৫৫৪৯/০৫: সা‘ঈদ ইব্ন আবূ মারইয়াম (রঃ) ……… হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত
। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনজন লোক হেঁটে চলছিল । তাদের উপর
বৃষ্টি শুরূ হলে তারা এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নেয় । এমন সময় পাহাড় থেকে একটি পাথর তাদের
গুহার মুখের উপর গড়িয়ে পড়ে এবং মুখ বন্ধ করে ফেলে । তাদের একজন অপরজনকে বললঃ তোমরা
তোমাদের কৃত আমলের প্রতি লক্ষ্য করো, যে নেক আমল তোমরা আল্লাহর জন্য করেছ, তার ওসিলায়
আল্লাহর নিকট দু‘আ করো । হয়তো তিনি এটি সরিয়ে দেবেন । তখন তাদের একজন বললঃ ইয়া আল্লাহ!
আমার বয়োবৃদ্ধ মাতাপিতা ছিল এবং ছোট ছোট শিশু ছিল । আমি তাদের (জীবিকার) জন্য মাঠে
পশু চরাতাম । যখন সন্ধ্যায় ফিরতাম, তখন দুধ দোহন করতাম এবং আমার সন্তানদের আগেই পিতামাতাকে
পান করতে দিতাম । একদিন পশুগুলো দূরে বনের মধ্যে চলে যায় । ফলে আমার ফিরতে রাত হয় ।
ফিরে দেখলাম তারা উভয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন । আমি যেমন দুধ দোহন করতাম, তেমনি দোহন করলাম
। তারপর দুধ নিয়ে এলাম এবং উভয়ের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম । ঘুম থেকে তাদের উভয়কে
জাগানো ভাল মনে করলাম না । আর তাদের আগে শিশুদের পান করানোও অপছন্দ করলাম । আর শিশুরা
আমার দু‘পায়ের কাছে কান্নাকাটি করছিল । তাদের ও আমার মাঝে এ অবস্থা চলতে থাকে । অবশেষে
ভোর হয়ে গেল । (ইয়া আল্লাহ) আপনি জানেন যে, আমি কেবল আপনার সন্তুষ্টির জন্যেই একাজ
করেছি । তাই আপনি আমাদের জন্য একটু ফাঁক করে দিন, যাতে আমরা আকাশ দেখতে পাই । তখন আল্লাহ
তাদের জন্য একটু ফাঁক করে দিলেন, যাতে তারা আকাশ দেখতে পায় । দ্বিতীয় ব্যক্তি বললঃ
ইয়া আল্লাহ! আমার একটি চাচাত বোর ছিল । আমি তাকে এতখানি ভালবাসতাম, যতখানি একজন পৃরূষ
কোন নারীকে ভালবাসতে পারে । আমি তাকে একান্তভাবে পেতে চাইলাম । সে অসম্মতি জানাল, যতক্ষণ
আমি তার কাছে একশ দীনার উপস্থিত না করি । আমি চেষ্টা করলাম এবং একশ স্বর্ণমুদ্রা জোগাড়
করলাম । এগুলো নিয়ে তার সাথে সাক্ষৎ করলাম । যখন আমি তার
দু‘পায়ের মধ্যে বসলাম, তখন সে বললঃ হে ‘আব্দুল্লাহ! আল্লাহকে ভয় করো; আমার কুমারিত্ব
নষ্ট করো না । তখন আমি উঠে গেলাম । ইয়া আল্লাহ! আপনি জানেন যে, কেবল আপনার সন্তুষ্টির
জন্যেই আমি তা করেছি । তাই অঅমাদের জন্য একটি ফাঁক করে দিন । তখন তাদের জন্যে আল্লাহ
আরও কিছু ফাঁক করে দিলেন । শেষের লোকটি বললঃ ইয়া আল্লাহ! আমি একজন মজদুরকে এক ‘‘ফারক’’ চাউলের বিণিময়ে কাজে নিয়োগ করেছিলাম
। সে তার কাজ শেষ করে এসে বলল, আমার প্রাপ্য দিয়ে দিন । আমি তার প্রাপ্য তার সামনে
উপস্থিত করলাম । কিন্তু সে তা ছেড়ে দিল ও প্রত্যাখ্যান করলো । তারপর তার প্রাপ্যটা
আমি ক্রমাগত কৃষিকাজে খাটাতে লাগলাম । তার দ্বারা অনেকগুলো গরূ ও রাখাল জমা করলাম ।
এরপর সে একদিন আমার কাছে এসে বললঃ আল্লাহকে ভয় কর, আমার উপর যুলূম করোনা এবং আমার প্রাপ্য
দিয়ে দাও । আমি বললামঃ ঐ গরূ ও রাখালের কাছে চলে যাও । সে বললঃ আল্লাহ কে ভয় কর, আমার
সাথে উপহাস করোনা । আমি বললামঃ তোমার সাথে আমি উপহাস করছিনা । তুমি ঐ গরূগুলো ও তার
রাখাল নিয়ে যাও । তারপর সে এগুলো নিয়ে চলে গেল । (ইয়া আল্লাহ) আপনি জানেন যে, তা আমি
আপনার সন্তুষ্টি লাভের জন্যেই করেছি, তাই আপনি অবশিষ্ট অংশ উম্মুক্ত করে দিন । তারপর
আল্লাহ তাদের জন্য তা উম্মুক্ত করে দিলেন ।
- ‘‘ফারক’’ সে যুগের একটি পরিমাপের পাত্র যা ১৬ রাতল এর সমান ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন