্বপ্ন দেখতেন । অতঃপর তারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে তা বর্ণনা করতেন । আর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর ব্যাখ্যা দিতেন যা আল্লাহ্ ইচ্ছা করতেন । আমি তখন অল্প বয়সী যুবক । আর বিয়ের আগে মসজিদই ছিলো আমার ঘর । আমি মনে মনে নিজেকে সম্বোধন করে বললাম, যদি তোমার মধ্যে কোন কল্যাণ থাকত তাহলে তুমি তাদের ন্যায় স্বপ্ন দেখতে । আমি এক রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে বললাম, হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন যে, আমার মধ্যে কোন কল্যাণ নিহিত আছে তাহলে আমাকে কোন একটি স্বপ্ন দেখান । আমি ঐ অবস্থায়ই (ঘুমিয়ে) রইলাম । দেখলাম আমার কাছে দু-জন ফেরেশতা এসেছেন । তাদের প্রত্যেকের হাতেই লোহার একটি করে হাতুড়ি । তারা আমাকে নিয়ে (জাহান্নামের দিকে) অগ্রসর হচ্ছেন । আর আমি তাদের উভয়ের মাঝখানে থেকে আল্লাহ্ এর কাছে দোয়া করছি, হে আল্লাহ্! আমি জাহান্নাম থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি । এরপর আমাকে দেখান হল যে, একজন ফেরেশতা আমার কাছে এসেছেন । তাঁর হাতে লোহার একটি হাতুড়ি । সে আমাকে বলল, তোমার অবশ্যই কোন ভয় নেই । তুমি খুবই ভাল লোক, যদি বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে । তাঁরা আমাকে নিয়ে চলল, অবশেষে তারা আমাকে জাহান্নামের (তীরে এনে) দাঁড় করাল, (যা দেখতে) কুপের ন্যায় গোলাকার । আর কূপের ন্যায় এরও রয়েছে অনেক শিং । আর দু-শিং-এর মাঝখানে একজন ফেরেশতা, যার হাতে লোহার একটি হাতুড়ি । আর আমি এতে কিছু লোককে (জাহান্নামে) শিকল পরিহিত দেখলাম । তাদের মাথা ছিল নিচের দিকে । কুরাইশের কতক ব্যাক্তিকে তথায় আমি চিনে ফেললাম । অতঃপর তারা আমাকে ডানদিকে নিয়ে ফিরল । এ ঘটনা (স্বপ্ন) আমি হযরত হাফসা (রাঃ)-এর নিকট বর্ণনা করলাম । আর হযরত হাফসা (রাঃ) তা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর নিকট বর্ণনা করলেনঃ তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ আবদুল্লাহ্ তো সকর্মপরায়ন লোক । নাফি (রহঃ) বলেনঃ এরপর থেকে তিনি সর্বদা বেশি করে (নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন ।

হাদিস নং: ৬৫৫৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫৬/৪৬: আবদুল্লাহ্ ইব্ন মুহাম্মাদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ আমি নাবী (সাঃ) এর যুগে অবিবাহিত যুবক ছিলাম । আমি মসজিদেই রাত্রি যাপন করতাম । আর যারাই স্বপ্নে কিছু দেখত তারা তা নাবী (সাঃ) -এর কাছে বর্ণনা করত । আমি বললাম, হে আল্লাহ! যদি তোমার নিকট আমার জন্য কোন কল্যাণ নিহিত থাকে, তাহলে আমাকে কোন স্বপ্ন দেখাও, যাতে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমার এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করেন । আমি নিদ্রা গেলাম, তখন দেখতে পেলাম যে দুজন ফেরেশতা আমার কাছে এসে আমাকে নিয়ে চলল, এরপর তাদের সাথে অপর একজন ফেরেশতার সাক্ষা ঘটল । সে আমাকে বলল, তোমার কোন ভয়ের কারণ নেই । তুমি তো একজন সকর্মপরায়ণ লোক । এরপর তারা আমাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে চলল, এটা যেন কুপের ন্যায় গোলাকার নির্মিত । আর এর মধ্যে বেশ কিছু লোক রয়েছে । এদের কতককে আমি চিনতে পারলাম । এরপর তারা আমাকে ডানদিকে নিয়ে চলল । যখন সকাল হল, আমি হযরত হাফসা (রাঃ)-এর নিকট সব ঘটনা উল্লেখ করলাম । পরে হযরত হাফসা (রাঃ) বললেনঃ যে, তিনি তা নাবী (সাঃ) -এর কাছে বর্ণনা করেছেন । আর তিনি বলেছেনঃ আবদুল্লাহ্ সকর্মপরায়ণ লোক । (তিনি আরও বলেছেনঃ)যদি সে রাতে বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করত । যুহরী (রহঃ) বলেন, এরপর থেকে হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) রাতে বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন ।

হাদিস নং: ৬৫৫৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫৭/৪৭: কুতায়বা ইব্ন সাঈদ (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । দেখলাম, আমার কাছে দুধের একটা পেয়ালা আনা হল । আমি তা থেকে পান করলাম । এরপর আমার অবশিষ্টাংশ উমর ইব্ন খাত্তাবকে প্রদান করলাম । সাহাবাগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)! আপনি এর ব্যাখ্যা কি প্রদান করেছেন । তিনি বললেনঃ . . . ইল্‌ম ।

হাদিস নং: ৬৫৫৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫৮/৪৮: সাঈদ ইব্ন মুহাম্মাদ (রহঃ) . . . . . উবায়দুল্লাহ্ ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যে সকল স্বপ্নের উল্লেখ করেছেন আমি হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন আব্বাস (রাঃ)-কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম । তখন হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমার কাছে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম, আমাকে দেখানো হলো যে আমার হাত দুটিতে স্বর্ণের দুটি চুড়ি রাখা হয়েছে । আমি সে দুটি কেটে ফেললাম এবং অপছন্দ করলাম । অতঃপর আমাকে অনুমতি প্রদান করা হল, আমি উভয়টিকে ফুঁ দিলাম, ফলে উভয়টি উড়ে গেল । আমি চুড়ি দুটির এ ব্যাখ্যা প্রদান করলাম যে, দু-জন মিথ্যা নবুয়তের দাবিদার বের হরে । উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ এদের একজন হল, আল আনসী যাকে ইয়ামানে হযরত ফায়রুয (রাঃ) কতল করেছেন । আর অপরজন হল মূসায়লিমা ।

হাদিস নং: ৬৫৫৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৫৯/৪৯: মুহাম্মাদ ইব্ন আলা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখি যে আমি মক্কা থেকে এমন এক স্থানের দিকে হিজরত করছি যেখানে খেজুর বৃক্ষ রয়েছে । তখন আমার ধারণা হল, সেই স্হানটি ‘ইয়ামামা’ অথবা ‘হাজার’ হবে । অখচ সে স্থানটি হল মদিনা তথা ইয়াসরিব । আর আমি (স্বপ্নে) সেখানে একটি গরু দেখলাম । আল্লাহর কসম! এটা কল্যাণকরই । গরুর ব্যাখ্যা হল উহুদের যূদ্ধে (শাহাদাত প্রাপ্ত) মু‘মিনগণ । আর কল্যাণের ব্যাখ্যা হল এটাই, যে কল্যাণ আল্লাহ্ আমাদের দিয়েছেন এবং সত্যের বিনিময় যা আল্লাহ্ বদর যূদ্ধের পর আমাদেরকে প্রদান করেছেন ।

হাদিস নং: ৬৫৬০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬০/৫০: ইসহাক ইব্ন ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমরা সর্বশেষ এবং সর্ব প্রথম । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আরও বলেছেনঃ একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম । দেখলাম আমাকে ভূ-পৃষ্ঠের ভাণ্ডার সমূহ দেওয়া হয়েছে । আর আমার হাতে স্বর্ণের দুটি চুড়ি রাখা হয়, যা আমার কাছে কষ্টকর মনে হল । আর আমাকে চিন্তায় ফেলে দিল । তখন আমাকে নির্দেশ করা হল যেন আমি চুড়ি দু‘টিতে ফুঁ দেই । তাই আমি উভয়টিভে ফুঁ দিলাম (চুড়ি দুটি উড়ে গেল) । আমি চুড়ি দুটির ব্যাখ্যা এভাবে দিলাম যে, (নবুয়তের) দু‘জন মিথ্যা দাবিদার রয়েছে, যাদের মাঝখানে আমি আছি । সানআর বাসিন্দা ও ইয়ামামার বাসিন্দা ।

হাদিস নং: ৬৫৬১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬১/৫১: ইসমাঈল ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . সালিমের পিতা হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমি দেখেছি যেন এলোমেলো কেশ বিশিষ্ট একজন কালো মাহিলা মদিনা থেকে বের হয়ে মাহইয়াআ নামক স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আর এটিকে জুহফা বলা হয় । আমি এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা এরূপ প্রদান করলাম যে, মদিনার মহামারী তথায় স্হানান্তরিত হল ।

হাদিস নং: ৬৫৬২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬২/৫২: মুহাম্মাদ ইব্ন আবূ বকর মুকাদ্দামী (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি মদিনা সম্পর্কে নাবী (সাঃ) -এর স্বপ্নের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন । তিনি বলেছেনঃ আমি দেখেছি এলোমেলো চুল বিশিষ্ট একজন কালো মহিলা মদিনা থেকে বের হয়েছে । অবশেষে মাহইয়াআ নামক স্হানে অবস্হান নিয়েছে । আমি এর ব্যাখ্যা এরূপ প্রদান করলাম যে, মদিনার মহামারী মাহইয়াআ তথা জুহফা নামক ন্হানে স্থানান্তরিত হল ।

হাদিস নং: ৬৫৬৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬৩/৫৩: ইবরাহীম ইব্ন মুনযির (রহঃ) . . . . . সালিমের পিতা হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখেছি । এলোমেলো চুল বিশিষ্ট একজন কালো মহিলা মদিনা থেকে বের হয়ে মাহইয়াআ তথা জুহফা নামক স্থানে গিয়ে থেমেছে । আমি এর ব্যাখ্যা এরূপ দিলাম যে, মদিনার মহামারী তথায় স্হানান্তরিত হল ।

হাদিস নং: ৬৫৬৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬৪/৫৪: মুহাম্মাদ ইব্ন আলা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি নাবী (সাঃ) এর স্বপ্ন বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, তিনি বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম একটা তরবারী নাড়াচাড়া করছি । আর এর মধ্যভাগ ভেঙ্গে গেল । এর ব্যাখ্যা হল বিপদ, যা উহুদের যুদ্ধে মু‘মিনদের ভাগ্যে ঘটেছে । পুনরায় আমি তরবারীটি নাড়লাম । এতে তরবারীটি পূর্ববর্তী অবস্হা থেকে সুন্দর অবস্থায় ফিরে এল । এর ব্যাখ্যা হল আল্লাহ্ এর দেওয়া বিজয় ও মু‘মিনদের ঐক্য ।

হাদিস নং: ৬৫৬৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬৫/৫৫: আলী ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি এমন স্বপ্ন দেখার ভান করল যা সে দেখেনি । তাকে দুটি যবের দানায় গিট লাগানোর জন্য বাধ্য করা হবে । অথচ সে তা কখনও পারবে না । যে কেউ কোন এক দলের কথার দিকে কান লাগাল । অথচ তারা এটা পছন্দ করে না অথবা বলেছেন - অথচ তারা তার থেকে পলায়নপর । কিয়ামতের দিন তার উভয় কানে সীসা ঢেলে দেওয়া হবে । আর যে কেউ কোন প্রাণীর ছবি আঁকে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে এবং তাতে প্রাণ ফুঁকে দেওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে । কিন্তু সে প্রাণ ফুঁকতে পারবে না । সুফয়ান বলেছেন, আইউব এই হাদীসটি আমাদেরকে মওসুল/মরসাল রূপে বর্ণনা করেছেন ।
কুতায়বা (রহঃ) বলেন, আবূ আওয়ানা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন, যে ব্যাক্তি নিজের স্বপ্ন মিথ্যা বর্ণনা করে . . . . .।
শু’বা (রহঃ) হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন, যে কেউ ছবি আঁকে . . . . যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ননা করে . . . . যে কেউ কান লাগায় . . . . ।

হাদিস নং: ৬৫৬৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬৬/৫৬: ইসহাক (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । (তিনি বলেন) যে কেউ কান লাগাবে . . . . যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করবে . . . . যে কেউ ছবি আঁকবে . . . . অবশিষ্ট হাদীস অনুরূপ বর্ণনা করেছেন . . . . । হিশাম (রহঃ) ইকরামা থেকে হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) সুত্রে খালিদ এর অনুসরণ করেছেন ।

হাদিস নং: ৬৫৬৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬৭/৫৭: আলী ইব্ন মুসলিম (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা হল আপন চক্ষুকে এমন কিছু দেখার (দাবি করা) যা চক্ষুদ্বয় দেখতে পায়নি ।

হাদিস নং: ৬৫৬৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬৮/৫৮: সাঈদ ইব্ন রাবী (রহঃ) . . . . . আবূ সালামা (রহঃ) থেকে বর্নিত । তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত । অবশেষে আমি হযরত আবূ কাতাদা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত । অবশেষে আমি নাবী (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে । তাই যখন কেউ পছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন এমন ব্যাক্তির কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে । আর যখন অপছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন যেন সে এর ক্ষতি ও শয়তানের ক্ষতি থেকে আল্লাহ্ এর আশ্রয় চায় এবং তিনবার থু থু ফেলে আর সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে । তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না ।

হাদিস নং: ৬৫৬৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৬৯/৫৯: ইবরাহিম ইব্ন হামযা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত । তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছেন, যখন কেউ এমন কোন স্বপ্ন দেখে যা সে পছন্দ করে, তবে মনে করবে যে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে । তখন সে যেন এজন্য আল্লাহ্ এর শোকর আদায় করে এবং তা বর্ননা করে । আর যখন এর বিপরীত কোন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, মনে করবে তা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়েছে । তখন সে যেন এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ এর আশ্রয় চায় এবং তা কারো কাছে বর্ননা না করে । তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না ।

হাদিস নং: ৬৫৭০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৭০/৬০: ইয়াহইয়া ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে এসে বলল, আমি গত রাতে স্বপ্নে একখন্ড মেঘ দেখতে পেলাম যা থেকে ঘি ও মধু ঝরছে । আমি লোকদেরকে দেখলাম তারা তা থেকে তুলে নিচ্ছে । কেউ বেশি পরিমাণ আবার কেউ কম পরিমান । আর দেখলাম, একটা রশি যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত মিলে রয়েছে । আমি দেখলাম আপনি তা ধরে উপরে চড়ছেন । তারপর অপর এক ব্যাক্তি তা ধরঁল ও এর সাহায্যে উপরে উঠে গেল । এরপর আরেক জন তা ধরে এর দ্বারা উপরে উঠে গেল । এরপর আরেক জন তা ধরল । কিন্তু তা ছিঁড়ে গেল । পুনরায় তা জোড়া লেগে গেল । তখন হযরত আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহা এর রাসূল (সাঃ)! আপনার প্রতি আমার পিতা কুরবান হোক! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করার সুযোগ দিবেন । নাবী (সাঃ) বললেনঃ তুমি এর ব্যাখ্যা প্রদান কর । হযরত আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ মেঘের ব্যাখ্যা হল ইসলাম । আর তার থেকে যে ঘি ও মধু ঝরছে তা হল কুরআন যার সূমিষ্টতা ঝরছে । কুরআন থেকে কেউ বেশি আহরণ করছে আর কেউ কম । আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত ঝূলন্ত রশিটি হচ্ছে ঐ হক (মহাসত্য) যার উপর আপনি প্রতিষ্টিত রয়েছেন । আপনি তা ধরবেন, আর আল্লাহ্ আপনাকে উচ্চে আরোহন করাঁবেন । আপনার পরে আরেক জন তা ধরবে । ফলে এর দ্বারা সে উচ্চে আরোহণ করবে । অতঃপর আরেকজন তা ধরে এর মাধ্যমে সে উচ্চে আরোহণ করবে । এরপর আরেকজন তা ধরবে, কিন্তু তা ছিঁড়ে যাবে । পূনরায় তা জোড়া লেগে যাবে, ফলে সে এর দ্বারা উচ্চে আরোহণ করবে । হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক । আমাকে বলুন, আমি ঠিক বলেছি, না ভুল? নাবী (সাঃ) বললেনঃ কিছু তো ঠিক বলেছ । আর কিছু ভূল বলেছ । তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিবেন যা আমি ভুল করেছি । নাবী (সাঃ) বললেনঃ কসম দিও না ।

হাদিস নং: ৬৫৭১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)

৬৫৭১/৬১: মুয়াম্মাল ইব্ন হিশাম আবূ হিশাম (রহঃ) . . . . . হযরত সামুরা ইব্ন জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) প্রায়ই তাঁর সাহাবীদেরকে বলতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? রাবী বলেন, যাদের বেলায় আল্লাহ্ এর ইচ্ছা, তারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে স্বপ্ন বর্ণনা করত । তিনি একদিন সকালে আমাদেরকে বললেনঃ গত রাতে আমার কাছে দু‘জন আগন্তুক আসল । তারা আমাকে উঠাল । আর আমাকে বলল, চলুন । আমি তাদের সাথে চলতে লাগলাম । আমরা কাত হয়ে শায়িত এক ব্যাক্তির কাছে পৌছলাম । দেখলাম, অপর এক ব্যাক্তি তার নিকট পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে । সে তার মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে । ফলে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে । আর পাথর নিচে গিয়ে পতিত হচ্ছে । এরপর অবার সে পাথরটি অনুসরণ করে তা পুনরায় নিয়ে আসছে । ফিরে আসতে না আসতেই লোকটির মাথা পুর্বের ন্যায় পূনরায় ভাল হয়ে যায় । ফিরে এসে আবার অনুরূপ আচরণ করে, যা পূর্বে প্রথমবার করেছিল । তিনি বলেনঃ আমি তাদের (সাথীদ্বয়কে) বললাম, সুবহান্নাল্লাহ! এরা কারা? তিনি বললেনঃ তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন । তিনি বলেনঃ আমরা চললাম, এরপর আমরা চি হয়ে শায়িত এক ব্যাক্তির কাছে পৌছলাম । এখানেও দেখলাম, তার নিকট এক ব্যাক্তি লোহার আঁকড়া নিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে । আর সে তার চেহারার একদিকে এসে এটা দ্বারা মুখমন্ডলের একদিক মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরুপভাবে নাসারন্দ্র, চোখ ও মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে । আওফ (রহঃ) বলেনঃ আবূ রাজা (রহঃ) কোন কোন সময় ‘ইয়ুশারশিরূ’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইয়াশুককু’ শব্দ বলতেন । এরপর ঐ লোকটি শায়িত ব্যাক্তির অপরদিকে যায় এবং প্রথম দিকের সাথে যেরুপ আচরণ করেছে অনুরুপ আচরণই অপরদিকের সাথেও করে । ঐ দিক হতে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি পুর্বের ন্যায় ভাল হয়ে যায় । তারপর আবার প্রথমবারের ন্যায় আচরণ করে । তিনি বলেনঃ আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ্! এরা কারা? তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন । আমরা চললাম এবং চুলা সদৃশ একটি গর্তের কাছে পৌছলাম । রাবী বলেনঃ আমার মনে হয় যেন তিনি বলেছিলেন, আর তথায় শোরগোলের শব্দ ছিল । তিনি বলেনঃ আমরা তাতে উকি মারলাম, দেখলাম তাতে বেশ কিছু উলং নারী ও পুরুষ রয়েছে । আর নিচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে । যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করে, তখনই তারা উচ্চস্বরে চিকার করে উঠে । তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে বললাম, এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন , চলুন । তিনি বলেনঃ আমরা চললাম এবং একটি নদীর (তীরে) গিয়ে পৌছলাম । রাবী বলেনঃ আমার যতদূর মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, নদীটি ছিল রক্তের মত লাল । আর দেখলাম, এই নদীতে এক ব্যাক্তি সাঁতার কাটছে । আর নদীর তীরে অপর এক ব্যাক্তি রয়েছে এবং সে তার কাছে অনেকগুলো পাথর একত্রিত করে রেখেছে । আর ঐ সাঁতারকারী ব্যাক্তি বেশ কিছুক্ষন সাঁতার কাটার পর সে ব্যাক্তির কাছে এসে পৌছে, যে নিজের নিকট পাথর একত্রিত করে রেখেছে । তথায় এসে সে তার মুখ খুলে দেয় আর ঐ ব্যাক্তিতার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয় । এরপর সে চলে যায়, সাঁতার কাটতে থাকে, আবার তার কাছে ফিরে আসে, যখনই সে তার কাছে ফিরে আসে তখনই সে তার মুখ খুলে দেয়, আর ঐ ব্যাক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয় । তিনি বলেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তারা বলল, চলুন, চলুন । তিনি বলেনঃ আমরা চললাম এবং এমন একজন কুশ্রী ব্যাক্তির কাছে এসে পৌছলাম, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধীক কুশ্রী বলে মনে হয় । আর দেখলাম, তার নিকট রয়েছে আগুন, যা সে জালাচ্ছে ও তার চতূর্দিকে দৌড়াচ্ছে । তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম! ঐ লোকটি কে? তারা বলল, চলুন, চলুন । আমরা চললাম এবং একটা সজীব শ্যামল বাগানে উপনীত হলাম, যেখানে বসন্তের হরেক রকম ফুলের কলি রয়েছে । আর বাগানের মাঝে আসমানের থেকে অধিক উচু দীর্ঘকায় একজন পূরুষ রয়েছে যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না । এমনিভাবে তার চতুস্পার্শে এত বিপূল সংখ্যক বালক-বালিকা দেখলাম যে, এত বেশি আর কখনো আমি দেখিনি । আমি তাদেরকে বললাম, উনি কে? এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন । আমরা চললাম এবং একটা বিরাট বাগানে গিয়ে পৌছলাম । এমন বড় এবং সুন্দর বাগান আমি আর কখনো দেখিনি । তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এর ওপরে চড়ুন । আমরা ওপরে চড়লাম । শেষ পর্যন্ত সোনা-রূপার ইটের তৈরি একটি শহরে গিয়ে আমরা উপনীত হলাম । আমরা শহরের দরজায় পৌছলাম এবং দরজা খুলতে বললাম । আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল, আমরা তাতে প্রবেশ করলাম । তখন তথায় আমাদের সাথে এমন কিছু লোক সাক্ষা করল যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুন্দর, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক সুন্দর মনে হয় । আর শরীরের অর্ধেক এমনই কুশ্রী ছিল । যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক কুশ্রী মনে হয় । তিনি বলেনঃ সাথীদ্বয় ওদেরকে বলল, যাও ঐ নদীতে গিয়ে নেমে পড়। আর সেটা ছিল সুপ্রশস্ত প্রবাহমান নদী, যার পানি ছিল দুধের মত সাদা । ওরা তাতে গিয়ে নেমে পড়ল । অতপর এরা আমাদের কাছে ফিরে এল, দেখা গেল তাদের এ কুশ্রীতা দূর হয়ে গিয়েছে এবং তারা খুবই সূন্দর আকৃতির হয়ে গিয়েছে । তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এটা জান্নাতে আদন এবং এটা আপনার বাসস্হান । তিনি বলেনঃ আমি বেশ উপরের দিকে তাকালাম, দেখলাম ধবধবে সাদা মেঘের ন্যায় একটি প্রাসাদ রয়েছে । তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এটা আপনার বাসগূহ । তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে বললাম, আল্লাহ তোমাদের মাঝে বরকত দিন! আমাকে ছেড়ে দাও । আমি এতে প্রবেশ করি । তারা বলল, আপনি অবশ্য এতে প্রবেশ করলেন । তবে এখন নয় । তিনি বলেন, আমি এ রাতে অনেক বিস্ময়কর ব্যাপার দেখতে পেলাম- এগুলোর তাপর্য কি? তারা আমাকে বলল- আচ্ছা! আমরা আপনাকে বলে দিচ্ছি । ঐ যে প্রথম ব্যাক্তিকে যার কাছে আপনি পৌছেছিলেন, যার মাথা পাথর দিয়ে চুর্ন-বিচুর্ণ করা হচ্ছিল, সে হল ঐ ব্যাক্তি যে কুরআন গ্রহন করে তা ছেড়ে দিয়েছে । আর ফরয সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকে । আর ঐ ব্যাক্তি যার কাছে গিয়ে দেখেছেন যে, তার মুখের এক ভাগ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত এমনিভাবে নাসারন্ধ্রে ও চোখ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলা হচ্ছিল । সে হল ঐ ব্যাক্তি, যে সকালে আপন ঘর থেকে বের হয়ে এমন কোন মিথ্যা বলে যা চতূর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে । আর এ সকল উলঙ্গ নারী-পূরুষ যারা চুলা সদৃশ গর্তের অভ্যন্তরে রয়েছে তারা হল ব্যাভিচারী ও ব্যাভিচারিণীর দল । আর ঐ ব্যাক্তি, যার কাছে পৌছে দেখেছিলেন যে, সে নঁদীতে সাতার কাটছে ও তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে সে হল সুদখোর । আর ঐ কুশ্রী ব্যাক্তি, যে আগুনের কাছে ছিল এবং আগুন জ্বালাচ্ছিল আর সে এর চতূর্পার্শে দৌড়াচ্ছিল, সে হল জাহান্নামের দারোগা, মালিক ফেরেশতা । আর ঐ দীর্ঘকায় ব্যাক্তি যিনি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন, ইবরাহীম (আঃ) । আর তাঁর আশেপাশের বালক-বালিকারা হলো ঐসব শিশু, যারা ফিরাত (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যু বরন করেছে। তিনি বলেনঃ তখন কিছু সংখ্যক মুসলমান জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও কি? তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ মূশরিকদের শিশু সন্তানরাও । আর ঐসব লোক যাদের অর্ধেকাংশ অতি সুন্দর ও অর্ধেকাংশ অতি কুশ্রী । তারা হল ঐ সম্প্রদায় যারা স-অস উভয় প্রকারের কাজ মিশ্রিতভাবে করেছে । আল্লাহ্ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন ।