৬৯০৬/৩৯: মু’আয
ইব্ন ফাদালা (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের
দিন আল্লাহ ঈমানদারদের কে সমবেত করবেন তখন তারা উক্তি করবে আমরা আমাদের প্রতিপালকের
কাছে কোন সুপারিশ যদি নিয়ে যেতাম; তাহলে তিনি আমাদেরকে এই স্হানটি থেকে বের করে শান্তি
প্রদান করতেন । এরপর তারা আদম (আঃ) -এর কাছে গিয়ে বলবে, হে আদম (আঃ)! আপনি কি মানুষের
অবস্হা দেখছেন না? অথচ আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন । আপনাকে তিনি তাঁর ফেরেশতাগণ
দিয়ে সিজদা করিয়েছেন । আর আপনাকে সব জিনিসের নাম শিক্ষা দিয়েছেন সুতরাং আপনি আমাদের
প্রতিপালকের কাছে সুপারিশ করুন, যেন এই স্থানটি থেকে আমাদেরকে তিনি শান্তি প্রদান করেন
। আদম (আঃ) তখন বলবেন, এই কাজের জন্য আমি যোগ্য নই । এবং আদম (আঃ) তাদের কাছে স্বীয়
ভুলের কথা স্বরণ করবেন এবং বলবেন, তোমরা বরং নূহ (আঃ) -এর কাছে যাও । যেহেতু তিনিই
আল্লাহর প্রথম রাসুল । যাকে তিনি যযীন বাসীর কাছে প্রেরণ করেছিলেন । (এ কথা জেনে) তারা
নূহ (আঃ) -এর কাছে আসবে । তিনিও বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই । তিনি
তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্বরণ করে বলবেন, তোমরা বরং আল্লাহর খলীল (বর) ইবরাহীম (আঃ) -এর
কাছে যাও । তখন তারা ইবরাহীম (আঃ) -এর কাছে চলে আসবে । তিনিও তাদের কাছে স্বীয় কৃত
ত্রুটিসমুহর কথা উল্লেখ পূর্বক বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই । তোমরা
বরং মূসা (আঃ) -এর কাছে যাও । তিনি এমন একজন বান্দা যাকে আল্লাহ তাওরাত প্রদান করেছিলেন
এবং তাঁর সাথে তিনি প্রত্যক্ষ বাক্যালাপ করেছিলেন । তারা তখন মূসা (আঃ) -এর কাছে আসবে
। মূসা (আঃ) -ও বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই । তাদের কাছে তিনি স্বীয়
কৃত ক্রটির কথা উল্লেখ পূর্বক বলবেন, তোমরা বরং ঈসা (আঃ) -এর কাছে যাও । যিনি আল্লাহর
বান্দা, তাঁর রাসুল, কালেমা ও রুহ তখন তারা ঈসা (আঃ) -এর কাছে আসবে । তখন ঈসা (আঃ)
বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের যোগ্য নই । তোমরা বরং মুহাম্মাদ (সাঃ) -এর কাছে যাও ।
তিনি এমন একজন বান্দা, যার আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে । তাবা সবাই
আমার কাছে আসবে । আমি তখন আমার প্রতিপালকের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করব আমাকে এর অনুমতি
দেওয়া হবে । আমি আমার প্রতিপালককে যখন দেখতে পাব, তখনই আমি তাঁর সামনে সিজদায় পড়বো
। আল্লাহ তার মরজী অনুসারে যতক্ষন আমাকে সেভাবে রাখার রেখে দেবেন । তারপর আমাকে বলা
হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান । (যা বনার) বলুন । শোনা হবে । (যা চাওয়ার) চান, দেয়া
হবে । (যা সুপারিশ করার) করুন, গ্রহণ করা হবে । তখন আমার প্রতিপালকের শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজির
দ্বারা আমি তাঁর প্রশংসা করব । তারপর আমি শাফা আত করব । আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারণ
করে দেওয়া হবে । এরপর আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব । তারপর আমি ফিরে আসব
। যখন আমি আমার প্রতিপালককে দেখতে পাব তখন তাঁর জন্য সিজদায় পড়বো । আল্লাহর মরজী অনুসারে
যতক্ষন আমাকে এভাবে রাখতে চাইবেন রেখে দিবেন । তারপর আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ!
মাথা উঠান । বলুন, শোনা হবে । চান, দেওয়া হবে । সুপারিশ করুন, গ্রহণ করা হবে । তখন
আমার প্রতিপালকের শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজি দিয়ে আমি তাঁর প্রশংসা করব এবং সুপারিশ কবর
। তখনো আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারন করা হবে । আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে
দেব । তারপর আমি আবার ফিরে আসব । আমি এবারও আমার প্রতিপালককে দেখামাত্র সিজদায় পড়বো
। আল্লাহ তায়ালা তাঁর মরজী অনুসারে যতক্ষন ইচ্ছা আমাকে সেই অবস্হায় রেখে দিবেন । তারপর
বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান । বলুন, শোনা হবে । চান, দেয়া হবে । সুপারিশ করুন,
কবুল করা হবে । তখন আমার রব আমাকে শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজি দ্বারা প্রশংসা করে শাফাআত
করব । তখনও একটা সীমা বাতলানো থাকবে । আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব । এরপর
আমি তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে বলব, হে প্রতিপালক! এখন একমাত্র তারাই জাহান্নামে অবশিষ্ট
রয়েছে, যাদেরকে কুরআন আটক করে রেখে দিয়েছে এবং যাদের উপর স্থায়ীভাবে জাহান্নাম অবধারিত
হয়ে গিয়েছে । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- পড়েছে, অথচ তার
হৃদয়ে একটি যবের ওজন পরিমাণ কল্যাণ ঈমান আছে, তাকেও জাহান্নাম থেকে বের করা হবে । তারপর
বের করা হবে জাহান্নাম থেকে তাদেরকেও, যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে এবং তার হৃদয়ে
একটি গমের ওযন পরিমাণ কল্যান (ঈমান) আছে । (সর্বশেষে) জাহান্নাম থেকে তাকে বের করা
হবে, যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে এবং তার হৃদয়ে অণূ পরিমাণ মাত্র কল্যাণ
(ঈমান) আছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন