কুরআন শরীফ,বুখারী শরীফ,মুসলিম শরীফ,নাসায়ী শরীফ,আবু দাউদ শরীফ,তিরমিযী শরীফ,ইবনে মাজাহ শরীফ
সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০১৪
হাদিস নং: ৬৫১১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১১/০১: ইয়াহ্ইয়া
ইব্ন বুকায়র ও আবদুল্লাহ্ ইব্ন মুহাম্মাদ (রহঃ) . . . . . হযরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত
। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর ওহীর সূচনা হয় ঘুমের ঘোরে ভালো স্বপ্নের মাধ্যমে
। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন তা ভোরের আলোর ন্যায় উদ্ভাসিত হয়ে প্রতিফলিত হতো । তিনি হেরা
গুহায় গমন করে সেখানে বেশ কয়েক রাত ইবাদতে কাটিয়ে দিতেন এবং এজন্য খাদ্য সামগ্রী ও
সাথে নিয়ে যেতেন । এরপর হযরত খাদীজা (রাঃ) এর কাছে ফিরে আসতেন এবং তিনি তাকে অনুরূপ
খাদ্য সামগ্রী প্রস্তুত করে দিতেন । অবশেষে তাঁর কাছে সত্যের বাণী (ওহী) আসল । আর এ
সময় তিনি হেরা গুহায় ছিলেন । সেখানে ফেরেশতা এসে তাঁকে বলল, আপনি পড়ুন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেন, আমি বললামঃ আমি তো পাঠক নই । তখন তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে চাপ দিলেন
। এমনকি এতে আমার খুব কষ্ট হল । তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন, আপনি পড়ুন
। আমি বললাম, আমি পাঠক নই । তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে শক্ত করে চাপ দিলেন । এবারেও এতে
আমার খুব কষ্ট হল । অতঃপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, আপনি পড়ুন । আমি বললাম, আমি
তো পাঠক নই । এরপর তিনি তৃতীয়বার আমাকে শক্ত করে এমন চাপ দিলেন যে, এবারেও এতে আমার
খুব কষ্ট হল । তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালকের নামে
যিনি সৃষ্টি করেছেন যা সে জানত না (৯৪:১-৫) এ আয়াত পর্যন্ত ।
এরপর তিনি তা নিয়ে হযরত খাদীজা (রাঃ) এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলনে । আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও । আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও । ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন । অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল । এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজা (রাঃ)! আমার কি হল? এবং তাকে সমূহ ঘটনা জানালেন । আর বললেনঃ আমি আমার জীবন সম্পর্কে শংকাবোধ করছি । হযরত খাদীজা (রাঃ) তাকে বললেন, কখনই না । আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করূন । আল্লাহ্ এর কসম! আল্লাহ্ আপনাকে কখনই লাঞ্ছিত করবেন না । কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্য কথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানাদী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন । অতঃপর হযরত খাদীজা (রাঃ) তাঁকে নিয়ে চললেন । অতঃপর তাঁকে নিয়ে ওরাকা ইব্ন নাওফল ইব্ন আসা’দ ইব্ন আবদুল উয়াবা ইব্ন কুসাই এর কাছে এলেন । আর তিনি হযরত খাদীজা (রাঃ) এর চাচার পুত্র (চাচাত ভাই) এবং তার পিতার পক্ষ থেকে চাচাও ছিলেন । তিনি জাহিলিয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন । তিনি আরবী কিতাব লিখতেন । তিনি ইঞ্জিল আরবীতে ভাসান্তর করেছেন । যতখানি লেখা আল্লাহ্ এর মনযুর হত । তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যাক্তি । হযরত খাদীজা (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই! তোমার ভাতিজার কথা শুন । তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কি দেখেছ? রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে অবহিত করেলেন । তখন ওরাকা বললেন, এই তো আল্লাহ্ এর সেই নামুস (দূত) যাঁকে মূসা (আঃ) এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল । হায় আফসোস! যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতে পারতাম যে দিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ, তুমি যা নিয়ে এসেছ, এমন বস্তু নিয়ে কোন দিনই কেউ আসেনি যার সাথে শত্রুতা করা হয়নি । যদি তোমার জীবনকাল আমাকে পায় তাহলে আমি পরিপূর্ণরূপে তোমাকে সাহায্য করব । এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয় । আর কিছু দিনের জন্য ওহীও বন্ধ থাকে । এমনকি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এ অবস্থার প্রেক্ষিতে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন । এমনকি আমার এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পাহাড়ের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন । যখন নিজেকে নিক্ষেপ করার জন্য পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন হে মুহাম্মদ (সাঃ)! নিঃসন্দেহে আপনি তো আল্লাহর রাসূল! এতে তাঁর অস্থিরতা প্রশমিত হত এবং নিজে মনে শান্তিবোধ করতেন । তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন । ওহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘায়িত হয় তখনই তিনি অনরূপ উদ্দেশ্যে দ্রুত চলে যেতেন । যখনই তিনি পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে পূর্বের ন্যায় বলতেন । হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) বলেন দিনের বেলায় সূর্যের আলো ও রাতের বেলায় চাঁদের আলো ।
এরপর তিনি তা নিয়ে হযরত খাদীজা (রাঃ) এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলনে । আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও । আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও । ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন । অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল । এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজা (রাঃ)! আমার কি হল? এবং তাকে সমূহ ঘটনা জানালেন । আর বললেনঃ আমি আমার জীবন সম্পর্কে শংকাবোধ করছি । হযরত খাদীজা (রাঃ) তাকে বললেন, কখনই না । আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করূন । আল্লাহ্ এর কসম! আল্লাহ্ আপনাকে কখনই লাঞ্ছিত করবেন না । কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্য কথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানাদী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন । অতঃপর হযরত খাদীজা (রাঃ) তাঁকে নিয়ে চললেন । অতঃপর তাঁকে নিয়ে ওরাকা ইব্ন নাওফল ইব্ন আসা’দ ইব্ন আবদুল উয়াবা ইব্ন কুসাই এর কাছে এলেন । আর তিনি হযরত খাদীজা (রাঃ) এর চাচার পুত্র (চাচাত ভাই) এবং তার পিতার পক্ষ থেকে চাচাও ছিলেন । তিনি জাহিলিয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন । তিনি আরবী কিতাব লিখতেন । তিনি ইঞ্জিল আরবীতে ভাসান্তর করেছেন । যতখানি লেখা আল্লাহ্ এর মনযুর হত । তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যাক্তি । হযরত খাদীজা (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই! তোমার ভাতিজার কথা শুন । তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কি দেখেছ? রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে অবহিত করেলেন । তখন ওরাকা বললেন, এই তো আল্লাহ্ এর সেই নামুস (দূত) যাঁকে মূসা (আঃ) এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল । হায় আফসোস! যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতে পারতাম যে দিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ, তুমি যা নিয়ে এসেছ, এমন বস্তু নিয়ে কোন দিনই কেউ আসেনি যার সাথে শত্রুতা করা হয়নি । যদি তোমার জীবনকাল আমাকে পায় তাহলে আমি পরিপূর্ণরূপে তোমাকে সাহায্য করব । এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয় । আর কিছু দিনের জন্য ওহীও বন্ধ থাকে । এমনকি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এ অবস্থার প্রেক্ষিতে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন । এমনকি আমার এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পাহাড়ের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন । যখন নিজেকে নিক্ষেপ করার জন্য পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন হে মুহাম্মদ (সাঃ)! নিঃসন্দেহে আপনি তো আল্লাহর রাসূল! এতে তাঁর অস্থিরতা প্রশমিত হত এবং নিজে মনে শান্তিবোধ করতেন । তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন । ওহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘায়িত হয় তখনই তিনি অনরূপ উদ্দেশ্যে দ্রুত চলে যেতেন । যখনই তিনি পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে পূর্বের ন্যায় বলতেন । হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) বলেন দিনের বেলায় সূর্যের আলো ও রাতের বেলায় চাঁদের আলো ।
হাদিস নং: ৬৫১২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১২/০২: আবদুল্লাহ্
ইব্ন মাসলামা (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ নেক্কার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ ।
হাদিস নং: ৬৫১৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১৩/০৩: আহমাদ
ইব্ন ইউনুস (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূলূল্লাহ্ (সাঃ) থেকে
বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের
পক্ষ থেকে হয়ে থাকে ।
হাদিস নং: ৬৫১৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১৪/০৪: আবদুল্লাহ্
ইব্ন ইউসুফ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা
আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে । তাই সে যেন এর উপর আল্লাহ্ এর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে
তা বর্ণনা করে । আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে
। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহ্ এর আশ্রয় চায় । আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা
না করে । তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না ।
হাদিস নং: ৬৫১৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১৫/০৫: মূসা’দ্দাস
(রহঃ) . . . . . হযরত আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি
বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে । আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ
থেকে হয়ে থাকে । তাই যখন কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে তখন যেন তার থেকে আশ্রয় চায় এবং তার
বাম দিকে থু থু ফেলে । তাহলে সে স্বপ্ন আর তার কোন ক্ষতি করবে না । হযরত আবূ আবদুল্লাহ্
(ইয়াহ্য়া ইব্ন আবূ কাসীর) কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা
করেছেন ।
হাদিস নং: ৬৫১৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১৬/০৬: মুহাম্মদ
ইব্ন বাশ্শার (রহঃ) . . . . . হযরত উবাদা ইব্ন সামিত (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
থেকে বর্ণিত । তিনি বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ । সাবিত,
হুমাইদ, ইসহাক ইব্ন আবদুল্লাহ্ ও শুআইব (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন ।
হাদিস নং: ৬৫১৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১৭/০৭: ইয়াহ্ইয়া
ইব্ন কাযাই (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ ।
হাদিস নং: ৬৫১৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১৮/০৮: ইবরাহীম
ইব্ন হামযা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) কে বলতে শুনেছেন, ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ ।
হাদিস নং: ৬৫১৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫১৯/০৯: আবূল
ইয়ামান (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) কে বলতে শুনেছি, সু-সংবাদবাহী বিষয়াদি ছাড়া নবুয়তের আর কিছু অবশিষ্ট নেই । সাহাবাগণ
জিজ্ঞাসা করলেন, সুসংবাদবাহী বিষয়াদি কি? তিনি বললেন, ভাল স্বপ্ন ।
হাদিস নং: ৬৫২০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২০/১০: ইয়াহ্ইয়া
ইব্ন বুকায়ম (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদল লোককে লাইলাতুল
কদর্ (রমযানের) শেষ সাত রাতের মধ্যে রয়েছে বলে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে । আর কিছু সংখ্যক
লোককে তা শেষ দশ রাতের মধ্যে দেখানো হয়েছে । তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ তোমরা লাইলাতুল
কদর্ শেষ সাত রাতের মধ্যেই তালাশ কর ।
হাদিস নং: ৬৫২১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২১/১১: আবদুল্লাহ্
(রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
বলেছেনঃ হযরত ইউসুফ (আঃ) যতদিন কারাগারে কাটিয়েছেন, যদি আমি ততদিন কাটাতাম, অতঃপর আমার
কাছে (বাদশাহর পক্ষ থেকে) আহবানকারী আসত, তাহলে আমি অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিতাম ।
হাদিস নং: ৬৫২২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২২/১২: আবদান
(রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখবে সে অচিরেই জাগ্রতাবস্থায়ও আমাকে
দেখবে । কেননা শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না ।
হাদিস নং: ৬৫২৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২৩/১৩: মুআল্লা ইব্ন আসা’দ (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস (রাঃ)
থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ যে আমাকে নিদ্রাবস্থায় দেখল সে
আমাকেই দেখল । কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারন করতে পারে না । আর মু‘মিনের স্বপ্ন নযূয়তের
ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ ।
হাদিস নং: ৬৫২৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২৪/১৪: ইয়াহইয়া
ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নাবী
(সাঃ) বলেছেনঃ ভালো স্বপ্ন আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে ও খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে
হয়ে থাকে । যে কেউ এমন কিছু দেখবে, যা সে অপছন্দ করে, সে যেন বামদিকে তিনবার থুথু ফেলে
এবং শয়তান থেকে আশ্রয় চায় । তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না । আর শয়তান আমার
আকৃতি ধারণ করতে পারে না ।
হাদিস নং: ৬৫২৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২৫/১৫: খালিদ
ইব্ন খালিয়্যি (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নাবী
(সাঃ) বলেছেনঃ যে আমাকে স্বপ্ন দেখে সে ঠিকই দেখে । ইউনূস ও ইব্ন আখীয যুহরী (রহঃ)
যূবায়দীর অনুসরণ করেছেন ।
হাদিস নং: ৬৫২৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২৬/১৬: আবদুল্লাহ্
ইব্ন ইউসুফ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি নাবী (সাঃ)
-কে বলতে শুনেছেন, যে আমাকে স্বপ্নে দেখে সে সত্যই দেখে । কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ
করতে পারে না ।
হাদিস নং: ৬৫২৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২৭/১৭: আহমাদ
ইব্ন মিকদাম ইজলী (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমাকে সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থপূর্ন বাক্য দান করা হয়েছে । এবং
আমাকে প্রভাব সঞ্চারী প্রকৃতি দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে । কোন এক রাতে আমি নিদ্রিত
ছিলাম । ইত্যবসরে ভূ-পৃষ্ঠের যাবতীয় ভাণ্ডারের চাবি আমার কাছে এনে আমার হাতে রাখা হল
। হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) চলে গেছেন । আর তোমরা উক্ত ভাণ্ডার
সমূহ হস্তান্তর করে চলছ ।
হাদিস নং: ৬৫২৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২৮/১৮: আবদুল্লাহ্
ইব্ন মাসলামা (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত । রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ এক রাতে আমাকে কা‘বা এর কাছে স্বপ্ন দেখানো হল । তখন আমি গৌর বর্নের
সুন্দর এক পুরুষকে দেখলাম। তার মাথায় অতি চমৎকার লম্বা
লম্বা চুল ছিল, যেগুলো আঁচড়িয়ে রেখেছে । চুল থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছিল । তিনি
দু-ব্যাক্তির ওপর অথবা বলেছেনঃ দুব্যাক্তির কাঁধের ওপর ভর করে বায়তূল্লাহ্ এর তাওয়াফ
করছেন । আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যাক্তি কে? বলা হলঃ মাসী ইব্ন মরিয়ম । এরপর অপর এক
ব্যাক্তির সাথে আমার সাক্ষাৎ ঘটল । সে ছিল কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট, ডান
চোখ কানা, চোখটি যেন (পানির ওপর) ভাসমান আঙুর । আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যাক্তি কে?
সে বলল মাসীহ্ দাজ্জাল ।
হাদিস নং: ৬৫২৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫২৯/১৯: ইয়াহইয়া
(রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) -এর কাছে এসে বলল, আমি রাতে স্বপে দেখেছি । এরপর পুরো হাদীসটি বর্ণনা করেন ।
সুলায়মান ইব্ন কাসীর, ইব্ন আখীয যুহরী ও সুলায়মান ইব্ন হুসায়ন (রহঃ) . . . . . হযরত
ইব্ন আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে ইউনুস (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন । যুবায়দী
(রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) অথবা হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ)
থেকে বর্ণনা করেছেন শুআয়ব, ইসহাক ইব্ন ইয়াহইয়া, আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী (সাঃ) থেকে
বর্ণনা করতেন । মা‘মার (রহঃ) প্রথমে এ হাদীসের সনদ বর্ণনা করতেন না । কিন্তু পরবর্তীতে
করতেন ।
হাদিস নং: ৬৫৩০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩০/২০: আবদুল্লাহ্
ইব্ন ইউসুফ (রহঃ) . . . . . হযরত আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) প্রায়ই হযরত উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (রাঃ)-এর ঘরে যেতেন । আর সে ছিল উবাদা
ইব্ন সামিত (রাঃ)-এর স্ত্রী । একদা তিনি তার কাছে এলেন । সে তাঁকে খানা খাওয়াল । তারপর
তাঁর মাথার উকুন বাছতে শুরু করল । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ঘুমিয়ে পড়লেন । কিছুক্ষণ পর হেসে
হেসে জেগে উঠলেন । হযরত উম্মে হারাম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)!
আপনি কেন হাসলেন? তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের একদল লোককে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে ।
যারা আল্লাহ্ এর রাস্তায় যুদ্ধরত সাগরের মধ্যে জাহাজের ওপর আরোহণ করে বাদশাহর সিংহাসনে
অথবা বাদশাহদের মত তারা সিংহাসনে উপবিষ্ট । ইসহাক রাবী সন্দেহ করেছেন । হযরত উম্মে
হারাম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনি আল্লাহ্ এর কাছে দোয়া
করূন, তিনি যেন আমাকে তাদের দলভূক্ত করে দেন । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তার জন্য দোয়া করলেন
। এরপর আবার তিনি মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন । কিছুক্ষণ পর আবার হেসে হেসে জেগে উঠলেন
। আমি বললামঃ- আপনি হাসলেন কেন হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ এর
রাস্তায় জিহাদরত আমার একদল উম্মাতকে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে । পূর্বের ন্যায় এ দল
সম্পর্কেও বললেন । হযরত উম্মে হারাম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)!
আপনি আল্লাহ্ এর কাছে দোয়া করূন, তিনি যেন আমাকে এ দলভূক্ত করে দেন । তিনি বললেনঃ তূমি
প্রথম দল ভূক্তা । হযরত উম্মে হারাম (রাঃ) মুআবিয়া ইব্ন সূফিয়ান (রাঃ)-এর আমলে সামুদ্রিক
জাহাজে আরোহণ করেন এবং সমুদ্র থেকে পেরিয়ে আসার সময় আপন সাওয়ারী থেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে
মারা যান ।
রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৪
হাদিস নং: ৬৫৩১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩১/২১: সাঈদ
ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত খারিজা ইব্ন যায়িদ ইব্ন সাবিত (রাঃ) থেকে বর্নিত যে,
হযরত উম্মুল আলা নাম্বী জনৈকা আনসারী মহিলা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে বায়আত গ্রহণ
করেন । তিনি তাঁকে জানান যে, আনসারগণ লটারির মাধ্যমে মুহাজিরগণকে ভাগ করে নিয়েছিল ।
আমাদের ভাগে আসলেন হযরত উসমান ইব্ন মাযউন (রাঃ) । আমরা তাকে আমাদের ঘরের মেহমান বানিয়ে
নিলাম । এরপর তিনি এমন এক ব্যথায় আক্রান্ত হলেন যে, সে ব্যথায় তার মৃত্যু হল । মারা
যাবার পর তাঁকে গোসল দেওয়া হল । তার কাপড় দিয়েই তাকে কাফন পরানো হল । ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) এলেন । হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, তোমার ওপর আল্লাহ্ এর রহমত হোক,
হে আবূ সাইব! আমার সাক্ষ্য তোমার বেলায় এটাই যে আল্লাহ্ তোমাকে সম্মানিত করেছেন ।
তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ তুমি কি করে জানলে যে আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছেন?
আমি বললাম, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনার প্রতি আমার পিতা কুরবান হোক! তাহলে কাকে
আল্লাহ্ সম্মানিত করবেন? তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ আল্লহ্ এর কসম! তার ব্যাপার
তো হল, তার মৃত্যু হয়ে গেছে । আল্লাহ্ এর কসম! তার জন্য আমি কল্যাণেরই আশাবাদী । আল্লাহ্
এর কসম! আমি আল্লাহ্ এর রাসূল হওয়া সত্ত্বেও জানি না, আমার সাথে কি ব্যবহার করা হবে?
তখন হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ্ এর কসম! আমি আগামীতে কখনো কারো বিশুদ্ধতার
প্রত্যয়ন করব না ।
হাদিস নং: ৬৫৩২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩২/২২: আবূল
ইয়ামান (রহঃ) . . . . . যুহরী (রহঃ) থেকে এ হাদীসে বলা হয়েছে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ
আমি জানি না, তার সাথে কি ব্যবহার করা হবে? হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বললেনঃ আমি এতে চিন্তাগ্রস্ত
হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম । তখন আমি স্বপ্নে হযরত উসমান ইব্ন মাযউন (রাঃ)-এর জন্য প্রবাহমান
ঝর্নাধারা দেখতে পেলাম । আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে এ সম্পর্কে অবহিত করলাম । তিনি
বললেনঃ এটা তার আমল ।
হাদিস নং: ৬৫৩৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩৩/২৩: ইয়াহইয়া
ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ কাতাদা আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যিনি নাবী
(সাঃ) এর সাহাবী ও অশ্বারোহী যোদ্ধা ছিলেন । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে
বলতে শুনেছি, ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে এবং খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে
হয়ে থাকে । যখন তোমাদের কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে অপছন্দনীয় মনে হয়, তখন সে
যেন তার বাম দিকে থু থু ফেলে এবং এ স্বপ্ন থেকে আল্লাহ্ এর আশ্রয় চায় । তাহলে এ স্বপ্ন
তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না ।
হাদিস নং: ৬৫৩৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩৪/২৪: আবদান
(রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
-কে বলতে শুনেছি, আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । আমার কাছে একটি দুধের পেয়ালা হাযির করা হল,
আমি তা থেকে তৃপ্তি সহকারে পান করলাম । তুপ্তির চিহ্ন আমার নখ দিয়ে প্রকাশ পেতে লাগল
। তারপর অবশিষ্টাংশ হযরত উমর (রাঃ) কে দিলাম । সাহাবাগগ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহ্
এর রাসূল (সাঃ)! আপনি এর কি ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন? তিনি বললেনঃ ইল্ম ।
হাদিস নং: ৬৫৩৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩৫/২৫: আলী ইব্ন
আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ একদা আমি ঘুমিয়ে ছিলাম । আমার কাছে দুধের একটি পেয়ালা পেশ
করা হল । আমি তৃপ্তি সহকারে তা থেকে পান করলাম । এমনকি তৃপ্তির চিহ্ন আমার চতূর্দিক
দিয়ে প্রকাশ পাচ্ছিল । অতঃপর অবশিষ্টাংশ হযরত উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) কে প্রদান করলাম
। তাঁর আশেপাশের লোকজন জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি এর কি ব্যাখ্যা প্রদান করছেন হে আল্লাহ্
এর রাসূল (সাঃ)? তিনি বললেনঃ ইল্ম ।
হাদিস নং: ৬৫৩৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩৬/২৬: আলী ইব্ন
আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । একদল লোককে স্বপ্নে দেখলাম, তাদেরকে আমার কাছে
আনা হচ্ছে । আর তারা ছিল জামা পরিহিত । কারো কারো জামা স্তন পর্যন্ত, আর কারো কারো
তার নিচ পর্যন্ত । হযরত উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করল । তার গায়ে
যে জামা ছিল তা মাটিতে হেঁচড়ে চলছিল । সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহ্ এর রাসূল
(সাঃ)! আপনি কি ব্যাখ্যা দিয়েছেন ? তিনি বললেনঃ দ্বীন ।
হাদিস নং: ৬৫৩৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩৭/২৭: সাঈদ
ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি । তিনি বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রিত ছিলাম । আমি দেখলাম,
আমার কাছে একদল লোক পেশ করা হল, আর তারা ছিল জামা পরিহিত । কারো কারো জামা স্তন পর্যন্ত
। আর কারো কারো এর নিচ পর্যন্ত । আর হযরত উমর ইব্ন খাত্তাব (রাঃ) কে এমতাবস্হায় আমার
কাছে পেশ করা হলো যে, সে তার গায়ের জামা হেঁচড়িয়ে চলছিলেন । সাহাবাগণ বললেনঃ হে আল্লাহর
রাসূল (সাঃ)! আপনি এর কি ব্যাখ্যা দিলেন । তিনি বললেনঃ দ্বীন ।
হাদিস নং: ৬৫৩৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩৮/২৮: আবদুল্লাহ্
ইব্ন মুহাম্মাদ-আল জু‘ফী (রহঃ) . . . . . কায়স ইব্ন উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি
বলেন, আমি এক মজলিসে ছিলাম । যেখানে হযরত সা’দ ইব্ন মালিক (রাঃ) এবং হযরত ইব্ন উমর
(রাঃ)-ও ছিলেন । এ সময় হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন সালাম (রাঃ) ঐ পথ দিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন
। লোকেরা বলল, ঐ লোকটি জান্নাতবাসীদের একজন । আমি তাঁকে বললাম, লোকেরা এরূপ এরূপ বলছে
। তিনি বললেনঃ সূবহানাল্লাহ্! তাদের জন্য শোভা পায় না যে, তারা এমন বিষরে মতামত ব্যক্ত
করবে, যে বিষয় সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই । আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম, যেন একটা স্তম্ভ
একটি সবুজ বাগিচায় রাখা হয়েছে এবং সেটা যেথায় স্হাপন করা হয়েছে তার শিরো ভাগে একটি
রশি ছিল । আর নিচের দিকে ছিল একজন খাদেম । ‘মিনসাফ’ অর্থ খাদেম । বলা হল এ স্তম্ভ বেয়ে
উপরে আরোহণ কর । আমি উপরের দিকে আরোহণ করতে করতে রশিটি ধরে ফেললাম । এরপর এ স্বপ্ন
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কাছে বর্ণনা করেছিলাম । তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছিলেনঃ আবদুল্লাহ্
মযবুত রশি ধারণকারী অবস্হায় মারা যাবে ।
হাদিস নং: ৬৫৩৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৩৯/২৯: উবায়দ
ইব্ন ইসমাঈল (রহঃ) . . . . . হযরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ তোমাকে আমায় দূ‘বার স্বপ্নে দেখানো হয়েছে । আমি দেখলাম, এক ব্যাক্তি
তোমাকে রেশমী এক কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে এবং বলছে ইনি আপনার স্ত্রী । আমি তার
নিকাব উন্মোচন করে দেখতে পাই যে ঐ মহিলাটি তুমিই এবং আমি বলছি, যদি এটা আল্লাহ্ এর
পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তা হলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন ।
হাদিস নং: ৬৫৪০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪০/৩০: মুহাম্মাদ
(রহঃ) . . . . . হযরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ
তোমাকে (আয়িশাকে) শাদী করার পুর্বেই দুবার আমাকে দেখানো হয়েছে । আমি দেখেছি, একজন
ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে । আমি বললাম, আপনি নিকাব
উন্মোচন করূন । যখন সে নিকাব উন্মোচন করল তখন আমি দেখতে পেলাম যে, উক্ত মহিলা তুমিই
। আমি তখন বললাম, এটা যদি আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত
করবেন । এরপর আবার আমাকে দেখানো হল যে, ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে
বহন করে নিয়ে আসছে । আমি বললাম- আপনি (তার নিকাব) উন্মোচন করূন । সে তা উন্মোচন করলে
আমি দেখতে পাই যে, উক্ত মহিলা তুমিই । তখন আমি বললামঃ এটা যদি আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে
হযে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন ।
হাদিস নং: ৬৫৪১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪১/৩১: সাঈদ
ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে, আমাকে সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থবহ বানী সহকারে প্রেরণ করা
হয়েছে এবং ভীতি উদ্রেককারী প্রভাব দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে । একদা আমি ঘুমিয়ে
ছিলাম । আমার কাছে ভূ-পৃষ্ঠের ভাণ্ডার সমুহের চাবি পেশ করে আমার সামনে রাখা হল । (আবূ
আবদুল্লাহ) মুহাম্মাদ বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আমার কাছে এ কথা পৌছেছে যে, ‘সংক্ষিপ্ত অথচ
বিশদ অর্থবহ বানী’ -এর অর্থ হল, আল্লাহ্ এর অনেক বিষয় যা পূর্ববতী কিতাব সমুহে লেখা
হত --- একটি অথবা দুটি বিষয়ে সন্নিবেশিত করে দেন । অথবা এর অর্থ অনুরূপ কিছু ।
হাদিস নং: ৬৫৪২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪২/৩২: আবদুল্লাহ্
ইব্ন মুহাম্মাদ ও খলীফা (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন সালাম (রাঃ)এথকে বর্ণিত
। তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি একটি বাগিচায় আছি । বাগিচার মাঝখানে একটি
স্তম্ভ । স্তম্ভের শিরোভাগে একটি হাতল । তখন আমাকে বলা হল, উপরের দিকে উঠ । আমি বললাম,
পারছি না । তখন আমার কাছে একজন খাদেম আসল এবং আমার কাপড় গুটিয়ে/ভিজিয়ে দিল । আমি উপরের
দিকে উঠতে উঠতে হাতলটি ধরে ফেললাম । হাতলটি ধরে থাকা অবস্থায় আমি জেগে গেলাম । অতঃপর
এ স্বপ্ন নাবী (সাঃ) -এর কাছে বর্ণনা করলাম । তিনি বললেনঃ ঐ বাগিচা ইসলামের বাগিচা,
ঐ স্তম্ভ ইসলামের স্তম্ভ, আর ঐ হাতল হল মযবুত হাতল । তুমি মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামকে শক্ত
করে ধরে থাকবে ।
হাদিস নং: ৬৫৪৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪৩/৩৩: মুআলা
ইব্ন আসাদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে
দেখতে পাই, আমার হাতে যেন রেশমী এক টুকরা কাপড় । জান্নাতের যে স্থানেই তা আমি নিক্ষেপ
করি তা আমাকে সে স্থানে উড়িয়ে নিয়ে যায় । এ স্বপ্ন আমি হযরত হাফসা (রাঃ) এর নিকট বর্ণনা
করলাম । আর হযরত হাফসা (রাঃ) তা নাবী (সাঃ) -এর নিকট বর্ণনা করলেন । তখন তিনি বললেনঃ
তোমার ভাই একজন সৎকর্মপরায়ণ ব্যাক্তি । অথবা বললেনঃ আবদুল্লাহ
তো একজন সৎকর্মপরায়ন ব্যাক্তি ।
হাদিস নং: ৬৫৪৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪৪/৩৪: আবদুল্লাহ্
ইব্ন সাব্বাহ (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ যখন কিয়ামত নিকটবর্তী হয়ে যাবে তখন মু‘মিনের স্বপ্ন খুব কমই অবাস্তবায়িত
থাকবে । আর মু‘মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ । আর নবুয়তের কোন কিছুই
অবাস্তব হতে পারে না । রাবী মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, আমি এরূপ বলছি । তিনি বলেন, এ কথা
বলা হয়ে থাকে যে, স্বপ্ন তিন প্রকার, মনের কল্পনা, শয়তানের পক্ষ হতে ভীতি প্রদর্শন
এবং আল্লাহ্ এর তরফ হতে সুসংবাদ । তাই যদি কেউ অপছন্দনীয় কিছু দেখে তবে সে যেন তা কারো
কাছে বর্ণনা না করে । বরং উঠে যেন (নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেয় । রাবী বলেন,
স্বপ্নে শৃংখল দেখা অপছন্দনীয় মনে করা হত এবং পায়ে বেড়ি দেখাকে তারা পছন্দ করতেন ।
বলা হত, পায়ে বেড়ি দেখার ব্যাখ্যা হলো দ্বীনের ওপর অবিচল থাকা । কাতাদা, ইউনূস, হিশাম
ও আবূ হিলাল (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে উক্ত হাদীসকে
বর্ণনা করেছেন । আর কেউ কেউ এসবকে হাদীসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন । (পক্ষান্তরে)
আউদের বর্ণনাকৃত হাদীস সুষ্পষ্ট । ইউনুস (রহঃ) বলেছেনঃ আমি বন্ধনের ব্যাখ্যাকে নাবী
(সাঃ) -এর পক্ষ থেকেই মনে করি । আবূ আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেনঃ শৃংখল গলদেশেই
বাঁধা হয় ।
হাদিস নং: ৬৫৪৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪৫/৩৫: আবদান
(রহঃ) . . . . . তাদেরই এক মহিলা হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) যিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর
হাতে বায়আত করেছিলেন তার থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, যখন মুহাজিরদের বাসস্হান নিরুপণের
জন্য আনসারগণ লটারী দিলেন, তখন আমাদের ঘরে বসবাসের জন্য হযরত উসমান ইব্ন মাযউন (রাঃ)
আমাদের ভাগে পড়েন । তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে আমরা তাঁর সেবা-শশ্রুষা করি । অবশেযে
তিনি মারা যান । এরপর আমরা তাকে তাঁর কাপড় দিয়েই কাফন পরিয়ে দেই । ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) আমাদের ঘরে আসলেন । তখন আমি বললাম, হে আবূ সাইব! তোমার ওপর আল্লাহ্ এর রহমত
হোক । তোমার বেলায় আমার সাক্ষ্য এই যে আল্লাহ্ তোমাকে সম্মানিত করেছেন । তিনি বললেনঃ
তুমি তা কি করে জানলে? আমি বললাম, আল্লাহ্ এর কসম! আমি জানি না । তিনি বললেনঃ তার তো
মৃত্যু হয়ে গেছে, আমি তার জন্য আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে কল্যাণেরই আশাবাদী । আল্লাহ্ এর
কসম! আমি আল্লাহ্ এর রাসূল হওয়া সত্ত্বেও জানি না যে, আমার সাথে এবং তোমাদের সাথে কি
ব্যবহার করা হবে? হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ্ এর কসম! আমি আর কখনও কারো শুদ্ধচিত্ততা প্রত্যায়ন করব
না । হযরত উম্মুল আলা (রাঃ) বলেনঃ আমি স্বপ্নে হযরত উসমান (রাঃ)-এর জন্য প্রবাহমান
ঝর্ণা দেখেছি । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে এসে তা বর্ণনা করলাম । তখন তিনি বললেনঃ
এটা তাঁর আমল তার জন্য জারি থাকবে ।
হাদিস নং: ৬৫৪৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪৬/৩৬: ইয়াকুব
ইব্ন ইবরাহীম ইব্ন কাসীর (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ একদা (আমি স্বপ্নে দেখলাম) আমি একটি কূপের পাশে বসে কূপ
থেকে পানি উত্তোলন করছি । ইত্যবসরে আমার কাছে হযরত আবূ বকর ও উমর (রাঃ) আসল । হযরত
আবূ বকর (রাঃ) বালতিটি হাতে নিয়ে এক বা দু-বালতি পানি উঠাল । আর তার উত্তোলনে কিছুটা
দুর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করূন । এরপর হযরত আবূ বকর (রাঃ) এর হাত থেকে হযরত
উমর (রাঃ) তা গ্রহণ করল । তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল । আমি কোন শক্তিশালী ব্যাক্তিকে
উমরের ন্যায় এতটা ঝানূ কর্মঠ দেখিনি । ফলে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে বাসস্থানে
পৌছে গেল ।
হাদিস নং: ৬৫৪৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪৭/৩৭: আহমাদ
ইব্ন ইউনূস (রহঃ) . . . . . সালিমের পিতা হযরত আবদুল্লাহ ইরন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত
। তিনি আবূ বকর ও উমর (রাঃ) সম্পর্কে নাবী (সাঃ) এর স্বপ্ন বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমি লোকদেরকে সমবেত হতে দেখলাম । তখন হযরত আবূ বকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে
এক বা দুবালতি পানি উত্তোলন করল । আর তার উত্তোলনে কিছু দুর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে
ক্ষমা করূন । এরপর হযরত ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) দাঁড়াল । আর তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে
গেল । আমি লোকদের মধ্যে হযরত উমর (রাঃ) এর ন্যায় এতটা ঝানূ কর্মঠ কাউকে দেখিনি । ফলে
লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলি নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল ।
হাদিস নং: ৬৫৪৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪৮/৩৮: সাঈদ
ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ একদা আমি নিন্দ্রিায় ছিলাম । দেখলাম, আমি একটি কূপের পাশে রয়েছি । আর
এর নিকট একটি বালতি রয়েছে । আমি কূপ থেকে পানি উত্তোলন করলাম যতখানি আল্লাহ্ এর ইচ্ছা
ছিল । এরপর বালতিটি ইব্ন আবূ কুহাফা গ্রহন করেন । তিনি কুপ থেকে এক বা দু-বালতি পানি
উত্তোলন করেন । তার উত্তোলনে কিছুটা দুর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করূন । তারপর
বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল । তখন তা উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) গ্রহণ করল । আমি কোন শক্তিশালী
ব্যাক্তিকে উমরের ন্যায় পানি উত্তোলন করতে দেখিনি । অবশেষে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত
উটগুলো নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল ।
হাদিস নং: ৬৫৪৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৪৯/৩৯: ইসহাক
ইব্ন ইবরাহীম (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রায় ছিলাম । দেখলাম, আমি একটি হাউযের কাছ থেকে লোকদেরকে
পানি পান করাচ্ছি । তখন আমার কাছে আবূ বকর (রাঃ) আসল । আমাকে বিশ্রাম দেওয়ার নিমিত্তে
আমার হাত থেকে সে বালতিটি নিয়ে গেল এবং দু বালতি পানি উঠাল । আর তার উভোলনে কিছুটা
দূর্বলতা ছিল । আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করূন । এরপর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এসে তার কাছ থেকে
তা নিয়ে নিল এবং পানি উত্তোলন করতে থাকল । অবশেষে লোকেরা (পরিতৃপ্ত হয়ে) ফিরে গেল,
অথচ হাউযের পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ।
হাদিস নং: ৬৫৫০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫০/৪০: সাঈদ
ইব্ন উফায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, একদা
আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে বসা ছিলাম । তখন তিনি বললেনঃ আমি এক সময় ঘুমিয়ে ছিলাম
। আমি আমাকে জান্নাতে দেখতে পেলাম । একজন মহিলা একটি প্রাসাদের পাশে ওযু করছে । আমি
জিজ্ঞাসা করলাম, এই প্রাসাদটি কার? তারা বলল উমরের । তখন তার আত্নমর্যাদাবোধের কথা
স্বরণ করলাম । তাই আমি ফিরে এলাম । হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ এ কথা শুনে হযরত উমর
ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেনঃ আমার পিতা-মাতা আপনার ওপর কুরবান হোক!
হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ) (আপনার উপরেও কি) আমি আত্নমর্যাদাবোধ প্রদর্শন করব ?
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৪
হাদিস নং: ৬৫৫১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫১/৪১: আমর ইব্ন
আলী (রহঃ) . . . . . হযরত জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম । আমি আমাকে একটা স্বর্ণের প্রাসাদের নিকট
দেখতে পেলাম । তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কার? তারা বলল, কুরাইশের জনৈক ব্যাক্তির
। হে ইবনুল খাত্তাব! এ প্রাসাদে ঢুকতে আমাকে কিছুই বাধা দিচ্ছিল না । কেবল তোমার আত্মমর্যাদাবোধ,
যা আমার জানা ছিল । হযরত উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনার উপরেও
কি আমি আত্নমর্যাদাবোধ প্রদর্শন করব ?
হাদিস নং: ৬৫৫২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫২/৪২: ইয়াহইয়া
ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, এক সময়
আমরা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর নিকট বসা ছিলাম । তখন তিনি বললেনঃ আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম
। আমি আমাকে জান্নাতে দেখতে পেলাম এবং (দেখতে পেলাম) যে একজন মহিলা একটি প্রাসাদের
পাশে ওযু করছে । আমি বললামঃ এ প্রাসাদটি কার? তারা বলল উমর (রাঃ) এর । তখন তার আত্মমর্যাদাবোধের
কথা স্বরণ করে আমি ফিরে এলাম । তা শুনে হযরত উমর (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেনঃ আমার
পিতা-মাতা আপনার ওপর কুরবান হোক । হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আপনার উপরেও কি আমি
আত্মমর্যাদাবোধ দেখাব ?
হাদিস নং: ৬৫৫৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫৩/৪৩: আবূল
ইয়ামান (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রায় ছিলাম । তখন আমি আমাকে কা‘বা গৃহ তাওয়াফ রত অবস্হায়
দেখতে পেলাম । এমন সময় সোজা চুল বিশিষ্ট একজন পুরুষকে দু-জন পুরুষের মাঝখানে দেখলাম,
যার মাথা থেকে পানি ঝরে পড়ছিল । আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইনি কে? তারা বলল, ইব্ন মারিয়াম
। এরপর আমি ফিরে আসতে লাগলাম । এ সময় একজন লাল বর্ণের মোটাসোটা, কৌকড়ান চুল বিশিষ্ট,
ডান চোখ কানা ব্যাক্তিকে দেখলাম । তার চোখটি যেন ভাসমান আঙ্গুর । আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
এ ব্যাক্তি কে? তারা বলল, এ হচ্ছে দাজ্জাল । তার সাথে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ ব্যাক্তি
হল ইব্ন কাতান । আর ইব্ন কাতান হল বনূ মুসতালিক গোত্রের থুযাআ বংশের একজন লোক ।
হাদিস নং: ৬৫৫৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫৪/৪৪: ইয়াহইয়া
ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি যে, আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । আমি দেখলাম, দুধের
একটা পেয়ালা আমাকে দেওয়া হল । তা থেকে আমি (এত বেশি) পান করলাম যে, আমাতে তৃপ্তির চিহ্ন
প্রবাহিত হচ্ছিল । অতঃপর (অবশিষ্টাংশ)উমর কে দিলাম । সাহাবাগণ বললেনঃ এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা
কি প্রদান করলেন হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)? তিনি বললেনঃ ইল্ম ।
হাদিস নং: ৬৫৫৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫৫/৪৫: উবায়দুল্লাহ্
ইব্ন সাঈদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) -এর বেশ কজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর যুগে স্বপ্ন দেখতেন । অতঃপর তারা
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে তা বর্ণনা করতেন । আর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর ব্যাখ্যা
দিতেন যা আল্লাহ্ ইচ্ছা করতেন । আমি তখন অল্প বয়সী যুবক । আর বিয়ের আগে মসজিদই ছিলো
আমার ঘর । আমি মনে মনে নিজেকে সম্বোধন করে বললাম, যদি তোমার মধ্যে কোন কল্যাণ থাকত
তাহলে তুমি তাদের ন্যায় স্বপ্ন দেখতে । আমি এক রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে বললাম, হে আল্লাহ!
আপনি যদি জানেন যে, আমার মধ্যে কোন কল্যাণ নিহিত আছে তাহলে আমাকে কোন একটি স্বপ্ন
দেখান । আমি ঐ অবস্থায়ই (ঘুমিয়ে) রইলাম । দেখলাম আমার কাছে দু-জন ফেরেশতা এসেছেন ।
তাদের প্রত্যেকের হাতেই লোহার একটি করে হাতুড়ি । তারা আমাকে নিয়ে (জাহান্নামের দিকে)
অগ্রসর হচ্ছেন । আর আমি তাদের উভয়ের মাঝখানে থেকে আল্লাহ্ এর কাছে দোয়া করছি, হে আল্লাহ্!
আমি জাহান্নাম থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি । এরপর আমাকে দেখান হল যে, একজন ফেরেশতা
আমার কাছে এসেছেন । তাঁর হাতে লোহার একটি হাতুড়ি । সে আমাকে বলল, তোমার অবশ্যই কোন
ভয় নেই । তুমি খুবই ভাল লোক, যদি বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে । তাঁরা আমাকে
নিয়ে চলল, অবশেষে তারা আমাকে জাহান্নামের (তীরে এনে) দাঁড় করাল, (যা দেখতে) কুপের ন্যায়
গোলাকার । আর কূপের ন্যায় এরও রয়েছে অনেক শিং । আর দু-শিং-এর মাঝখানে একজন ফেরেশতা,
যার হাতে লোহার একটি হাতুড়ি । আর আমি এতে কিছু লোককে (জাহান্নামে) শিকল পরিহিত দেখলাম
। তাদের মাথা ছিল নিচের দিকে । কুরাইশের কতক ব্যাক্তিকে তথায় আমি চিনে ফেললাম । অতঃপর
তারা আমাকে ডানদিকে নিয়ে ফিরল । এ ঘটনা (স্বপ্ন) আমি হযরত হাফসা (রাঃ)-এর নিকট বর্ণনা
করলাম । আর হযরত হাফসা (রাঃ) তা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর নিকট বর্ণনা করলেনঃ তখন রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বললেনঃ আবদুল্লাহ্ তো সৎকর্মপরায়ন লোক । নাফি (রহঃ) বলেনঃ এরপর থেকে
তিনি সর্বদা বেশি করে (নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন ।
হাদিস নং: ৬৫৫৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫৬/৪৬: আবদুল্লাহ্
ইব্ন মুহাম্মাদ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ আমি
নাবী (সাঃ) এর যুগে অবিবাহিত যুবক ছিলাম । আমি মসজিদেই রাত্রি যাপন করতাম । আর যারাই
স্বপ্নে কিছু দেখত তারা তা নাবী (সাঃ) -এর কাছে বর্ণনা করত । আমি বললাম, হে আল্লাহ!
যদি তোমার নিকট আমার জন্য কোন কল্যাণ নিহিত থাকে, তাহলে আমাকে কোন স্বপ্ন দেখাও,
যাতে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আমার এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করেন । আমি নিদ্রা গেলাম,
তখন দেখতে পেলাম যে দুজন ফেরেশতা আমার কাছে এসে আমাকে নিয়ে চলল, এরপর তাদের সাথে অপর
একজন ফেরেশতার সাক্ষাৎ ঘটল । সে আমাকে বলল, তোমার কোন ভয়ের কারণ
নেই । তুমি তো একজন সৎকর্মপরায়ণ লোক । এরপর তারা আমাকে জাহান্নামের
দিকে নিয়ে চলল, এটা যেন কুপের ন্যায় গোলাকার নির্মিত । আর এর মধ্যে বেশ কিছু লোক রয়েছে
। এদের কতককে আমি চিনতে পারলাম । এরপর তারা আমাকে ডানদিকে নিয়ে চলল । যখন সকাল হল,
আমি হযরত হাফসা (রাঃ)-এর নিকট সব ঘটনা উল্লেখ করলাম । পরে হযরত হাফসা (রাঃ) বললেনঃ
যে, তিনি তা নাবী (সাঃ) -এর কাছে বর্ণনা করেছেন । আর তিনি বলেছেনঃ আবদুল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণ লোক । (তিনি আরও বলেছেনঃ)যদি সে রাতে বেশি করে সালাত
(নামায/নামাজ) আদায় করত । যুহরী (রহঃ) বলেন, এরপর থেকে হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ)
রাতে বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন ।
হাদিস নং: ৬৫৫৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫৭/৪৭: কুতায়বা
ইব্ন সাঈদ (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম । দেখলাম, আমার কাছে
দুধের একটা পেয়ালা আনা হল । আমি তা থেকে পান করলাম । এরপর আমার অবশিষ্টাংশ উমর ইব্ন
খাত্তাবকে প্রদান করলাম । সাহাবাগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)! আপনি এর ব্যাখ্যা
কি প্রদান করেছেন । তিনি বললেনঃ . . . ইল্ম ।
হাদিস নং: ৬৫৫৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫৮/৪৮: সাঈদ
ইব্ন মুহাম্মাদ (রহঃ) . . . . . উবায়দুল্লাহ্ ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিত ।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যে সকল স্বপ্নের উল্লেখ করেছেন আমি হযরত আবদুল্লাহ্
ইব্ন আব্বাস (রাঃ)-কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম । তখন হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্ন আব্বাস
(রাঃ) বললেন, আমার কাছে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি একদা
ঘুমিয়ে ছিলাম, আমাকে দেখানো হলো যে আমার হাত দুটিতে স্বর্ণের দুটি চুড়ি রাখা হয়েছে
। আমি সে দুটি কেটে ফেললাম এবং অপছন্দ করলাম । অতঃপর আমাকে অনুমতি প্রদান করা হল, আমি
উভয়টিকে ফুঁ দিলাম, ফলে উভয়টি উড়ে গেল । আমি চুড়ি দুটির এ ব্যাখ্যা প্রদান করলাম যে,
দু-জন মিথ্যা নবুয়তের দাবিদার বের হরে । উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ এদের একজন হল, আল
আনসী যাকে ইয়ামানে হযরত ফায়রুয (রাঃ) কতল করেছেন । আর অপরজন হল মূসায়লিমা ।
হাদিস নং: ৬৫৫৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৫৯/৪৯: মুহাম্মাদ
ইব্ন আলা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, নাবী (সাঃ)
বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখি যে আমি মক্কা থেকে এমন এক স্থানের দিকে হিজরত করছি যেখানে
খেজুর বৃক্ষ রয়েছে । তখন আমার ধারণা হল, সেই স্হানটি ‘ইয়ামামা’ অথবা ‘হাজার’ হবে ।
অখচ সে স্থানটি হল মদিনা তথা ইয়াসরিব । আর আমি (স্বপ্নে) সেখানে একটি গরু দেখলাম ।
আল্লাহর কসম! এটা কল্যাণকরই । গরুর ব্যাখ্যা হল উহুদের যূদ্ধে (শাহাদাত প্রাপ্ত) মু‘মিনগণ
। আর কল্যাণের ব্যাখ্যা হল এটাই, যে কল্যাণ আল্লাহ্ আমাদের দিয়েছেন এবং সত্যের বিনিময়
যা আল্লাহ্ বদর যূদ্ধের পর আমাদেরকে প্রদান করেছেন ।
হাদিস নং: ৬৫৬০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬০/৫০: ইসহাক
ইব্ন ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) বলেছেনঃ আমরা সর্বশেষ এবং সর্ব প্রথম । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) আরও বলেছেনঃ একদা
আমি ঘুমিয়ে ছিলাম । দেখলাম আমাকে ভূ-পৃষ্ঠের ভাণ্ডার সমূহ দেওয়া হয়েছে । আর আমার হাতে
স্বর্ণের দুটি চুড়ি রাখা হয়, যা আমার কাছে কষ্টকর মনে হল । আর আমাকে চিন্তায় ফেলে দিল
। তখন আমাকে নির্দেশ করা হল যেন আমি চুড়ি দু‘টিতে ফুঁ দেই । তাই আমি উভয়টিভে ফুঁ দিলাম
(চুড়ি দুটি উড়ে গেল) । আমি চুড়ি দুটির ব্যাখ্যা এভাবে দিলাম যে, (নবুয়তের) দু‘জন মিথ্যা
দাবিদার রয়েছে, যাদের মাঝখানে আমি আছি । সানআর বাসিন্দা ও ইয়ামামার বাসিন্দা ।
হাদিস নং: ৬৫৬১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬১/৫১: ইসমাঈল
ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . সালিমের পিতা হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত ।
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আমি দেখেছি যেন এলোমেলো কেশ বিশিষ্ট একজন কালো মাহিলা মদিনা থেকে
বের হয়ে মাহইয়াআ নামক স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আর এটিকে জুহফা বলা হয় । আমি এ স্বপ্নের
ব্যাখ্যা এরূপ প্রদান করলাম যে, মদিনার মহামারী তথায় স্হানান্তরিত হল ।
হাদিস নং: ৬৫৬২ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬২/৫২: মুহাম্মাদ
ইব্ন আবূ বকর মুকাদ্দামী (রহঃ) . . . . . হযরত আবদুল্লাহ ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত
। তিনি মদিনা সম্পর্কে নাবী (সাঃ) -এর স্বপ্নের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন । তিনি বলেছেনঃ
আমি দেখেছি এলোমেলো চুল বিশিষ্ট একজন কালো মহিলা মদিনা থেকে বের হয়েছে । অবশেষে মাহইয়াআ
নামক স্হানে অবস্হান নিয়েছে । আমি এর ব্যাখ্যা এরূপ প্রদান করলাম যে, মদিনার মহামারী
মাহইয়াআ তথা জুহফা নামক ন্হানে স্থানান্তরিত হল ।
হাদিস নং: ৬৫৬৩ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬৩/৫৩: ইবরাহীম
ইব্ন মুনযির (রহঃ) . . . . . সালিমের পিতা হযরত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত । নাবী
(সাঃ) বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখেছি । এলোমেলো চুল বিশিষ্ট একজন কালো মহিলা মদিনা
থেকে বের হয়ে মাহইয়াআ তথা জুহফা নামক স্থানে গিয়ে থেমেছে । আমি এর ব্যাখ্যা এরূপ দিলাম
যে, মদিনার মহামারী তথায় স্হানান্তরিত হল ।
হাদিস নং: ৬৫৬৪ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬৪/৫৪: মুহাম্মাদ
ইব্ন আলা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি নাবী (সাঃ) এর স্বপ্ন
বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, তিনি বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম একটা তরবারী নাড়াচাড়া করছি
। আর এর মধ্যভাগ ভেঙ্গে গেল । এর ব্যাখ্যা হল বিপদ, যা উহুদের যুদ্ধে মু‘মিনদের ভাগ্যে
ঘটেছে । পুনরায় আমি তরবারীটি নাড়লাম । এতে তরবারীটি পূর্ববর্তী অবস্হা থেকে সুন্দর
অবস্থায় ফিরে এল । এর ব্যাখ্যা হল আল্লাহ্ এর দেওয়া বিজয় ও মু‘মিনদের ঐক্য ।
হাদিস নং: ৬৫৬৫ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬৫/৫৫: আলী ইব্ন
আবদুল্লাহ্ (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত
। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি এমন স্বপ্ন দেখার ভান করল যা সে দেখেনি । তাকে দুটি যবের
দানায় গিট লাগানোর জন্য বাধ্য করা হবে । অথচ সে তা কখনও পারবে না । যে কেউ কোন এক
দলের কথার দিকে কান লাগাল । অথচ তারা এটা পছন্দ করে না অথবা বলেছেন - অথচ তারা তার
থেকে পলায়নপর । কিয়ামতের দিন তার উভয় কানে সীসা ঢেলে দেওয়া হবে । আর যে কেউ কোন প্রাণীর
ছবি আঁকে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে এবং তাতে প্রাণ ফুঁকে দেওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে ।
কিন্তু সে প্রাণ ফুঁকতে পারবে না । সুফয়ান বলেছেন, আইউব এই হাদীসটি আমাদেরকে মওসুল/মরসাল
রূপে বর্ণনা করেছেন ।
কুতায়বা (রহঃ) বলেন, আবূ আওয়ানা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ হুরায়রা
(রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন, যে ব্যাক্তি নিজের স্বপ্ন মিথ্যা বর্ণনা করে .
. . . .।
শু’বা (রহঃ) হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তাঁর উক্তি বর্ণনা করেন,
যে কেউ ছবি আঁকে . . . . যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ননা করে . . . . যে কেউ কান লাগায়
. . . . ।
হাদিস নং: ৬৫৬৬ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬৬/৫৬: ইসহাক
(রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । (তিনি বলেন) যে কেউ কান লাগাবে
. . . . যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করবে . . . . যে কেউ ছবি আঁকবে . . . . অবশিষ্ট
হাদীস অনুরূপ বর্ণনা করেছেন . . . . । হিশাম (রহঃ) ইকরামা থেকে হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ)
সুত্রে খালিদ এর অনুসরণ করেছেন ।
হাদিস নং: ৬৫৬৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬৭/৫৭: আলী ইব্ন
মুসলিম (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ
সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা হল আপন চক্ষুকে এমন কিছু দেখার (দাবি করা) যা চক্ষুদ্বয় দেখতে
পায়নি ।
হাদিস নং: ৬৫৬৮ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬৮/৫৮: সাঈদ
ইব্ন রাবী (রহঃ) . . . . . আবূ সালামা (রহঃ) থেকে বর্নিত । তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন
দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত । অবশেষে আমি হযরত আবূ কাতাদা (রাঃ)-কে বলতে
শুনেছি, তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত । অবশেষে
আমি নাবী (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি, ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে । তাই যখন
কেউ পছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন এমন ব্যাক্তির কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে ।
আর যখন অপছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন যেন সে এর ক্ষতি ও শয়তানের ক্ষতি থেকে আল্লাহ্
এর আশ্রয় চায় এবং তিনবার থু থু ফেলে আর সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে । তাহলে
এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না ।
হাদিস নং: ৬৫৬৯ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৬৯/৫৯: ইবরাহিম
ইব্ন হামযা (রহঃ) . . . . . হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত । তিনি রাসূলুল্লাহ্
(সাঃ) -কে বলতে শুনেছেন, যখন কেউ এমন কোন স্বপ্ন দেখে যা সে পছন্দ করে, তবে মনে করবে
যে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে । তখন সে যেন এজন্য আল্লাহ্ এর শোকর আদায় করে এবং তা
বর্ননা করে । আর যখন এর বিপরীত কোন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, মনে করবে তা শয়তানের
পক্ষ থেকে হয়েছে । তখন সে যেন এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ এর আশ্রয় চায় এবং তা কারো কাছে
বর্ননা না করে । তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না ।
হাদিস নং: ৬৫৭০ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৭০/৬০: ইয়াহইয়া
ইব্ন বুকায়র (রহঃ) . . . . . হযরত ইব্ন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, জনৈক
ব্যাক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে এসে বলল, আমি গত রাতে স্বপ্নে একখন্ড মেঘ দেখতে
পেলাম যা থেকে ঘি ও মধু ঝরছে । আমি লোকদেরকে দেখলাম তারা তা থেকে তুলে নিচ্ছে । কেউ
বেশি পরিমাণ আবার কেউ কম পরিমান । আর দেখলাম, একটা রশি যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত মিলে
রয়েছে । আমি দেখলাম আপনি তা ধরে উপরে চড়ছেন । তারপর অপর এক ব্যাক্তি তা ধরঁল ও এর সাহায্যে
উপরে উঠে গেল । এরপর আরেক জন তা ধরে এর দ্বারা উপরে উঠে গেল । এরপর আরেক জন তা ধরল
। কিন্তু তা ছিঁড়ে গেল । পুনরায় তা জোড়া লেগে গেল । তখন হযরত আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ
হে আল্লাহা এর রাসূল (সাঃ)! আপনার প্রতি আমার পিতা কুরবান হোক! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই
আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করার সুযোগ দিবেন । নাবী (সাঃ) বললেনঃ তুমি এর ব্যাখ্যা
প্রদান কর । হযরত আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ মেঘের ব্যাখ্যা হল ইসলাম । আর তার থেকে যে ঘি
ও মধু ঝরছে তা হল কুরআন যার সূমিষ্টতা ঝরছে । কুরআন থেকে কেউ বেশি আহরণ করছে আর কেউ
কম । আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত ঝূলন্ত রশিটি হচ্ছে ঐ হক (মহাসত্য) যার উপর আপনি প্রতিষ্টিত
রয়েছেন । আপনি তা ধরবেন, আর আল্লাহ্ আপনাকে উচ্চে আরোহন করাঁবেন । আপনার পরে আরেক জন
তা ধরবে । ফলে এর দ্বারা সে উচ্চে আরোহণ করবে । অতঃপর আরেকজন তা ধরে এর মাধ্যমে সে
উচ্চে আরোহণ করবে । এরপর আরেকজন তা ধরবে, কিন্তু তা ছিঁড়ে যাবে । পূনরায় তা জোড়া লেগে
যাবে, ফলে সে এর দ্বারা উচ্চে আরোহণ করবে । হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আমার পিতা আপনার
উপর কুরবান হোক । আমাকে বলুন, আমি ঠিক বলেছি, না ভুল? নাবী (সাঃ) বললেনঃ কিছু তো ঠিক
বলেছ । আর কিছু ভূল বলেছ । তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ্ এর রাসূল (সাঃ)! আল্লাহর কসম! আপনি
অবশ্যই আমাকে বলে দিবেন যা আমি ভুল করেছি । নাবী (সাঃ) বললেনঃ কসম দিও না ।
হাদিস নং: ৬৫৭১ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়)
৬৫৭১/৬১: মুয়াম্মাল
ইব্ন হিশাম আবূ হিশাম (রহঃ) . . . . . হযরত সামুরা ইব্ন জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত ।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) প্রায়ই তাঁর সাহাবীদেরকে বলতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন
দেখেছ কি? রাবী বলেন, যাদের বেলায় আল্লাহ্ এর ইচ্ছা, তারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) -এর কাছে
স্বপ্ন বর্ণনা করত । তিনি একদিন সকালে আমাদেরকে বললেনঃ গত রাতে আমার কাছে দু‘জন আগন্তুক
আসল । তারা আমাকে উঠাল । আর আমাকে বলল, চলুন । আমি তাদের সাথে চলতে লাগলাম । আমরা কাত
হয়ে শায়িত এক ব্যাক্তির কাছে পৌছলাম । দেখলাম, অপর এক ব্যাক্তি তার নিকট পাথর নিয়ে
দাঁড়িয়ে রয়েছে । সে তার মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে । ফলে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে । আর পাথর
নিচে গিয়ে পতিত হচ্ছে । এরপর অবার সে পাথরটি অনুসরণ করে তা পুনরায় নিয়ে আসছে । ফিরে
আসতে না আসতেই লোকটির মাথা পুর্বের ন্যায় পূনরায় ভাল হয়ে যায় । ফিরে এসে আবার অনুরূপ
আচরণ করে, যা পূর্বে প্রথমবার করেছিল । তিনি বলেনঃ আমি তাদের (সাথীদ্বয়কে) বললাম, সুবহান্নাল্লাহ!
এরা কারা? তিনি বললেনঃ তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন । তিনি বলেনঃ আমরা চললাম, এরপর আমরা
চিৎ হয়ে শায়িত এক ব্যাক্তির কাছে পৌছলাম । এখানেও
দেখলাম, তার নিকট এক ব্যাক্তি লোহার আঁকড়া নিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে । আর সে তার চেহারার একদিকে
এসে এটা দ্বারা মুখমন্ডলের একদিক মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরুপভাবে নাসারন্দ্র,
চোখ ও মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে । আওফ (রহঃ) বলেনঃ আবূ রাজা (রহঃ) কোন কোন
সময় ‘ইয়ুশারশিরূ’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইয়াশুককু’ শব্দ বলতেন । এরপর ঐ লোকটি শায়িত ব্যাক্তির
অপরদিকে যায় এবং প্রথম দিকের সাথে যেরুপ আচরণ করেছে অনুরুপ আচরণই অপরদিকের সাথেও করে
। ঐ দিক হতে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি পুর্বের ন্যায় ভাল হয়ে যায় । তারপর আবার
প্রথমবারের ন্যায় আচরণ করে । তিনি বলেনঃ আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ্! এরা কারা? তিনি
বলেনঃ তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন । আমরা চললাম এবং চুলা সদৃশ একটি গর্তের কাছে পৌছলাম
। রাবী বলেনঃ আমার মনে হয় যেন তিনি বলেছিলেন, আর তথায় শোরগোলের শব্দ ছিল । তিনি বলেনঃ
আমরা তাতে উকি মারলাম, দেখলাম তাতে বেশ কিছু উলং নারী ও পুরুষ রয়েছে । আর নিচ থেকে
নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে । যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ
করে, তখনই তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করে উঠে । তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে বললাম,
এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন , চলুন । তিনি বলেনঃ আমরা চললাম এবং একটি নদীর (তীরে)
গিয়ে পৌছলাম । রাবী বলেনঃ আমার যতদূর মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, নদীটি ছিল রক্তের মত
লাল । আর দেখলাম, এই নদীতে এক ব্যাক্তি সাঁতার কাটছে । আর নদীর তীরে অপর এক ব্যাক্তি
রয়েছে এবং সে তার কাছে অনেকগুলো পাথর একত্রিত করে রেখেছে । আর ঐ সাঁতারকারী ব্যাক্তি
বেশ কিছুক্ষন সাঁতার কাটার পর সে ব্যাক্তির কাছে এসে পৌছে, যে নিজের নিকট পাথর একত্রিত
করে রেখেছে । তথায় এসে সে তার মুখ খুলে দেয় আর ঐ ব্যাক্তিতার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে
দেয় । এরপর সে চলে যায়, সাঁতার কাটতে থাকে, আবার তার কাছে ফিরে আসে, যখনই সে তার কাছে
ফিরে আসে তখনই সে তার মুখ খুলে দেয়, আর ঐ ব্যাক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয় ।
তিনি বলেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তারা বলল, চলুন, চলুন । তিনি বলেনঃ আমরা
চললাম এবং এমন একজন কুশ্রী ব্যাক্তির কাছে এসে পৌছলাম, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধীক
কুশ্রী বলে মনে হয় । আর দেখলাম, তার নিকট রয়েছে আগুন, যা সে জালাচ্ছে ও তার চতূর্দিকে
দৌড়াচ্ছে । তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম! ঐ লোকটি কে? তারা বলল, চলুন,
চলুন । আমরা চললাম এবং একটা সজীব শ্যামল বাগানে উপনীত হলাম, যেখানে বসন্তের হরেক রকম
ফুলের কলি রয়েছে । আর বাগানের মাঝে আসমানের থেকে অধিক উচু দীর্ঘকায় একজন পূরুষ রয়েছে
যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না । এমনিভাবে তার চতুস্পার্শে এত বিপূল সংখ্যক বালক-বালিকা
দেখলাম যে, এত বেশি আর কখনো আমি দেখিনি । আমি তাদেরকে বললাম, উনি কে? এরা কারা? তারা
আমাকে বলল, চলুন, চলুন । আমরা চললাম এবং একটা বিরাট বাগানে গিয়ে পৌছলাম । এমন বড় এবং
সুন্দর বাগান আমি আর কখনো দেখিনি । তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এর ওপরে চড়ুন । আমরা
ওপরে চড়লাম । শেষ পর্যন্ত সোনা-রূপার ইটের তৈরি একটি শহরে গিয়ে আমরা উপনীত হলাম । আমরা
শহরের দরজায় পৌছলাম এবং দরজা খুলতে বললাম । আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল, আমরা তাতে
প্রবেশ করলাম । তখন তথায় আমাদের সাথে এমন কিছু লোক সাক্ষাৎ করল যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুন্দর, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক
সুন্দর মনে হয় । আর শরীরের অর্ধেক এমনই কুশ্রী ছিল । যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক কুশ্রী
মনে হয় । তিনি বলেনঃ সাথীদ্বয় ওদেরকে বলল, যাও ঐ নদীতে গিয়ে নেমে পড়। আর সেটা ছিল সুপ্রশস্ত
প্রবাহমান নদী, যার পানি ছিল দুধের মত সাদা । ওরা তাতে গিয়ে নেমে পড়ল । অতপর এরা আমাদের
কাছে ফিরে এল, দেখা গেল তাদের এ কুশ্রীতা দূর হয়ে গিয়েছে এবং তারা খুবই সূন্দর আকৃতির
হয়ে গিয়েছে । তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এটা জান্নাতে আদন এবং এটা আপনার বাসস্হান
। তিনি বলেনঃ আমি বেশ উপরের দিকে তাকালাম, দেখলাম ধবধবে সাদা মেঘের ন্যায় একটি প্রাসাদ
রয়েছে । তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এটা আপনার বাসগূহ । তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে বললাম,
আল্লাহ তোমাদের মাঝে বরকত দিন! আমাকে ছেড়ে দাও । আমি এতে প্রবেশ করি । তারা বলল, আপনি
অবশ্য এতে প্রবেশ করলেন । তবে এখন নয় । তিনি বলেন, আমি এ রাতে অনেক বিস্ময়কর ব্যাপার
দেখতে পেলাম- এগুলোর তাৎপর্য কি? তারা আমাকে বলল- আচ্ছা! আমরা আপনাকে
বলে দিচ্ছি । ঐ যে প্রথম ব্যাক্তিকে যার কাছে আপনি পৌছেছিলেন, যার মাথা পাথর দিয়ে
চুর্ন-বিচুর্ণ করা হচ্ছিল, সে হল ঐ ব্যাক্তি যে কুরআন গ্রহন করে তা ছেড়ে দিয়েছে । আর
ফরয সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকে । আর ঐ ব্যাক্তি যার কাছে গিয়ে দেখেছেন যে,
তার মুখের এক ভাগ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত এমনিভাবে নাসারন্ধ্রে ও চোখ মাথার পিছন দিক
পর্যন্ত চিরে ফেলা হচ্ছিল । সে হল ঐ ব্যাক্তি, যে সকালে আপন ঘর থেকে বের হয়ে এমন কোন
মিথ্যা বলে যা চতূর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে । আর এ সকল উলঙ্গ নারী-পূরুষ যারা চুলা সদৃশ গর্তের
অভ্যন্তরে রয়েছে তারা হল ব্যাভিচারী ও ব্যাভিচারিণীর দল । আর ঐ ব্যাক্তি, যার কাছে
পৌছে দেখেছিলেন যে, সে নঁদীতে সাতার কাটছে ও তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে সে হল
সুদখোর । আর ঐ কুশ্রী ব্যাক্তি, যে আগুনের কাছে ছিল এবং আগুন জ্বালাচ্ছিল আর সে এর
চতূর্পার্শে দৌড়াচ্ছিল, সে হল জাহান্নামের দারোগা, মালিক ফেরেশতা । আর ঐ দীর্ঘকায়
ব্যাক্তি যিনি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন, ইবরাহীম (আঃ) । আর তাঁর আশেপাশের বালক-বালিকারা
হলো ঐসব শিশু, যারা ফিৎরাত (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যু বরন করেছে।
তিনি বলেনঃ তখন কিছু সংখ্যক মুসলমান জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! মুশরিকদের
শিশু সন্তানরাও কি? তখন রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ মূশরিকদের শিশু সন্তানরাও । আর ঐসব
লোক যাদের অর্ধেকাংশ অতি সুন্দর ও অর্ধেকাংশ অতি কুশ্রী । তারা হল ঐ সম্প্রদায় যারা
সৎ-অসৎ উভয়
প্রকারের কাজ মিশ্রিতভাবে করেছে । আল্লাহ্ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন ।
শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০১৪
ফিতনা অধ্যায়
পরিচ্ছেদ
: ২৯৭৭/ মহান
আল্লাহ্ এর বাণীঃ তোমরা সেই ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক হও যা তোমাদের কেবল জালিমদের
উপরই আপতিত হবে না । এবং যা নবী (সাঃ) ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করতেন । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৭৮/ নবী (সাঃ)
এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা এমন কিছু দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না । হযরত
আবদুল্লাহ্ ইব্ন যায়িদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ
না হাউযের পাড়ে আমার সঙ্গে মিলিত হও । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৭৯/ নবী (সাঃ)
এর বাণীঃ কতিপয় নির্বোধ বালকের হাতে আামার উম্মত ধ্বংস হবে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮০/ নবী (সাঃ)
এর বাণীঃ আরবরা অত্যাসন্ন এক বিপর্যয়ে হালাক হয়ে যাবে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮১/ ফিতনার
প্রকাশ । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮২/ প্রতিটি
যুগের চেয়ে পরবর্তী যুগ আরও নিকৃষ্টতর হবে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮৩/ নবী (সাঃ)
এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয় । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮৪/ নবী (সাঃ)
এর বাণীঃ আমার পর তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮৫/ নবী (সাঃ)
এর বাণীঃ ফিতনা ব্যপক হারে হবে, তাতে দাঁড়ানো ব্যক্তির চাইতে উপবিষ্ট ব্যক্তি
উত্তম হবে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮৬/ দু‘জন
মুসলিম তরবারী নিয়ে পরস্পর মারমুখী হলে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮৭/ যখন জামাআত
(মুসলমানরা সংঘবদ্ধ) থাকবে না তখন কি করতে হবে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮৮/ যে
ফিতনাবাজ ও জালিমদের দল ভারী করাকে অপছন্দনীয় মনে করে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৮৯/ যখন
মানুষের আবর্জনা (নিকৃষ্ট) অবশিষ্ট থাকবে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯০/ ফিতনার সময়
বেদুঈন সুলভ জীবনযাপন করা বঞ্ছনীয় । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯১/ ফিতনা থেকে
আশ্রয় প্রার্থনা । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯২/ নবী (সাঃ)
এর বাণীঃ ফিতনা পূর্ব দিক থেকে শুরূ হবে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯৩/ সমুদ্রের
তরঙ্গের ন্যায় ফিতনা তরঙ্গায়িত হবে । ইব্ন উয়ায়না (রঃ) খালফ্ ইব্ন হাওশাব (রঃ)
থেকে বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববর্তী লোকেরা নিম্নোক্ত কবিতার দ্বারা ফিতনার উপমা
পেশ করতে পছন্দ করতেন । যুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থা যুবতীর মত, যে তার রূপ-লাবণ্য
নিয়ে অপরিণামদর্শীর উদ্দেশ্যে ছুটাছুটি করে । কিন্তু যখন যুদ্ধের দাবানল দাউ দাউ
করে জ্বলে উঠে এবং তার ফুলকিগুলো হয় পূর্ণ যৌবনা, তখন সে বৃদ্ধা বিধবার ন্যায় পালিয়ে
যায়, যার চুল অধিকাংশই সাদা হয়ে গেছে, রঙ হয়ে গেছে ফিকে ও পরিবর্তিত, যার ঘ্রাণ
নিতে ও চুমু খেতে ঘৃণা লাগে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯৪/ -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯৫/ যখন
আল্লাহ্ কোন সম্প্রদায়ের উপর আযাব নাযিল করেন । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯৬/ হযরত হাসান
ইব্ন আলী (রাঃ) সম্পর্কে নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ অবশ্যই আমার এ পৌত্র সরদার । আর সম্ভবত
আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর মাধ্যমে মুসলমানদের (বিবাদমান) দু‘টি দলের মধ্যে সমঝোতা
সৃষ্টি করবেন । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯৭/ যখন কেউ
কোন সম্প্রদায়ের কাছে কিছু বলে পরে বেরিয়ে এসে বিপরীত বলে । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯৮/ কবরবাসীদের
প্রতি ঈর্ষা না জাগা পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হবে না । -
পরিচ্ছেদ
: ২৯৯৯/ যামানার
এমন পরিবর্তন হবে যে, পুনরায় মূর্তিপূজা শুরূ হবে । -
পরিচ্ছেদ
: ৩০০০/ আগুন বের
হওয়া । হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত হবে
আগুন, যা মানুষকে পূর্ব থেকে তাড়িয়ে নিয়ে পশ্চিমে সমবেত করবে । -
পরিচ্ছেদ
: ৩০০১/ -
পরিচ্ছেদ
: ৩০০২/ দাজ্জাল
সংক্রান্ত আলোচনা । -
পরিচ্ছেদ
: ৩০০৩/ দাজ্জাল
মদীনায় প্রবেশ করবে না । -
পরিচ্ছেদ
: ৩০০৪/ ইয়াজুজ ও
মা‘জুজ । -
হাদিস নং: ৬৬৫১/৮০
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)